দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সারাদিনে মোট ৭ টি ঘণ্টা। ওটা নির্বিঘ্নে পার করে দিতে পারলেই আজ, বুধবার করোনাকালে লোকাল ট্রেনপরিষেবার প্রথম দিনের ‘অগ্নিপরীক্ষায়’ সসম্মানে উতরানো যাবে, এমনটাই মনে করছেন পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কর্তারা।

প্রাক্‌-করোনাকালে রেলের হিসেব বলছে, হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন দিয়ে সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা ও বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে রাত সাড়ে ৮টা- দু’দফার এই সাত ঘণ্টা সময়ে যথাক্রমে ৯ লক্ষ ও ১২ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। এটাই ‘অফিস টাইম’ বা ব্যস্ত সময়। এই সময়েই যাত্রীদের চাপ সব চেয়ে বেশি থাকে। ওই বিপুল চাপ সামাল দিতে পুরনো টাইম টেবিলে যত ট্রেন ছিল, তার ৮৫ শতাংশ ট্রেনকেই আজ ট্র্যাকে নামানো হচ্ছে। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে অফিসটাইমে হাওড়া ও শিয়ালদহে চলত ১৭৭টি ট্রেন, আজ থেকে চলবে ১৪৮টি।

প্রাক্-করোনাকালে হাওড়ায় সারা দিনে আপ ও ডাউন মিলিয়ে লোকাল ট্রেন চলত মোট ৫৮৩টি। এর মধ্যে পূর্ব রেলের ৪০৭ ও দক্ষিণ পূর্ব রেলের ১৭৬টি ট্রেন। সেই জায়গায় আজ থেকে হাওড়ায় পূর্ব রেল চালাবে আপ ডাউন মিলিয়ে ২০২টি ট্রেন, দক্ষিণ-পূর্ব রেল ৮১টি। কোভিড পরিস্থিতির আগে শিয়ালদহে আপ ও ডাউন মিলিয়ে লোকাল ট্রেন চলত ৯১৩টি, আজ থেকে চলবে ৪১৩টি। শিয়ালদহে সব ট্রেনই অবশ্য পূর্ব রেলের। অর্থাৎ, সারা দিনের হিসেবে প্রাক্-করোনাকালের ট্রেনের প্রায় ৫০ শতাংশ দিয়ে আজ লোকাল ট্রেনের পরিষেবা ফের শুরু হবে।

রেল-রাজ্য বৈঠকের প্রাথমিক আলোচনায় প্রস্তাব ওঠে, টাইম টেবিলে যত লোকাল ট্রেনের উল্লেখ রয়েছে, তার ১০-১৫ শতাংশ দিয়ে ১১ নভেম্বর লোকাল ট্রেন পরিষেবা ফের শুরু হবে। কিন্তু ওই সামান্য সংখ্যক লোকাল ট্রেনের পক্ষে যে হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশনের মোট ৩৫ লক্ষ যাত্রীর ভিড় সামলানো সম্ভব নয়, সেটা বুঝতে দেরি হয়নি রেল ও রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের। তাই, ট্রেনের সংখ্যা কতটা বাড়ানো সম্ভব, তার হিসেব করা শুরু হয়।

শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়, প্রাক্-করোনাকালের টাইম টেবিলের প্রায় ৫০ শতাংশ লোকাল ট্রেনই চালানো হবে। এর পর সেই সিদ্ধান্তকে আরও নমনীয় ও সুবিধেজনক করার পরিকল্পনা শুরু করে রেল ও রাজ্য। ঠিক হয়, লোকাল ট্রেনের মোট সংখ্যা না-বাড়িয়ে অফিসটাইমে বেশি করে ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা করা হবে। যাত্রীদের সুবিধের জন্য সকাল ৮টা-১১টা এবং বিকাল সাড়ে ৪টে-সাড়ে ৮টার মধ্যে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে। আগে ওই সময়ে যত ট্রেন চলত, তার ৮৫ শতাংশ ট্রেনই চালানো হবে। ভোরে ও দুপুরে- অর্থাৎ যে সময়ে যাত্রীদের ভিড় তুলনামূলক ভাবে কম থাকে, বাকি ১৫ শতাংশ ট্রেন সেই সময়ের জন্য রাখা হয়েছে।

ব্যস্ত সময়ের সাত ঘণ্টায় পুরনো টাইম টেবিলের ৮৫ শতাংশ ট্রেন চালিয়ে কি অবস্থা সামাল দেওয়া সম্ভব? পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী ও দক্ষিণ-পূর্বরেলের সঞ্জয় ঘোষ, দু’জনেরই বক্তব্য, ‘সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখেই লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে যে পুরো সহযোগিতা পাওয়া যাবে- এই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত। যেহেতু সব ট্রেন চালু করা যাচ্ছে না, তাই আমরা চেষ্টা করেছি, ব্যস্ত সময়ের ট্রেনের সংখ্যা যতটা সম্ভব অপরিবর্তিত রাখতে।’

রেলের আন্দাজ, লোকাল ট্রেন পরিষেবা আজ নতুন করে চালু হলেও প্রথম ক’দিন যাত্রীদের ভিড় অনেকটা কম থাকবে। পরে ট্রেনের সংখ্যা ক্রমশ বাড়লে আর অসুবিধা হবে না।

অফিসটাইমে,সকাল ৮টা থেকে ১১টা,হাওড়ায় চলত ৩১টি ট্রেন,আজ থেকে চলবে ৩১টি ট্রেনই,শিয়ালদহ নর্থ ও মেনে চলত ৩১টি ট্রেন,আজ থেকে চলবে ২৭টি ট্রেন।শিয়ালদহ সাউথে চলত ২০টি ট্রেন,আজ থেকে চলবে ১৮টি ট্রেন।বিকাল সাড়ে ৪টে থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত,হাওড়ায় চলত ৩৭টি ট্রেন,আজ থেকে চলবে ২৪টি ট্রেন,শিয়ালদহ নর্থ ও মেনে চলত ৩২টি ট্রেন৷আজ থেকে চলবে ৩২টি ট্রেনই,শিয়ালদহ সাউথে চলত ২৬টি ট্রেন,আজ থেকে চলবে ১৬টি ট্রেন৷দক্ষিণ-পূর্ব রেল অফিসটাইমে আপ-ডাউন মিলিয়ে ৩৮টি ট্রেন চালাচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here