দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলাকে কয়লা কাণ্ডে জেরা করতে যাওয়ার কথা সিবিআইয়ের। কিন্তু সিবিআই গোয়েন্দারা অভিষেকের কালীঘাটের বাড়ি শান্তিনিকেতনে পৌঁছনোর আগেই, সেখানে পৌঁছে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ অভিষেকের বাড়িতে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী। ১১টা ৩৫ নাগাদ সেখান থেকে তিনি বেরিয়ে যান। ঠিক তার ২ মিনিটের মধ্যে সেখানে ঢোকেন সিবিআই গোয়েন্দারা।

বেআইনি কয়লা পাচার কাণ্ডের সূত্র ধরে রবিবার দুপুরে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলাকে নোটিস দিতে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে গেছিল সিবিআই টিম। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সোমবার সিবিআইকে জবাব দেন রুজিরা। জানান, মঙ্গলবার তিনি সময় দিতে পারবেন সিবিআইকে। সেই মতো আজ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে সিবিআই গোয়েন্দারা অভিষেকের কালীঘাটের বাড়ি শান্তিনিকেতনে পৌঁছেছেন।

মুখ্যমন্ত্রী গতকালও এই রুটে গিয়েছিলেন। কিন্তু এদিন আচমকাই তাঁর কনভয় ওই বাড়িতে ঢুকে যায়। বেরনোর সময় দেখা যায় অভিষেক-কন্যাকেও। তাকে নিয়েই গাড়িতে উঠে চলে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগে থেকে মুখ্যমন্ত্রী আসার আভাসটুকুও ছিল না কারও কাছে। স্বাভাবিকভাবেই এদিন মুখ্যমন্ত্রীর ১০ মিনিট শান্তিনিকেতন পর্ব গোটা ঘটনার নাটকীয় মোড় নিয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, অভিষেক কন্যাকে নিয়ে যেতেই এসেছিলেন তিনি। আবার একাংশের মতে, অভিভাবক হিসাবেই দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।

রুজিরাকে জেরা করতে আট জনের একটি বিশেষ টিম পৌঁছায় অভিষেকের বাড়িতে। দলে মহিলা অফিসারও ছিলেন। শুরু হয়েছে জেরা পর্ব।

বেআইনি কয়লা পাচার মামলার তদন্তে গত কয়েক মাস ধরেই তৎপর সিবিআই। মামলায় মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালার এখনও কোনও হদিশ নেই। তাঁর বিরুদ্ধে জারি হয়েছে লুক আউট নোটিশ। অন্যদিকে, এই মামলায় যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বিনয় মিশ্রেরও হদিশ মেলেনি। এই তদন্তে এ পর্যন্ত যে সব তথ্য উঠে এসেছে, তার ভিত্তিতেই কয়েকটি বিষয় জানতে তদন্তকারীরা সাক্ষী হিসাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান অভিষেকের স্ত্রী ও শ্যালিকাকে।

রবিবার রুজিরার পাশাপাশি তাঁর বোন মেনকা গম্ভীরকেও নোটিস দিয়েছিল তদন্ত এজেন্সি। সোমবার ফের তাঁরা যান পঞ্চসায়রের আবাসনে। সিবিআই আধিকারিকরা আবাসনের দুয়ারে যেতেই তাঁদের গাড়ি আটকে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা চলে গোয়েন্দাদের সঙ্গে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের। তারপর গাড়ি বাইরে রেখে ভিতরে ঢোকে সিবিআই টিম। তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মেনকাকে। জানা গিয়েছে, দেশি-বিদেশি ব্যাঙ্কের বিভিন্ন তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে।

সিবিআই সূত্রের খবর, মেনকার দেওয়া বয়ান খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের যে সব জবাব দিয়েছেন, তা নথিবদ্ধ করা হয়েছে। সে সব খতিয়ে দেখে ফের তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি না, তা চূড়ান্ত করা হবে। সিবিআই সূত্রে খবর, কয়লা পাচার কাণ্ডে টাকা গিয়েছে বিদেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। ফলে তদন্তে অনেক দিক খতিয়ে দেখতে হচ্ছে।


LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here