দেশের সময় :সকালে সাসপেন্ড করেছিল তৃণমূল। 

আর তার কয়েক ঘন্টা পরেই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার উত্তম সর্দার। তার বিরুদ্ধে দুটি এফআইআর দায়ের হয়েছে সন্দেশখালি থানায়। আর এদিন রাতেই সন্দেশখালি থানার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন উত্তম। পাশপাশি, গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিকাশ সিং নামে আরও এক ব্যক্তিকে। সূত্রের খবর, এলাকার বিজেপি নেতা ছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, ব্লক সভাপতি এবং জেলা পরিষদের সদস্য উত্তম সর্দারকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

শনিবার ধর্নামঞ্চ থেকে একথা জানান পার্থ ভৌমিক। জানান, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই সাসপেন্ড করা হয়েছে তাঁকে। জানা গিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়ে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন উত্তম সর্দার। তারপর থেকেই আর খোঁজ মেলেনি উত্তমের। অন্যদিকে, ক্রমাগত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল সন্দেশখালি। তারই মধ্যে উত্তম সর্দারকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।

শাহজাহান শেখ এবং তাঁর দুই ঘনিষ্ঠ নেতা শিবু হাজরা আর উত্তমের বিরুদ্ধেও এলাকায় ‘অত্যাচার’-এর অভিযোগ রয়েছে। যে অভিযোগে গত তিন দিন ধরে উত্তপ্ত সন্দেশখালি। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা তাঁদের গ্রেফতারির দাবি তুলেছিলেন। সেই দাবি নিয়ে রাস্তায় নামেন তাঁরা, ঘেরাও করা হয় থানা। বিক্ষোভে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন মহিলারা। বাঁশ, কাটারি, দা, হাতা, খুন্তি, লাঠি নিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয় সন্দেশখালির অলিগলিতে। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় একের পর এক পোলট্রি ফার্ম, বাগানবাড়িতে। অভিযোগ, গ্রামবাসীদের জমি জোর করে দখল করে ওই ফার্ম তৈরি করেছিলেন উত্তমেরা।

বেশ কয়েক দিন ধরেই উত্তম ‘নিখোঁজ’ ছিলেন। গ্রামবাসীদের দাবি, উত্তমকে গত বুধবার রাতে শেষ বার এলাকায় দেখা গিয়েছিল। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা তাঁকে ধরে ফেলেছিলেন। পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে এবং থানায় নিয়ে যায়। অভিযোগ, পরে আবার ছেড়েও দেওয়া হয় এই নেতাকে। তার পর থেকেই আর কেউ উত্তমকে এলাকায় দেখেছেন বলে মনে করতে পারছিলেন না। একাংশ দাবি করেন, শাহজাহানের মতো তিনিও এলাকাতেই গা ঢাকা দিয়েছেন।

সন্দেশখালির আনাচকানাচে কান পাতলে উত্তমের মাছের ভেড়ির সাম্রাজ্যের পরিচয় পাওয়া যায়। কয়েক হাজার বিঘা জমিতে মাছের ভেড়ি ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর। স্থানীয়দের অভিযোগ, ৯০ শতাংশ ভেড়ি গ্রামবাসীদের জমি দখল করে তৈরি করা। শুক্রবার সন্দেশখালির বিক্ষুব্ধ মহিলারা জানিয়েছিলেন, তাঁদের স্বামীদের জোর করে কাজ করতে বাধ্য করতেন উত্তমরা। বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া হত কাজের জন্য। সেই কাজের পর প্রাপ্য পারিশ্রমিকও দেওয়া হত না। টাকা চাইতে গেলে জুটত মার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here