দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ পানিহাটির নবনির্বাচিত তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্তকে খুন করা হয়েছে রবিবার । সেই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হবে আজ, সোমবার।

রবিবার সন্ধ্যায় দুষ্কতীরা পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে কাউন্সিলরের মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ভর্তি করানো হয় সাগরদত্ত মেডিক্যাল হাসপাতালে। সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। জানা গিয়েছে, রবিবার নিজের এলাকার একটি পার্কের কাজের দেখভাল করতে গিয়েছিলেন কাউন্সিলর অনুপম। সেই সময় মোট ৪ জন দুষ্কৃতী মোটর বাইকে করে তাঁর সামনে এসে থামে। এর পর তাঁর মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। এর পর বাইক নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।

এই ঘটনায় যাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর নাম অমিত ওরফে শম্ভু পণ্ডিত। নদিয়ার হরিণঘাটায় তাঁর বাড়ি বলে খবর। আজ তাঁকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হবে। ধৃতের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানানো হবে আদালতে।

গতকাল কাউন্সিলর খুনের প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছন ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। তদন্ত চলছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, কাউন্সিলরকে গুলি করার পর নিহতের বাড়ির পিছনের বস্তিতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন শম্ভুনাথ। তার কিছু দূরেই রয়েছে একটি হোগলা বন। এরপর সেখানেই গিয়ে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। সূত্রের দাবি, অভিযুক্তের পরিকল্পনা ছিল সময় সুযোগ বুঝে এলাকা ছাড়ার। কিন্তু পুলিশের তল্লাশিতে সে পরিকল্পনায় পুরোপুরি জল পড়ে যায়। ইতিমধ্যেই ধৃতকে জেরা করে আরও একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

রবিবার কাউন্সিলর অনুপম দত্ত খুনের পর এলাকায় তদন্তে যায় পুলিশ। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। রবিবার রাতেই শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি।

এরপরই তেঁতুলতলা এলাকা থেকে শম্ভুনাথকে ধরা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজে যে পোশাকে অভিযুক্তকে দেখা যায়, পরে তিনি তা বদলে ফেলেন। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয় না। পুলিশ তেঁতুলতলা এলাকার হোগলা বনের ধারে তাঁর নীল জামা দেখে ফেলে। এরপরই সেই হোগলা বনে আগুন লাগিয়ে দেয় পুলিশ। প্রাণে বাঁচতে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন অভিযুক্ত। এরপরই স্থানীয়রা হাতেনাতে ধরে ফেলে ওই যুবককে।

পানিহাটি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্তকে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শম্ভুনাথ পণ্ডিতকে আগরপাড়া রোডের জঙ্গল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ধরে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। পরে তাঁকে খড়দহ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ জেরায় জানতে পেরেছে, অনুপম দত্তকে খুনের জন্য সুপারি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। শম্ভু নদিয়ার হরিণঘাটার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু কে তাঁকে এই কাজে পাঠিয়েছে তার উত্তর খুঁজছে পুলিশ। এই ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে নাকি ব্যক্তিগত আক্রোশের জের তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here