দেশের সময়,বনগাঁ: পুরভোটের আগে বনগাঁ পুরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী বোমা, বন্দুক মজুত করে রেখেছে। তাদেরকে সাবধান করতে চাই। উত্তরপ্রদেশের ভোটের পর সব গুন্ডা টাইট হয়ে যাবে। একজনও বাঁচবে না।’‌ বৃহস্পতিবার বনগাঁয় দলীয় কর্মসূচিতে এসে এমনই মন্তব্য করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

এদিন পুরসভার ভোটপ্রচার উপলক্ষে বিজেপির পক্ষ থেকে বনগাঁয় একটি র‌্যালির আয়োজন করা হয়। হুডখোলা জিপে করে বনগাঁ শহর পরিক্রমা করেন রাজ্য সভাপতি। বনগাঁর বনবিহারী কলোনী থেকে এই র‌্যালিটি শুরু হয়৷ সেখান থেকে ত্রিকোন পার্ক, মতিগঞ্জ, বিএসএফ ক্যাম্প মোড়, বাটা মোড় হয়ে বনগাঁর রেল গুদামে এই র‌্যালি শেষ হয়।

র‌্যালি শেষে রেল গুদাম এলাকার একটি পথসভায় সুকান্ত মজুমদার বলেন,’তৃণমূল হামলা আর মামলা ছাড়া কিছু পারে না। মানুষের মৌলিক অধিকার হল, নিজেকে রক্ষা করা। সেকথা বলতেই আমার বিরুদ্ধে তৃণমূল মামলা দায়ের করেছে। রাজ্যে তৃণমূলের যা অবস্থা, তাতে আগামী দিনে তৃণমূলের মধ্যে গৃহযুদ্ধ বাধবে।’

এদিন তিনি আরও বলেন,’যারা গরু, বালি, পাথরের টাকা খেয়েছে, তারা এরপর সিবিআইয়ের আদর খাবে।‌ সাংসদ দেবকে সিবিআই ডেকেছিল। প্রথমে ভয়ে তিনি যেতে চান নি। পরে আবারও ডাকা হয়। কিন্তু আর এড়াতে না পেরে তাঁকে সিবিআইয়ের চা খেতে যেতে হয়েছে।’

এদিন বনগাঁ ছাড়াও জেলার বিভিন্ন জায়গার দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন রাজ্য সভাপতি।‌

পুরভোটের আগে জনসংযোগ বাড়াতে বিজেপির এমনই আরও এক কর্মসূচিতে হাজির ছিলেনন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বৃহস্পতিবার সকালে মধ্যমগ্রাম দোলতলায় বিজেপির এই কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি। সেখানে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে মেতে উঠেন আলাচারিতায়। তারপর ‘চায় পে আড্ডার’ মধ্যেই স্থানীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা সারেন আসন্ন পুরভোটের প্রচার কৌশল নিয়ে।

বিজেপি রাজ্য সভাপতিকে সংবর্ধিত করার পাশাপাশি পুরভোটের ২৮ টি ওয়ার্ডেরপ্রত্যেক প্রার্থীকেও সংবর্ধনা দেওয়া হয়।সভায় উপস্থিত ছিলেন বারাসত সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি তাপস মিত্র সহ স্থানীয় নেতৃত্ব। তবে ‘পাড়ায় সুকান্তদা’ নাম দেওয়া হলেও মূলত বিজেপি কর্মী ও প্রার্থীদের জন্যই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল স্থানীয় বিজেপি নেতারা।

আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারিবিজেপিকে ভোট দিয়ে সকল প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানান সুকান্ত মজুমদার ।

প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারের পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। সেখানে রাজ্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার বেসরকারিকরণের বিরোধিতা করে এদিন তিনি বলেন, শিক্ষাকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার একটা চক্রান্ত চলছে রাজ্য সরকারের তরফে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ‘পিপিপি’ মডেল গড়ে তোলার কথা বলে রাজ্য সরকার নিজেকে দেউলিয়া অবস্থা ঘোষণা করে ফেলেছে। দাবি সুকান্তের।

এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন “বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলায় শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ, মুখ্যমন্ত্রী নেতৃত্বে লুট চলছে, শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে, চরম নৈরাজ্য চলছে।” সেই কারণে বাংলার মানুষের কাছে আবেদন করেন, যাঁরা শিক্ষা ও সংস্কৃতিকে পছন্দ করে, তাঁদের সকলকে একত্রিত করে এই লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

পুরভোটে শাসক দলের ‘অতিসক্রিয়তা’ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। সুকান্তের অভিযোগ, ‘পুরভোটে ছাপ্পা ভোট দিচ্ছে তৃণমূল।’


এমনকী বামেদের ভোটে দ্বিতীয় স্থানে আনার জন্য তৃণমূল নিজেদের পাশাপাশি বামেদেরকেও ছাপ্পা ভোট দিচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। রাজ্য সভাপতির কথায়”তৃণমূলকে আটটা ছাপ্পা দিলে বামেদেরকে দুটো দিচ্ছে, যাতে জনগণ বিভ্রান্ত হয়ে যায়, প্রধান বিরোধী দল কে সিপিআইএম না বিজেপি”

এদিন মধ্যমগ্রামের পাশাপাশি গোবরডাঙায় বিজেপি প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করেন সুকান্ত মজুমদার। সেখানেও বক্তব্য রাখতে গিয়ে শাসকদলকে একহাত নেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here