দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ফের রাজ্যে খুলে গেল স্কুল-‌কলেজ। আপাতত অষ্টম থেকে উচ্চতর শ্রেণির পঠন-‌পাঠন চালু হল। কোভিড বিধি মেনেই সমস্ত সরকারি-‌বেসরকারি স্কুল-‌কলেজ খুলল। সকাল থেকেই দেখা গেল পড়ুয়াদের স্কুলমুখো হতে। সকলের মুখেই এক অনাবিল হাসি। খুশি পড়ুয়া থেকে অভিভাবক, শিক্ষক-‌শিক্ষিকারা। অনলাইন পড়াশোনার গণ্ডি পেরিয়ে ফের টিফিন টাইমের আনন্দ, ক্লাসরুমে বসে ক্লাস করার মজা পাবে ছাত্রছাত্রীরা।

শিক্ষাঙ্গনের দরজা খুলতেই ফের ক্লাসে পড়ুয়ারা। আপাতত অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্যই খুলছে স্কুল। সকাল থেকেই স্কুলগুলির সামনে ভিড় জমিয়েছিল পড়ুয়া-অভিভাবকরা। স্কুলগুলির সামনে জটলা। পড়ুয়াদের মুখেও খুশি খুশি ভাব। সবথেকে খুশি অষ্টমের পড়ুয়ারা। প্রায় দু’বছর পর স্কুলে ফিরল তাঁরা।

বেশিরভাগ স্কুলেই এদিন এগারোটা থেকে শুরু হয় ক্লাস। সময় হাতে রেখেই স্কুলে ঢুকে যায় পড়ুয়ারা।প্রসঙ্গত, গত দু’‌বছর ধরে করোনার জেরে শিক্ষাব্যবস্থা বিপর্যস্ত। ভরসা ছিল সেই অনলাইল ক্লাস। তবে বার দুয়েক খুললেও ফের করোনার দাপটে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল স্কুল। তবে আবারও স্কুল খোলায় আনন্দিত সকলে। প্রতিটি স্কুলেই দেখা গেল সচেতনতার ছবি।

সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রেখে তাদেরকে স্কুলে ঢোকানো হয়। তার আগে স্যানিটাইজেশন ও থার্মাল গানের মাধ্যমে শরীরে তাপমাত্রা দেখে নেওয়া হয়।

কলকাতার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলার স্কুলেরচিত্রটা একই৷ বনগাঁহাই স্কুলের কর্মীরা জানালেন, স্কুলের তরফ থেকে কী কী কোভিড প্রোটকল মানা হচ্ছে, তা বলা হয়েছে অভিভাবকদের। বাচ্চাদের প্রথমদিন কোভিডিবিধি মেনে স্কুল করতে হবে, তা শেখানো হবে।

উত্তর ২৪পরগনার হাবরা প্রফুল্ল নগর বিদ্যামন্দিরের উদ্যোগে এদিন ক্লাস হল স্কুল প্রাঙ্গণে , প্রকৃতির মুক্ত বাতাসে প্রথমদিনের ক্লাস করতেপেরে খুশি পড়ুয়ারাও৷ ছবিতুলেছেন দেবানন্দ পাইন।

প্রসঙ্গত, এর আগে স্কুল খোলার দাবিতে সরব হন অভিভাবক থেকে শুরু করে বিরোধীরা। একাধিক ছাত্র সংগঠনের তরফেও আন্দোলন করা হয়। অবশেষে ৩১ জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পঠন-‌পাঠন শুরু হবে। খুলবে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ও। সেই মতোই বৃহস্পতিবার থেকে খুলল রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি এদিন থেকেই পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য ‘‌পাড়ায় শিক্ষালয়’‌ চালু হচ্ছে। 

বনগাঁ কুমুদিনী গার্লসের এইটের পড়ুয়া স্নিগ্ধা বিশাস জানালো, ‘টিফিন ভাগাভাগি করে খেতে বারণ করা হয়েছে। প্রার্থনা হয়েছে, তবে ক্লাসে বসে। তবে বহু বান্ধবীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিলনা। তাদের ফের দেখতে পাচ্ছি, খুব মজা হচ্ছে।’

রাখালদাস স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র অজয় দেবনাথের কথায়, খুবই আনন্দ হচ্ছে। আরও খুশি হতাম, বন্ধুরা টিফিন ভাগাভাগি করে খেতে পারলে। স্কুল খোলার আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, করোনার কারণে আপাতত টিফিন ভাগাভাগি করে খাওয়া যাবে না। আমাদের আবার ওটাই সবচেয়ে মজার মুহূর্ত ছিল।

গত বছর ১৬ নভেম্বর স্কুলে এসেছিল পড়ুয়ারা। তারপর ফের বন্ধ হয়ে যায় স্কুল। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে ফের খুলল স্কুলের দরজা। স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত পড়ুয়ারা।

বনগাঁ শক্তিগড় হাইস্কুলের ক্লাস এইটের পড়ুয়া অর্ঘ ঘোষ -এর কথায়, ‘খুব ভালো লাগছে। বহুদিন পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সবারই খুবই ভাল লাগছে। অনলাইনের থেকে অফলাইনে ক্লাসের পড়া বেশি ভাল।’

বনগাঁ কেশবলাল হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষকের কথায়, ‘বাচ্চারা মাস্ক মুখে রাখতে চাইবে না। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু তা করা যাবে না। সবসময় নজরদারিতে রাখতে হবে। আজ পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ৮০ শতাংশ। সরস্বতী পুজোও হবে। সবটাই সরকারি বিধি মেনে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here