দেশের সময়: রাজ্যের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজেদের নিরঙ্কুশ আধিপত্য বজায় রাখল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

কমিশন থেকে পাওয়া শেষ তথ্য অনুযায়ী,রাজ্যের মোট গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ৩ হাজার ৩১৭টি । এর মধ্যে তৃণমূল জয়ী হয়েছে ২ হাজার ৬৪১ টিতে। শতাংশের হিসেবে ৭৯.৭১ অর্থাৎ প্রায় ৮০ শতাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত শাসকদলের দখলে।

বিজেপি জিতেছে ২৩০টি আসনে। কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট জিতেছে যথাক্রমে ১১ এবং ১৯। নির্দল সহ অন্যান্যরা জিতেছে ১৪৯টি আসনে। ত্রিশঙ্কু রয়েছে ২৬৭ টি গ্রাম পঞ্চায়েত। ফল প্রকাশের আগে থেকেই সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব বিজেপি-বাম-কংগ্রেস। অভিযোগ গড়িয়েছে আদালতের চৌকাঠেও। যদিও বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, ““যখন হেরেছেন হারটা মেনে নিন না। মেনে নিয়ে মানুষকে বলুন আমরা কৃতজ্ঞ!”

গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে ফলাফলের নিরিখে উল্লেখযোগ্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর এলাকা হিসেবে পরিচিত মুর্শিদাবাদ। ভোটের দিন অশান্তির নিরিখে শীর্ষে ছিল এই জেলা। মুর্শিদাবাদে মোট ২৫০ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ২২১টিতে জিতেছে তৃণমূল। বিজেপি-২, কংগ্রেস -২ এবং বামফ্রন্ট-৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছে। ত্রিশুঙ্কু হাল ২০ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের।

বিজেপি জিতেছে ২৩০টি আসনে। কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট জিতেছে যথাক্রমে ১১ এবং ১৯। নির্দল সহ অন্যান্যরা জিতেছে ১৪৯টি আসনে। ত্রিশঙ্কু রয়েছে ২৬৭ টি গ্রাম পঞ্চায়েত। ফল প্রকাশের আগে থেকেই সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব বিজেপি-বাম-কংগ্রেস। অভিযোগ গড়িয়েছে আদালতের চৌকাঠেও। যদিও বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, ““যখন হেরেছেন হারটা মেনে নিন না। মেনে নিয়ে মানুষকে বলুন আমরা কৃতজ্ঞ!”

গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে ফলাফলের নিরিখে উল্লেখযোগ্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর এলাকা হিসেবে পরিচিত মুর্শিদাবাদ। ভোটের দিন অশান্তির নিরিখে শীর্ষে ছিল এই জেলা। মুর্শিদাবাদে মোট ২৫০ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ২২১টিতে জিতেছে তৃণমূল। বিজেপি-২, কংগ্রেস -২ এবং বামফ্রন্ট-৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছে। ত্রিশুঙ্কু হাল ২০ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের।

একইভাবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা রাজনৈতিক হিসেবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুক হিসেবে পরিচিত। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে এই জেলায় শাসকদলের হয়ে নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু। দল বদলে সেই শুভেন্দুই এখন বিরোধী দলনেতা। ফলে পূর্ব মেদিনীপুরের দিকে নজর ছিল সকলের। ফল প্রকাশ হতে দেখা যায়, মোট ২২৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ১৩৭টি । বিজেপি জয়ী হয়েছে ৬১টি গ্রাম পঞ্চায়েতে। বামেরা শুন্য। কংগ্রেস জয়ী হয়েছে ১টি গ্রাম পঞ্চায়েতে। ত্রিশঙ্কু হাল ২০ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে। পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর, একদা লালদু্র্গে বাম-কংগ্রেস জোট শূন্য। তৃণমূল জিতেছে ১৯৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতে। বিজেপি জিতেছে ৬টিতে।

জঙ্গলমহলের বাকি দুই জেলা বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াতেও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে তৃণমূলের সাফল্য নজরকাড়া। বাঁকু়ড়ার মোট ১৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৬২টি গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বিজেপি পেয়েছে ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত। ত্রিশঙ্কু হাল ১৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতে। পুরুলিয়ার ১৭০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূলের দখলে ১২৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত। বিজেপি ১১টি, কংগ্রেস এবং সিপিএম যথাক্রমে এক এবং দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতে। নির্দলরা জয়ী হয়েছে ৩৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতে।

মনোনয়ন পর্বে শাসকদলের টিকিট না পেয়ে একাংশ বিক্ষুদ্ধ নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, তাঁদের একাংশও জয়ী হয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, তারই নিট ফল জেলায় জেলায় কিছু সংখ্যক গ্রাম পঞ্চায়েতের ত্রিশঙ্কু ফল। নির্দলরা জয়ী হলেও দলে ফেরানো হবে না বলে মনোনয়ন পর্বেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ফল প্রকাশ হতেই জেলায় জেলায় সামনে আসছে দলবদলের হিড়িক। তারই নিরিখে ত্রিশঙ্কু গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিও শেষ পর্যন্ত শাসকদল দখল যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনা শুরু হয়, বুধবার গড়িয়ে যায় গণনা শেষ হতে হতে। বুধবার বিকেলে দেখা গেল রাজ্য নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। কমিশন জানাল, পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ। তাই নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধি আর লাগু থাকছে না।
গত ৮ জুন পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঘোষণা করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আর তারপর থেকেই রাজ্যে নিয়ম অনুযায়ী লাগু হয়ে যায় নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধি। ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই নিয়ম বলবৎ থাকে। প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের প্রার্থী থেকে শুরু করে সবাইকেই তা মেনে চলতে হয় সেই বিধি।

বুধবার বিকেলে কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেয়, ভোট শেষ হয়ে গেছে । তাই নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধি তুলে নেওয়া হচ্ছে। কমিশনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, এখনও অনেক জয়ী প্রার্থী সার্টিফিকেট হাতে পায়নি। কমিশনের ওয়েবসাইটেও চূড়ান্ত ভোটের ফলাফল আপলোড করা হয়নি। তা হলে কীভাবে কমিশন নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধি তুলে নিতে পারে?

কমিশনের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটে চূড়ান্ত ভোটের ফল প্রকাশ করেনি। অনেক জয়ী প্রার্থী সার্টিফিকেট পায়নি। তারমধ্যে কীভাবে কমিশন মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট তুলে নিল? এটা সম্পূর্ণ বেআইনি।’ সুজন আরও বলেন, ‘এভাবে মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট তুলে নেওয়া যায় না। কমিশন নিজেদের নিয়ম নিজেরাই ভাঙছে। এত কারচুপি করেছে, যে মাথা কাজ করছে না।’
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বলেন, ‘রাজ্য সরকার যা বলছে কমিশন তাই করছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রথম থেকেই কোনও নিয়ম মানেনি। তাই কমিশন যে এভাবে কোড অফ কন্ডাক্ট তুলে নিল তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।’

যদিও বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে কমিশন। কমিশনের দাবি, নিয়ম মেনেই নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধি তুলে নেওয়া হয়েছে। নিয়মের বাইরে কিছু করা হয়নি। কমিশন আরও জানিয়েছে, গণনা শেষ হয়েছে। তাই নিয়ম অনুযায়ী মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট তুলে নেওয়া হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here