কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত বিশ্বের ২৯টি দেশে ওমিক্রনে আক্রান্ত ৩৭৩ জনের খোঁজ মিলেছে৷

দেশের সময় ওয়বডেস্কঃ যা আশঙ্কা করা হচ্ছিল, সেটাই সত্যি হল। কোভিডের নতুন স্ট্রেন ওমিক্রন আক্রান্তের সন্ধান মিলল ভারতে। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটের সময় কেন্দ্রীয় সরকার জানাল, দেশে দু’জন ওমিক্রন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, যে দুজনের শরীরে ওমিক্রন সংক্রমণ মিলেছে তাঁরা দু’জনেই কর্ণাটকের বাসিন্দা। একজনের বয়স ৪৬ বছর ও অন্যজনের ৬৬ বছর। দু’জনই পুরুষ বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।

তবে আক্রান্ত দু’ জনেই বিদেশি বলে এনডিটিভি-তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে৷ ১১ এবং ২০ নভেম্বর যথাক্রমে তাঁরা বেঙ্গালুরুতে পৌঁছন৷

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করে ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ ভারতে ওমিক্রনকে রুখতে ইতিমধ্যেই কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার৷ কিন্তু তার পরেও ওমিক্রনের হানা রোখা গেল না৷

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক আরও বলেছে, এখনই এই দু’জনের পরিচয় প্রকাশ্যে আনা হবে না। এই দুই ব্যক্তির সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে এবং প্রত্যেকের কোভিড পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

করোনার এই নতুন স্ট্রেন এখন সারা বিশ্বেই আলোচনার শীর্ষে। কিন্তু এই স্ট্রেন আগের চেয়ে মারাত্মক কিনা তা নিয়ে এখনও স্পষ্টভাবে কিছু জানা যায়নি। গবেষণা, পর্যবেক্ষণ চলছে। ওমিক্রন নিয়ে তাই এখনই বড় আতঙ্কের কারণ নেই বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে তাই বলে কোভিডকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে স্বেচ্ছাচার একেবারেই চলবে না।

ওমিক্রন নিয়ে অযথা ভয় পেতে নিষেধ করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে অবশ্যই দরকার সতর্কতা। বিধিনিষেধ কড়াভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে।

তবে ওমিক্রন ভারতে ঢুকে পড়লেও মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে দায়িত্বশীল হওয়ার আবেদন করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব৷ লভ আগরওয়াল বলেন, ‘মাস্ক পরাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এ কথা মাথায় রাখতে হবে৷ এ ছাড়াও খোলামেলা পরিবেশে থাকা প্রয়োজন৷ কারণ শীতের সময় আমাদের অভ্যাসই দরজা, জানলা বন্ধ করে থাকা৷ কিন্তু এখন ঘরের ভিতরেও হাওয়া, চলাচল করতে দেওয়াটা খুবই জরুরি৷’

আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে ভারতে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক  হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু ভারতে ওমিক্রনের সন্ধান মেলার পর কেন্দ্রীয় সরকার এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে৷ কারণ কয়েকদিন আগে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে একই পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷

লভ আগরওয়াল জানিয়েছেন, ওমিক্রন ঝুঁকি যে দেশগুলিতে বেশি, সেখান থেকে ভারতে এলে বিমানযাত্রীদের আরটি- পিসিআর টেস্ট করাতে হবে৷ রিপোর্ট পজিটিভ এলে সরকারি বিধি অনুসারেই তাঁদের চিকিৎসা করানো হবে৷ রিপোর্ট নেগেটিভ হলে সাত দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে৷

ওমিক্রন নিয়ে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে আতঙ্ক। এ দেশেও জারি হয়েছে নানা কড়াকড়ি। বিশেষ করে নজর রাখা হচ্ছে আন্তর্জাতিক বিমানের ওপর। কিন্তু তাতেও কি বিপদ এড়ানো গেল না! কারণ ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে এরকম দেশ থেকে আসা ৬ জন যাত্রীর কোভিড রিপোর্ট প্রথম দিনেই পজিটিভ এসেছে! আক্রান্তরা ওমিক্রন আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হতে ল্যাবরেটরিতে নমুনা পাঠানো হয়েছে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য। এর পাশাপাশি ভারতেও খোঁজ মিলল দুই আক্রান্তের, জানালো কেন্দ্র৷

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের পেট্রাপোল বন্দরের ইমিগ্রেশনে যাত্রীদের আরটিপিসিআর টেস্টের পরিসংখ্যানে রয়েছে ফসকা গেরো,বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা৷

পেট্রাপোল বন্দরে ওমিক্রন নিয়ে কেন এত আতঙ্ক?

কারণ হিসাবে পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস এন্ড স্টাফ ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, দিল্লিতে লন্ডন – আমস্টারডাম থেকে আসা ৬ যাত্রীর রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসার পরে দেশজুড়ে ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে হুহু করে৷ এই অবস্থায় ফসকা গেরো স্পষ্ট পেট্রাপোল বন্দরে ৷ পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন শ’য়ে শ’য়ে বাংলাদেশ যাত্রীরা যাতায়াত করছেন৷ বুধবার এক হাজার যাত্রীর মধ্যে মাএ ৫০ জন যাত্রীর আরটিপিসিআর টেস্ট করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে৷ ফলে ইমিগ্রেশন মাত্র ৫% বাংলাদেশি যাত্রীর আরটিপিসিআর টেস্ট করার চিএ টাই বুঝিয়ে দিচ্ছে এই সীমান্ত দিয়ে খুব সহজেই ওমিক্রন ভারতে ঢুকে পড়তেপারে আর সেই কারনেই তীব্র হচ্ছে ওমিক্রন আতঙ্ক৷ তবে কি কারণে এখানে এত কম সংখ্যক নমুনা সংগ্রহ চলছে সে বিষয়ে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন দফতরের কোন আধিকারিক মুখ খুলতে রাজি নয়৷

ভারতের বাসিন্দা বাংলাদেশ ফেরত এক যাত্রীর কথায় সে দেশে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ভারত থেকে আসা প্রত্যেক যাত্রীর আরটিপিসিআর টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷

যদিও ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে বুধবার থেকেই বাংলাদেশি যাত্রীদের স্পট করোনা পরীক্ষার কাজ শুরু করেছে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন তবে তার সংখ্যা মাএ ৫০জন। 

বৃহস্পতিবার সকালেও একই ছবি সেখানে৷ অথচ বাংলাদেশ হয়ে ভারতে আসা এক যাত্রীর কথায় সে দেশে তারই এক সঙ্গী কে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়েছে বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত স্থাস্থ্য কর্মীরা৷ তাঁর কথায় ওই বেক্তি অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশ হ’য়ে ভারতে ঢুকছিলেন বলে শোনা গিয়েছে৷

সীমান্তের বাসিন্দাদের কথায়, ফসকা গেরো পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে আসছেন হাজার হাজার যাত্রী৷ তার জেরে একটাই আতঙ্ক পেট্রাপোল সীমান্তের বাসিন্দাদেরে মনেও ঘুরপাক খাচ্ছে ‘ওমিক্রন’ কি ভারতে প্রবেশ করতে পারে এই পথে সীমান্ত পেরিয়ে !

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here