দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বছর শেষেও মিলল না স্বস্তি। জাঁকিয়ে বসছে ওমিক্রন ৷ওমিক্রন-আতঙ্ক নতুন করে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলল চিকিৎসকদের কপালে।

বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান আরও ত্রাস সৃষ্টি করল দেশজুড়ে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার একলাফে দেশে দৈনিক সংক্রমণ বাড়ল ৪৪ শতাংশ। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যাও। এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ দিল্লিতে।

আর সেই সূত্রেই ২০ দিন পর দেশের দৈনিক কোভিড সংক্রমণ ফের ৯ হাজারের গণ্ডি ছাড়াল। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ১৯৫ জন মানুষ। মঙ্গলবার সেই সংখ্যাটা ছিল অনেকটাই কম, ৬ হাজার ৩৫৮। সেই তুলনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪৪ শতাংশ বেশি আক্রান্তের খোঁজ মিলল। আর এই পরিপ্রেক্ষিতেই উঠে আসছে ওমিক্রনের নাম। গোটা দেশে এই মুহূর্তে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৭৮১। তার মধ্যে শুধু দিল্লিতেই আক্রান্তের সংখ্যা ২৩৮। আর মহারাষ্ট্রে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৭ জন।

এই নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৩ কোটি ৪৮ লক্ষ ৮ হাজার ৮৮৬।

দিল্লি এবং মহারাষ্ট্র ছাড়াও পরিস্থিতি খারাপ দিকে এগোচ্ছে আরও একাধিক রাজ্যে। গুজরাত (৭৩), কেরল (৬৫), তেলঙ্গানা (৬২), রাজস্থান (৪৬), কর্নাটক (৩৪), তামিলনাড়ুতে (৩৪) ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ভাবাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ১১ জন।

আর এই পরিস্থিতিতেই রাজধানী দিল্লিতে কার্যত মিনি লকডাউন‌ শুরু হল৷ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট-সহ করোনা সংক্রমণ বাড়তেই দিল্লিতে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। জারি হয়েছে ‘‌‌ইয়োলো অ্যালার্ট (yellow alert)।’‌ মঙ্গলবার দিল্লি বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের তরফে জারি করা নির্দেশিকা অনুযায়ী, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে দিল্লির সমস্ত স্কুল-কলেজ। দিল্লি মেট্রোয় শুধুমাত্র ৫০ শতাংশ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন।

এখানেই শেষ নয়, ওমিক্রনের আতঙ্কে সিনেমা, মাল্টিপ্লেক্স, জিম বন্ধ করা হয়েছে। বন্ধ রাখা হচ্ছে সমস্ত বিনোদন পার্কও। বেসরকারি অফিসে ৫০ শতাংশ কর্মী আপাতত কাজ করতে পারবেন। জারি করা হয়েছে নৈশ কার্ফুও। রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং অন্য কোনও উৎসবে সমস্ত জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার।

দেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে-লাফিয়ে বাড়ছে। ডেল্টার থেকে তিন গুণ বেশি সংক্রামক করোনাভাইরাসের এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে দুশ্চিন্তার প্রহর গুনছেন বিশেষজ্ঞরা।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, ”করোনা সংক্রমণের হার ০.‌৫ শতাংশের উপর রয়েছে গত কয়কদিন ধরে। সংক্রমণে লাগাম টানতে হলুদ সতর্কতা‌‌ জারি করা হল।” বর্ষশেষের উৎসবকে কেন্দ্র করে গোটা দেশে ওমিক্রন সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যেই প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here