দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: বিজেপির রাষ্ট্রীয় অধিবেশনের দ্বিতীয়দিনে কংগ্রেস-তৃণমূলকে সরাসরি আক্রমণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অমিত শাহের। এ দিন বিজেপির সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “দেশে দুর্নীতির জনক ছিল কংগ্রেস। কংগ্রেসের জমানায় দেশের অর্থনীতি প্রথম স্থান থেকে পঞ্চম স্থানে নেমে এসেছে”।

অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদী বললেন, সামনের ১০০ দিনের মধ্যে বিজেপি কর্মীদের দেশের সকলের আস্থা অর্জন করতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেসকেও একযোগেই আক্রমণ করেন তিনি। সারদা দুর্নীতি থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার নিয়ে চাঁচাছোলা আক্রমণ করেন তিনি।

চলতি বছরে লোকসভা নির্বাচন। ঠিক তার আগেই দেশের প্রধানমন্ত্রী দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বার্তায় বললেন, এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ আগামী ১০০ দিন। দিল্লিতে বিজেপির জাতীয় সম্মেলনে তিনি বলেন, “আগামী ১০০ দিন অন্ত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ের মধ্যে প্রতিটি ভোটার, সম্প্রদায় এবং সকল সুবিধাভোগীর কাছে আমাদের পৌঁছে যেতে হবে। অর্জন করতে হবে সকলের বিশ্বাস।”

মোদী সহ গেরুয়া শিবিরের নেতা মন্ত্রীরা বারবার ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ের কথা বলেছেন। জোটের লক্ষ্য ৪০০ আসন। এই পরিস্থিতিতে ভোটপূর্বের দিনগুলিতে বাড়তি নজর দেওয়ার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী।

আগামী দফায় নির্বাচন নিয়ে মোদী আশাবাদী হলেও, তিনি জানিয়েছেন, তৃতীয় দফায় তিনি আর ক্ষমতা উপভোগ করতে চান না, তিনি চান, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে। সাফ জানান, তাঁকে বলা হয়েছিল একসময়, নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনেক কাজ করেছেন, এবার তাঁর বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন। উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি রাজনীতি নয়, রাষ্ট্রনীতির জন্য কাজ করেন। মোদী জামানায়, গত একদশকের সময় নিয়েও এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০ বছরের দেশ চালানো এবং ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনা কোনও সহজ বিষয় নয়। উন্নয়নের জন্য বিজেপিকেই আবার ফিরে আনা উচিত বলে মনে করেন তিনি। মোদীর আশ্বাস, আগামী ৫ বছরে দ্রুত উন্নয়ন হবে দেশের।

সব ঠিক থাকলে আর তিন মাস পরেই লোকসভা নির্বাচন। হাত আর একশো দিন। সেই সময়ে বিজেপিকে কেমন ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে, তা রবিবার একপ্রকার  ঠিক করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি নেতাদের কথায়, পাঁচ ‘মন্ত্র’ দিয়েছেন মোদী।

প্রথম নির্দেশ, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন এমন সব উপভোক্তাকারীর  কাছে পৌঁছতে হবে। মোদী বলেন, ‘‘সকলের কাছে কাছে গিয়ে বলতে হবে প্রধান সেবক নরেন্দ্র মোদী তাঁদের প্রণাম জানিয়েছেন।’’

দ্বিতীয় নির্দেশ, কোথাও এক জনও নতুন ভোটার থাকবেন না যাঁর কাছে বিজেপি কর্মীরা পৌঁছননি। দশ বছরে বিজেপি সরকার কী কী কাজ করেছে, তার বিবরণ দিতে হবে নতুন ভোটারদের।

তৃতীয় নির্দেশ, ভোটের দিনে সবাইকে বুথে নিয়ে আসতে হবে এবং বিজেপি বা এনডিএ শরিকদের প্রতীকে ভোট দেওয়াতে হবে।

চতুর্থ নির্দেশ, যে কোনও কারণে এখনও বিজেপি থেকে দূরে রয়েছেন, এমন মানুষদের কাছে পৌঁছতে হবে।

পঞ্চম নির্দেশ, এ সব করার জন্য নমো অ্যাপের সাহায্য নিতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব, বেশি মানুষকে ওই অ্যাপের মাধ্যমে বিকশিত ভারতের অ্যাম্বাসাডর বানাতে হবে।

রবিবারের বক্তৃতায় মোদী মহিলাদের জন্য আনা বিভিন্ন প্রকল্প থেকে তিন তালাক নিষিদ্ধ করা কিংবা কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপের কথা উল্লেখ করেন। অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন থেকে কর্তারপুর সাহিব যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেওয়াকে তাঁর সরকারের সাফল্য হিসাবে দাবি করেন। একই সঙ্গে ক্ষমতায় ফিরলে আগামী পাঁচ বছরে তাঁর সরকার কী কী করবে, তার স্বপ্নও দেখিয়েছেন মোদী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here