অর্পিতা বনিক, পেট্রাপোল: ধর্ম মানে না কোনও সীমান্ত, মানে না কাঁটাতারের ব্যবধান। এমনকী সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চোখ রাঙানিও আটকে রাখতে পারে না শ্রদ্ধা অবনত ভক্তদের। সে যতই হোক এপার বাংলা কিংবা ওপার বাংলার বেড়াজাল। ভক্তির কাছে কোনও বাধা নয়। ভক্তি আর বিশ্বাস যেন সব কিছুকে উপেক্ষা করে মিলিবে আর মিলাবে। আরও একবার ধর্মের টানে দুই বাংলার মেলবন্ধনের এই অপরূপ দৃশ্য দেখল বনগাঁ সীমান্ত। দেখুন ভিডিও-

১৯৮৪ সাল থেকে এখানে পুজোর আয়োজন হচ্ছে। শোনা যায়, এক বিএসএফ কর্তাকে মা মনসা স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন। তারপর থেকেই পুজো শুরু হয়।’’ হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষই এই পুজোর আয়োজনে সহযোগিতা করেন বলে জানা যায় ৷ পেট্রাপোলে মনসা পুজো দেওয়ার জন্য এমন ভাবেই প্রত্যেক বছর অপেক্ষা করেন বাংলাদেশের মানুষ। পুজো উদ্যোক্তারা গিয়ে তাঁদের হাত থেকে পুজোর ডালি নিয়ে আসেন। সেই ডালি পৌঁছে যায় মনসা মন্দিরে। পুজো শেষে একই ভাবে তাঁদের প্রসাদ পৌঁছে দেওয়া হয়। খিচুড়ি ভোগও মেলে এখানে৷

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অতীতে বিএসএফ ও বিজিবি এত কড়াকড়ি করত না। তখন ওপার বাংলার মানুষ সরাসরি এসে এখানে পুজো দিতেন। এখন কড়াকড়ির কারণে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি আসা যায় না। কিন্তু পুজোতে সামিল হন বাংলাদেশিরাও। মাইকে ঘোষণা শুনে তাঁরা বুঝতে পারেন পুজো শুরু হয়েছে। অঞ্জলি দেওয়া চলছে। ওপারে দাঁড়িয়েই তাঁরা দু’হাত জোড় করে দেবীকে প্রণাম করেন।

পেট্রাপোল সীমান্তের বিএসএফ ক্যাম্পের পিছনেই মনসা মন্দির। মন্দিরের পিছন দিয়ে বয়ে গিয়েছে হাকোর খাল। খালের ও পাড়ে বাংলাদেশের সাদিপুর গ্রাম। মন্দিরের ডান দিকে বেনাপোল। এ দিন সীমান্তে গিয়ে দেখা গেল, খালের ওপারে সাদিপুর ও বেনাপোলে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকে। দূর থেকেই পুজো দেখছেন তাঁরা।বহু মুসলিম মানুষকেও প্রসাদ নিতে দেখা গেল এ দিন। সব মিলিয়ে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছল কাঁটাতারের এপার-ওপারে।

প্রতিবার পেট্রাপোল সীমান্তে ঘটা করে আয়োজন করা হয় মনসা পুজোর। যা এখন দুই বাংলার মিলনের উৎসবে পরিণত হয়েছে৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here