দেশের সময় , মেদিনীপুর : পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ফের একবার কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গ্যারান্টিকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মনে রাখবেন বাংলার সরকার গ্যারান্টি দিলে সেটা রক্ষা হয়। দিল্লি সরকার দিলে তা বর্জন হয়। দিল্লি সরকারের গ্যারান্টি কাজে লাগে না। ভোটের আগে গ্যাসবেলুন। ভোট চলে গেলেই গ্যাসবেলুন ফুটো হয়ে যায়।’

বাংলায় বিনিয়োগ টানতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে রাজ্য সরকারকে। আর এবার ‘বাংলায় শিল্পের হাওয়া চলছে’ বলে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই কারণে বিরোধীরা ভয় পাচ্ছে বলেই দাবি করেন মমতা।

পশ্চিম মেদিনীপুরের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘চাকরির অভাব হবে না, তার কারণ সারা মেদিনাপুরজুড়ে চলছে শিল্পের হাওয়া। মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম থেকে শুরু করে হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ, সব জায়গাতেই হাওয়া চলছে, শিল্পের হাওয়া, শিল্প এখন কোথায় হচ্ছে? বাংলায় হচ্ছে। তাই বাংলাকে ওরা ভয় পাচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, বাংলায় বিনিয়োগ টানতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে দেখা যায় রাজ্য সরকারকে। যার মধ্যে অ্যতম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। বছর বছর এই সম্মেলনে দেশবিদেশের বড়বড় শিল্পপতিদের আমন্ত্রণও জানান হয়। কতজন শিল্পপতি বিনিয়োগী উদ্যওগেলন, বা কত টাকার বিনিয়োগের মউ স্বাক্ষর হয়েছে সেই সমস্ত তথ্যও দেওয়া হয়। যদিও বিরোধীরা অবশ্য লাগাতার শিল্প নিয়ে রাজ্য সরকারে আক্রমণ করে চলেছে। বর্তমান সরকারের আমলে রাজ্যে কোনও শিল্প নেই বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সেই জায়গা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

অন্যদিকে এদিন খড়গপুরের কিছু ওয়ার্ড নিয়ে বড়সড় অভিযোগ তুলতেও দেখা যায় মমতাকে। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘খড়গপুরে একটা জায়গা আছে, ভোটের আগে ওখানে ৮টা ওয়ার্ড, যেখানে জল কেটে দেওয়া হয়, বিদ্যুৎ কেটে দেওয়া হয়, ধমকানি দেওয়া হয়, বলা হয় বিজেপিকে ভোট না দিলে এলাকা থেকে সরিয়ে দেব। আমি এবার চ্যালেঞ্জ করে গেলাম, একটা বাড়ির জল কাটলে, একটা বাড়ির বিদ্যুৎ কাটলে, একটা উচ্ছেদ করলে, মনে রাখবেন আমরা কেউ ঘাসে মুখ দিয়ে চলি না, আমরা ঘাসটাকে রক্ষা করি। আমি খড়গপুরকে বলব, যারা এই কীর্তি করে তাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করুন, এবং প্রশাসন প্রশাসনের কাজ করবে।’

এদিন মুখ্যমন্ত্রী ১০০ দিনের কাজের বকেয়ার পাশাপাশি আবাস যোজনার অর্থ নিয়েও সরব ছিলেন। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এতবার বলা সত্ত্বেও ১০০ দিনের টাকা দেয়নি তাঁরা। তাই রাজ্য সরকারই ১০০ দিনের টাকা সকলের অ্যাকাউন্টে দিয়েছে। আবাস যোজনায় যে অর্থ বাংলা পাবে তাকেও আটকে রেখেছে কেন্দ্র। তবে এতকিছু করেও বাংলাকে দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

আগামী রবিবার ব্রিগেডে তৃণমূলের জনগর্জন সভা। এদিন ব্রিগেডের সভা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রিগেডে একটা সভা ডেকেছি। গর্জন সভা। বাংলার গর্জন। কেন বাংলাকে বঞ্চনা করা হচ্ছে। কেন আমাদের রেলের অনুমতি দেওয়া হল না। এটা কি মগের মুলুক। আগামী দিনের শেষ কথা বাংলাই বলবে। আগামীর গর্জন বাংলাই করবে।’

এদিন মেদিনীপুর শহরের ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মুখে শোনা যায় মেদিনীপুরের বিপ্লবীদের কথা। স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা। তিনি বলেন, ‘এই মাটি আনুগত্যের মাটি। এই মাটি গদ্দারদের সহ্য করবে না। সিপিএম কী করেনি। সবাইকে ভয়ের মধ্যে রেখেছিল। কেউ কথা বলতে পারত না। আজ সেই সিপিএমের হার্মাদরাই বিজেপির গদ্দার হয়েছে। এদের বিশ্বাস করবেন না।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here