অর্পিতা বনিক ,বনগাঁ: বিশেষ কিছু মিষ্টির ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিশেষ কিছু জায়গার সঙ্গে এমনভাবে জুড়ে থাকে যা প্রায় একে অপরের সমার্থক হয়ে ওঠে। যেমন কলকাতার রসগোল্লা , চন্দননগরের জলভরা অথবা বনগাঁর কাঁচাগোল্লা।

সরস্বতী পুজোয় ঐতিহ্যবাহী ভোগ হিসেবে কাঁচাগোল্লা দেওয়া হয়। সরস্বতীকে এই কাঁচাগোল্লা নিবেদন করলে সব দুঃখ-কষ্টও দূর হতে পারে বলে ধারণা অনেকের৷ বিশেষ করে বনগাঁবাসীর ৷

বনগাঁ ইছামতির শহর, সীমান্ত শহর, দীনবন্ধু মিত্র, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের শহর, সাহিত্যের পাশাপাশি যে মিষ্টির নামে বৃহত্তর বঙ্গে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে, তা হলো কাঁচাগোল্লা। তাই বলাই যায়, এই শহর মিষ্টি রসিকদের কাছে তাঁদের প্রিয় কাঁচাগোল্লার শহর বনগাঁ ৷

তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মধ্যমগ্রামের এক প্রশাসনিক সভামঞ্চে বসেই বনগাঁর পুর প্রশাসক গোপাল শেঠের কাছে কাঁচাগোল্লার খোঁজ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মজার ছলে গোপাল শেঠকে মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞাসা করেন কাঁচাগোল্লা খাচ্ছেন কিনা। গোপাল শেঠ জানিয়ে দেন, তিনি নিজে খাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীকেও পাঠাবেন কিনা, তা জানতে চান। কয়েক মিনিটের কথোপকথনেই কেল্লাফতে! সেই থেকে একধাক্কায় দর বাড়ল কাঁচাগোল্লার। কী ভাবছেন, আগুনে বাজারে কাঁচাগোল্লারও দাম বাড়ল? মোটেও না। বরং বলতে পারেন সেই থেকে আরও কদর বাড়ল বনগাঁর এই বিশেষ মিষ্টির। বাড়ল চাহিদা। বিক্রি বাড়ায় খুশি ব্যবসায়ীরাও। কাঁচাগোল্লার গুণমান বাড়িয়ে যাতে বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দেওয়া যায় সেটাই এখন লক্ষ্য স্থানীয় প্রশাসন সহ মিষ্টি ব্যবসায়ীদেরও ৷ দেখুন ভিডিও

২৬ জানুয়ারি এই বছর সরস্বতী পুজো হবে ৷ বিদ্যার দেবী মা সরস্বতীর আরাধনায় মেতে উঠবে গোটা বাংলা ৷ এখন একদিকে যেমন বনগাঁর কুমোরটুলিতে মৃৎশিল্পীরা প্রতিমা গড়তে ব্যস্ত, তেমনই অন্যদিকে কাঁচাগোল্লা তৈরীতে ব্যস্ত মিষ্টির কারিগরেরা ৷

মিষ্টি বিক্রি মানেই লক্ষ্মীলাভ। আর লক্ষ্মীলাভ হলে কোন ব্যবসায়ীই বা খুশি হবেন না। বনগাঁর ব্যবসায়ীরাও তার ব্যতিক্রম নন। কাঁচাগোল্লার চাহিদা বাড়ায় বেজায় খুশি মিষ্টি বিক্রেতারা। ব্যবসায়ীদের কথায়, কাঁচাগোল্লার চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দেওয়াও যেন কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

করোনা আবহে মিষ্টি বিক্রিতে লেগেছিল ভাঁটার টান। লক্ষ্মীর মুখ দেখতেই পারছিলেন না মিষ্টি বিক্রেতারা। তবে মুখ্যমন্ত্রী কাঁচাগোল্লার খোঁজ নেওয়ার পর থেকেই তা এখন সুপারহিট। তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে মিষ্টির ট্রে। ক্যামেরায় অঙ্কিতা বনিকের সঙ্গে অর্পিতা বনিক দেশের সময় ৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here