দেশের সময় রাত পোহালেই লোকসভা নির্বাচন। দেশের ২১টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মোট ১০২টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে শুক্রবার। তার মধ্যে বাংলার তিনটি কেন্দ্র রয়েছে। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি এই তিন কেন্দ্রের নির্বাচনের নিরাপত্তার জন্য রাজ্য পুলিশের উপরেও আস্থা রেখেছে কমিশন।

উত্তরের তিনটি লোকসভা কেন্দ্র – আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। দেখে নেওয়া যাক, তিন কেন্দ্রের ভোট চিত্র একনজরে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, কোচবিহার কেন্দ্রে মোট বুথ- ২০৪৩টি। মাইক্রো অবজারভার থাকবেন ৩২৮ জন। কিউআরটি— ৪৭টি, কেন্দ্রীয় বাহিনী— ১১২ কোম্পানী থাকবে। ক্রিটিক্যাল পোলিং স্টেশন- ১৯৬ টি।
আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে মোট বুথ- ১৮৬৭ টি। মাইক্রো অবজারভার থাকবেন ১৮০ জন। কিউআরটি ২৩টি, কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে ৬৩ কোম্পানী, ক্রিটিক্যাল পোলিং স্টেশন- ১৫৯টি।

জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে মোট বুথ- ১৯০৪টি। মাইক্রো অবজারভার থাকবেন ২০২জন, কিউআরটি ৩১টি, কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে ৭৫ কোম্পানী, ক্রিটিক্যাল পোলিং স্টেশন- ৩৯১টি। এছাড়াও শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট-এর আন্ডারে জলপাইগুড়ির মধ্যেও কিছুটা অংশ থাকছে তাই এই এলাকায় ১৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। সব মিলিয়ে মোট ২৬৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে সুরক্ষার দায়িত্বে। ১২,৩১০ রাজ্য পুলিশ থাকছে মোট ৩ কেন্দ্রে।

কোচবিহার – এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক, বাম প্রার্থী নীতিশ চন্দ্র রায়। জলপাইগুড়ি – তৃণমূল প্রার্থী নির্মল চন্দ্র রায়, বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গা, বাম প্রার্থী মিলি ওঁরাও, আলিপুরদুয়ার কেন্দ্র – তৃণমূল প্রার্থী প্রকাশ চিক বরাইক, বিজেপি প্রার্থী জয়ন্ত কুমার রায়, বাম প্রার্থী দেবরাজ বর্মন।

বৃহস্পতিবার ৩ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষকদের নাম, ফোন নম্বর, এবং ইমেইল আইডি প্রকাশ্যে আনল নির্বাচন কমিশন। ভোটাররা কোনও ক্ষেত্রে ভোট দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়লে তাঁরা সংশ্লিষ্ট ফোন নম্বর এবং ইমেইল আইডিতে অভিযোগ জানাতে পারবেন।

তিনটি কেন্দ্রে পর্যবেক্ষক –
১. কোচবিহার :- সঞ্জয় কুমার (ফোন নম্বর – 9560339966), (email ID – expenditureobservermdk@gmail.com)
২. আলিপুরদুয়ার:- মদন মোহন মীনা (ফোন নম্বর – 9462229703), (Email Id – madan.m.meena@incometax.gov.in)
৩. জলপাইগুড়ি :- দুর্গেশ তাডভ (Email Id – durgesh.salunke@gov.in)

তিনটি কেন্দ্রের সাধারণ পর্যবেক্ষক –

১. কোচবিহার- রবি কুমার সুরপুর (ফোন নম্বর – 9414551485), (Email Id – ravisurpur@ias.nic.in)
২. আলিপুরদুয়ার – পাটিল ইয়ালা গৌড়া (ফোন নম্বর – 7319206182), (Email Id – yspatilaaa@gmail.com)
৩. জলপাইগুড়ি – সুধাংশু মোহন সামাল (ফোন নম্বর – 7318793695), (Email Id – generalobserver2024@gmail.com)

তিনটি কেন্দ্রের পুলিশ পর্যবেক্ষক –
১. কোচবিহার :- শ্রী কুমার বিশ্বজিৎ (ফোন নম্বর – 9440446111), (Email Id – vishwajeet.kumara@ap. gov.in)
২. আলিপুরদুয়ার :- শ্রী পুনিত রাষ্ট্রগী (ফোন নম্বর – 731968130), (Email Id – police.observe.apd@gmail.com)
৩. জলপাইগুড়ি :- ডক্টর চাকিরালা সামবাশিবা রাও (ফোন নম্বর – 7477940839), (Email Id – policeobserver2024@gmail.com)

কমিশন জানিয়েছে, শুক্রবার রাজ্যের ১০০ শতাংশ বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বুথে বুথে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার ‘ওয়েব কাস্টিং’ হবে। অর্থাৎ, কোন বুথে কী ভাবে ভোট চলছে, কলকাতার কন্ট্রোল রুমে বসেই দেখতে পাবেন কমিশনের আধিকারিকেরা।

কোচবিহার থেকে এ বার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা বিদায়ী সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককেই আবার টিকিট দিয়েছে বিজেপি। তৃণমূলের টিকিটে ওই কেন্দ্রে লড়বেন জগদীশচন্দ্র বসুনিয়া। এ ছাড়া কোচবিহারে কংগ্রেসের প্রার্থী পিয়া রায়চৌধুরী এবং ফরোয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী নীতীশচন্দ্র রায়। জলপাইগুড়িতে এ বার নির্মলচন্দ্র রায়কে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। বিজেপি থেকে টিকিট পেয়েছেন জয়ন্ত রায়। এ ছাড়া ওই কেন্দ্রে সিপিএমের হয়ে লড়বেন দেবরাজ বর্মণ। আলিপুরদুয়ারে তৃণমূল প্রার্থী প্রকাশ চিক বরাইক। বিজেপি টিকিট দিয়েছে মনোজ টিগ্গাকে। আলিপুরদুয়ারে বামেদের আরএসপি প্রার্থী হলেন মিলি ওরাওঁ।

ভোটের আগে তিন কেন্দ্রে নিরাপত্তা আঁটসাঁট করেছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে রাজ্য পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় থাকবে কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি)। কোচবিহারে ৪৭টি, আলিপুরদুয়ারে ২৩টি, জলপাইগুড়িতে ১৩টি, শিলিগুড়িতে তিনটি কিউআরটি রাখা হয়েছে। এ ছাড়া তিন কেন্দ্রে রাজ্য পুলিশের মোট ১২,৩১০ জন কর্মীকে নিযুক্ত করেছে কমিশন। এঁদের মধ্যে সশস্ত্র পুলিশ এবং লাঠিধারী পুলিশ থাকবেন। এ ছাড়াও কিছু পুলিশ কর্মী থাকবেন কাঁদানে গ্যাস নিয়ে। ভোট চলাকালীন কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সে দিকে লক্ষ রাখবেন তাঁরা। প্রয়োজনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করতে পারবে পুলিশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here