অর্পিতা বনিক, দরাপপুর: নিকানো মেঝেতে পিটুলির আলপনা। জলচৌকির উপর বেতের চুপড়িতে উপচে পড়ছে ধান। তার উপরে দু’টি কাঠের লম্বা সিঁদুরকৌটো লালচেলি দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। সামনে থরে থরে সাজানো নাড়ু, মোয়ার মতো রকমারি ঘরে তৈরি মিষ্টি।

আয়োজন সম্পূর্ণ করে করজোড়ে বাড়ির মহিলারা একসঙ্গে বলতেন, ‘আঁকিলাম পদ দু’টি, তাই মাগো নিই লুটি। দিবারাত পা দু’টি ধরি, বন্দনা করি।  ‘আঁকিলাম আলপনা, দূরে ফেলি আবর্জনা। শুভ শুদ্ধ মন নিয়ে, করি তব আরাধনা’।

দেশভাগের পর ছিন্নমূল হয়ে নদিয়ার দরাপপুরে ছড়িয়ে পড়া ওপার বাংলার বাসিন্দারা আজও কোজাগরীর দিন এমন করে মেতে ওঠেন লক্ষ্মীপুজোর আয়োজনে।

পূর্ববঙ্গের মানুষেরা এসে বসতি গড়েছেন নদিয়ার দরাপপুর গ্রামে ৷ এক প্রবীণার কথায় ‘‘ঢাকায় যখন বাড়ি ছিল কলাগাছ, মানকচু, ধান, কাঁচা সুপুরি, অশোক, অপরাজিতা, জয়ন্তী গাছকে লক্ষ্মী রূপে পুজো করেছি। প্রদীপ জ্বেলে জেগেছি সারা রাত।’’ দেখুনভিডিও:

বাংলাদেশের ঢাকার পূর্বাইলের জয়দেবপুরে ঘরে ঘরে পুজো হত। মেলা বসত। দেশভাগের পর যাঁরা এ দেশে ঠাঁই নেন তাঁরা পূর্ববঙ্গের স্মৃতি আঁকড়ে চাকদহের কাছে বল্লভপুরে মেলা শুরু করেন। এখন দরাপপুর, চৌগাছা এবং নেতাজি বাজার পর্যন্ত সেই মেলা ছড়িয়েছে। মণ্ডপে মণ্ডপে শুরু হয়েছে থিমের প্রতিযোগিতাও।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here