দেশেরসময় বনগাঁ : শুক্রবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বনগাঁ লোকভার তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস । দেখুন ভিডিও

এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ায় বিশ্বজিৎ দাসের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে পদক্ষেপ করতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু তার আগেই শুক্রবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিশ্বজিৎ দাস। 

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে জয়ী হন বিশ্বজিৎ। পরে অবশ্য আবার ‘পুরনো দল’ তৃণমূলে যোগ দেন। সেই বিশ্বজিৎকে এ বার বিদায়ী সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। ভোটে লড়ার আগে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা-না দিলে দলত্যাগ বিরোধী আইনে বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারত বিজেপি। শুক্রবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিশ্বজিৎ দাবি করেন, বিজেপিতে কাজের পরিবেশই নেই। তবে বিশ্বজিতের ইস্তফা নিয়ে কটাক্ষ্য করতে ছাড়েনি বিজেপি।

গত জানুয়ারিতে ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে নিজের বিধানসভা এলাকায় গিয়ে ভোটারদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ। তাঁকে এক গ্রামবাসী সরাসরি প্রশ্ন করেন, ‘‘তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, ভোটে জিতে আবার তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। আপনাকে কী অভিযোগ করব?’’

তখন দলবদল নিয়ে বিশ্বজিতের জবাব ছিল, ‘‘বিধায়কের কোনও দল হয় না।’’ লোকসভা ভোটে তৃণমূল তাঁকে টিকিট দেওয়ার পর হেলেঞ্চা বাজারে বিধায়ক হিসাবে শেষ বক্তব্য করেন বিশ্বজিৎ। সেখানে তিনি বলেন, মানুষের জন্য দলবদল করে বিজেপির প্রতীকে ভোটে লড়েছিলেন। কিন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অন্তরে ছিল। বনগাঁর মানুষের কাছ থেকে যে সহায়তা পেয়েছেন, তা সারা জীবন মনে রাখবেন। বস্তুত, বিশ্বজিৎ যাঁর হাত ধরে বিজেপিতে গিয়েছিলেন এবং তৃণমূলে ফিরেছিলেন, সেই মুকুল রায়ও কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে ফিরে যান। বিশ্বজিৎ দাবি করে এসেছেন, জনপ্রতিনিধির কোনও দল হয় না।

শুক্রবার বিধানসভায় বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার আগে গোপালনগরের বাসভবনে বসে বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘বিজেপিতে যাওয়া মস্ত বড় ভুল ছিল। বাগদার মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’’ পাশাপাশি ‘বিধায়কহীন’ বাগদা প্রসঙ্গে বিশ্বজিৎ দাবি করেছেন, ‘‘আরও ভাল কিছু পাবে বাগদা।’’

বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার আগে বিজেপিকে নিশানা করে বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত দল ওটা। কাজ করার কোনও পরিবেশ নেই। আগেই আমি সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলাম। আজ থেকে কাগজপত্রে সম্পর্ক ছিন্ন হবে। আমার মনের মণিকোঠায় বাগদার মানুষের স্মৃতি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’’

বিশ্বজিৎ দাসের বিধায়ক পথ থেকে ইস্তফা দেওয়া নিয়ে আক্রমণ শানালেন শান্তনু ঠাকুর। তিনি বলেন, ”ও (বিশ্বজিৎ দাস) কী করছে, আর কী করবে সেটা ওঁর ব্যাপার। সম্পূর্ণ নিজের স্বার্থের জন্য রাজনীতি করছে, এখানে মানুষ কোনও উপকারই পায়নি ওঁর থেকে।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, ”বারবার দল পরিবর্তন! মানুষ এগুলো আশা করে না, মানুষ কী করে ওকে বিশ্বাস করবে?”

বিজেপি -র বনগাঁ জেলা সভাপতি দেবদাস মন্ডল বলেন কঠাক্ষ্যের সুরে বলেন , বিশ্বজিৎবাবু বাগদার মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন ।এবারের নির্বাচনেই তার ফল হিসাবে ২লক্ষ্ ভোটে পরাজিত হবেন ।

একাধিকবার তৃণমূলের বিধায়ক এবং একবার বিজেপির বিধায়ক হিসেবে রাজনৈতিক ময়দানে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে বিশ্বজিৎ দাসের। তাঁর মুখে শুনতে পাওয়া যায় তিনি রাজনীতিতে পিএসডি করেছেন। এবার লোকসভা নির্বাচন। সেখানে তিনি কতটা সফল হন, এখন সেটাই দেখার।‌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here