দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ সাইক্লোন ফণীতে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ওডিশা। আঁচ পড়েছিল ওড়িশার সৈকত শহর পুরীতেও। তছনছ হয়ে গিয়েছিল গোটা শহর। তবে সেই বিপর্যয় থেকে এখন অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে জগন্নাথ দেবের শহর।
এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে রথযাত্রা। আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষে সেজে উঠেছে পুরীও৷ জগন্নাথদেবের রথযাত্রায় সামিল হতে লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম হয়েছে সেখানে। এসেছেন বিদেশি পর্যটকরাও। জগন্নাথ, বলরাম এবং শুভদ্রার বিগ্রহকে মন্দির থেকে বের করে তাঁদের নির্দিষ্ট রথে এনে রাখা হয়েছে।
এই প্রথমবার ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে রথ। এদিন দুপুর তিনটে নাগাদ মাসির বাড়ি গুণ্ডিচা মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দেবেন জগন্নাথ দেব। টানা ৯দিন ধরে চলবে রথ উৎসব। রথযাত্রার শুরুতে থাকে বলরামের রথ। তাঁকে বলা হয় গুরুর প্রতীক। এরপর থাকে সুভদ্রার রথ। তিনি হলেন ভক্তির প্রতীক। আর সবশেষে জগন্নাথের রথ। তিনি হলেন ঈশ্বরের প্রতীক।
কথিত রয়েছে, গুরুর হাত ধরে ভক্তির মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে পৌঁছনো যায়। মানবদেহে যেহেতু ২০৬টি হার থাকে, তাই পুরীর রথও তৈরি হয়েছে ২০৬টি কাঠ দিয়ে। কারণ পুরীর রথকে মানবদেহ হিসেবেই দেখা হয়। এর অর্থ, মানবদেহেই ঈশ্বরের অধিষ্ঠান। তবে আরেকটি মতে বলা হয়, বলভদ্র হলেন জীব জগতের প্রতীক। মাঝে সুভদ্রা শক্তির প্রতীক এবং শেষে জগন্নাথ ব্রহ্মের প্রতীক।
এদিকে, রথযাত্রা উপলক্ষ্যে শনিবার পুরীর জগন্নাথ মন্দির ঘিরে ফেলা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তায়। নিরাপত্তারক্ষীদের প্রায় শতাধিক দল নজরদারি চালাচ্ছে। মোতায়েন রয়েছে কয়েক হাজার পুলিশ অফিসার। রথযাত্রায় যাতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে তাই র্যাফ এবং ওড়িশা সুইফট অ্যাকশন ফোর্সের বেশ কয়েকটি ইউনিট পাঠানো হয়েছে পুরীতে।
এর মধ্যে রথযাত্রা উপলক্ষে ইতিমধ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এবং এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ লেখেন, ‘পবিত্র রথযাত্রা উপলক্ষে দেশের সমস্ত নাগরিকদের অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। জগন্নাথদেবের আশীর্বাদে সবার জীবনে শান্তি, সুখ এবং সমৃদ্ধি আসুক।’
পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লেখেন, ‘পবিত্র রথযাত্রা উপলক্ষে সবাইকে অনেক শুভেচ্ছা। আমরা জগন্নাথদেবের কাছে প্রার্থনা করছি যাতে আমাদের সবাই জীবনে সুস্বাস্থ্য, সুখ এবং সমৃদ্ধি আসুক।’ টুইটে শুভেচ্ছা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। লেখেন, ‘রথযাত্রা লোকারণ্য, মহা ধুমধাম… রথযাত্রা উপলক্ষে সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। জয় জগন্নাথ।’ এদিকে, রথযাত্রায় রাজ্যজুড়েও বিভিন্ন জায়গায় প্রস্তুতি চলছে।