সেমিফাইনালে মোদী ম্যাজিক! লোকসভার সেমিফাইনাল! বিজেপি-৩, কংগ্রেস-১, উত্তর ভারতের তিন রাজ্যই গেরুয়া আবিরে মাতোয়ারা

৪ রাজ্যের মধ্যে ৩ রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের পথ প্রশস্থ বিজেপির। গেরুয়া ঝড়ের প্রভাব এসে পড়েছে বঙ্গেও। বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা জেলায়জেলায় জয়োল্লাস শুরু করে দিয়েছেন রাস্তায় বেরিয়ে

এটা সবে ঝড়, লোকসভা নির্বাচনে মোদী সুনামি দেখবে গোটা দেশ। পাঁচ রাজ্যের মধ্যে তিন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিপুল জয়লাভের পর প্রতিক্রিয়া রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর। শুভেন্দু এদিন আরও বলেন, ‘বাংলাতেও এই মোদি সুনামির প্রভাব পড়বে।’ তার ফলেই মমতা সরকারের হারের পথ পরিষ্কার হয়ে যাবে। কাল বিধানসভায় প্রথমে লাড্ডু বিতরণ হবে বলেও জানান তিনি।

দেশের সময় কলকাতা: রবিবার বেলা তখন সাড়ে ১২টা। চার রাজ্যের ভোট গণনায় ফলাফলের ধারা ততক্ষণে মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে হিন্দিবলয়ের তিন রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তীসগড়ে গেরুয়া ঝড় চলেছে। তাতে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে কংগ্রেস। তা দেশেই প্রবল আক্রমণাত্মক হয়ে বাংলায় হই হই করে মাঠে নেমে পড়লেন শুভেন্দু অধিকারী-সুকান্ত মজুমদাররা। 

শুভেন্দু বরাবরই আগ্রাসী রাজনীতিক। এদিন হিন্দিবলয়ে ভোটের ট্রেন্ড দেখে শুভেন্দু সাংবাদিকদের বলেন, “রাজস্থান. মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগড়ে দেশদ্রোহীরা পরাস্ত হয়েছে। রাষ্ট্রবাদ জিতেছে। বাংলাতেও রাষ্ট্রবাদী শক্তি জিতবে। প্রথমে ২৪-এর ভোটে জিতবে। তার পর ২৬ সালে বাংলা থেকে হাওয়া হয়ে যাবে তৃণমূল।” শুভেন্দু এও বলেন, “বাংলায় এবার ষাঁড়াশি আক্রমণ চলবে।”

শুভেন্দু অবশ্য ষাঁড়াশি আক্রমণ বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি। তবে পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, হিন্দিবলয়ে এই ফলাফলের পর জাতীয় স্তরে বিরোধীদের বিরুদ্ধে চলতি কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্তে গতি আসতে পারে। কারণ, মোদী-অমিত শাহরা কোনও ফলাফলেই সন্তুষ্ট হয়ে বসে থাকেন না। তা তাঁদের রাজনীতির ধরণএ নয়। সম্ভবত সেটা আন্দাজ করে শুভেন্দুরা আশা করছেন, বাংলায় এবার দুর্নীতির তদন্তে কেন্দ্রীয় এজেন্সি আরও সক্রিয় হবে। এমনিতেই জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “উনিশের লোকসভা ভোটের পর বাংলায় এমন লম্ফঝম্ফ আগেও করেছিল বিজেপি। কিন্তু বাংলার মাটি কতটা শক্ত অমিত শাহরা বুঝতে পেরেছেন। বাংলায় ওদের ভোট নেই। কংগ্রেস আর তৃণমূল এক নয়। বিজেপিকে বাংলায় ফের ঘোল খাইয়ে ছাড়বে জোড়াফুল। কোনও এজেন্সি ওদের জেতাতে পারবে না”।

এদিন হাওড়া শিবপুর এলাকায় অভনি মলের কাছে দেখা গেল বিজেপি সমর্থকদের উল্লাসের ছবি। পটাকা ফাটিয়ে গেরুয়া আবির মেখে ব্যান্ড বাজিয়ে উৎসাহ পালন করছেন কর্মী, সমর্থকরা। তাঁদের দাবি, এ রাজ্যেও পালাবদলের বেশি দেরি নেই। বিধানসভা ভোট এলেই রাজ্যেও গেরুয়া ঝড় বইতে পারে বলে ধারণা বিজেপি কর্মীদের। তাঁদের দাবি, মোদী সরকার নেতৃত্বে আবার উন্নয়নের ধারা বইবে। তারা রাহুল গান্ধীকে কটাক্ষ করে স্লোগান দিতে শুরু করেন। স্লোগান তোলেন, ‘পাপ্পু হি পানোতী হে’ অর্থাৎ যেখানে যেখানে রাহুল গান্ধী ভোটে গিয়েছেন, সেইখানে, সেই রাজ্যে কংগ্রেস হেরেছে।

রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্রিশগড়ে বিজেপির ফলাফল
মুখে হাসি ফুটিয়েছে এ রাজ্যের বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের মুখেও। সামনে ২০২৪ লোকসভা ভোট। তার আগে পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা ভোটই ছিল শেষ লিটমাস টেস্ট। আর তাতে বিজেপির বিপুল জয়লাভের জন্য পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সমর্থকদের উন্মাদনা শুরু।

এখনও পর্যন্ত ভোট গণনার ট্রেন্ড বলছে, মধ্য প্রদেশ, রাজস্থানে বিপুল জয় পেতে চলেছে বিজেপি। অন্যদিকে, ছত্তিশগড় কংগ্রেসের হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে চলেছে বিজেপি। ভোট গণনার হিসাবে সেরকমই ইঙ্গিত মিলেছে। জাতীয় কংগ্রেসকে ধরাশায়ী করে তিনটি রাজ্যে জয়ের পথে বিজেপি। তবে এই ভোটের ফলাফলের প্রভাব কি আগামী দিনে রাজ্যের লোকসভা নির্বাচনে পড়বে?

সেটা সময়ই বলবে বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলে। আর কয়েক মাসের মধ্যেই দেশ জুড়ে লোকসভা নির্বাচন সম্পন্ন হতে চলেছে। কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়া জোট গড়েছে বিরোধী দলগুলো। সেই জোটের অন্যতম অংশীদার এ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও। ফলত, ইন্ডিয়া জোটের ফল এই রাজ্যে কী হতে পারে, সেটা জানার জন্য আরও কয়েকমাস অপেক্ষা করতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here