দেশের সময় ওয়েবডেস্ক:‌ যে ব্যাঙ্কের সঙ্গে বাঙালির ব্যাঙ্কিং উদ্যোগের ইতিহাস জড়িয়ে, যাদের সদর দপ্তর ছিল কলকাতায়, সেই ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ইতিহাস হয়ে গেল ১ এপ্রিল থেকে। সিদ্ধান্ত হয়েছিল আগেই।

আরও কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এইসঙ্গে মিলে গেল। মোট ১০টি ব্যাঙ্ক মিলিত হয়ে তৈরি হল চারটি ব্যাঙ্ক। সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক মিলে গেল কানাড়া ব্যাঙ্কের সঙ্গে। দুয়ে মিলে হল দেশের চতুর্থ বৃহত্তম ব্যাঙ্ক। ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক মিলে গেল এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের সঙ্গে। ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, অন্ধ্র ব্যাঙ্ক, কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক এক হয়ে গেল। আর পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের সঙ্গে জুড়ে গেল ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অফ কমার্স এবং ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া।

ব্যবসা এবং পুঁজির নিরিখে হয়ে উঠল দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাঙ্ক, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার পরেই। ২০১৯–২০ অর্থবর্ষ শেষ হলেই, অর্থাৎ ৩১ মার্চের পরেই যে এই সংযুক্তি হবে, সেটা আগে থেকেই ঘোষিত ছিল। কিন্তু চলতি করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং দেশ জোড়া লক ডাউনের প্রেক্ষিতে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা আপাতত স্থগিত থাকতে পারে, এরকম একটা জল্পনাও শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু রটনা থাকা সত্বেও যেমন অর্থবর্ষের মেয়াদ সম্প্রসারিত হল না, তেমনি ব্যাঙ্ক সংযুক্তিও মুলতবি থাকল না।

অনাদায়ী ঋণ, অনুৎপাদিত সম্পত্তি এবং নানাবিধ আর্থিক কেলেঙ্কারি ও জালিয়াতির ভারে ধুঁকতে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে সংযুক্তির মাধ্যমে চাঙ্গা করে তোলার চেষ্টা বন্ধ রাখল না কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক।

দেশে সরকারি ব্যাঙ্কের মোট সংখ্যা কমে দাঁড়াল ১২টিতে।


ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে বাঙালির আবেগ জড়িয়ে ছিল। ১৯১৪ সালে, তদানীন্তন পূর্ববঙ্গের নরেন্দ্র চন্দ্র দত্ত প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা ব্যাঙ্কিং কর্পোরেশন, ১৯১৮ সালে জে সি দাশ প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক, ১৯২২ সালে ইন্দুভূষণ দত্ত প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক এবং ১৯৩২ সালে ডি এন মুখার্জির প্রতিষ্ঠা করা হুগলি ব্যাঙ্ক— চার উদ্যোগী বাঙালির প্রতিষ্ঠা করা এই চারটি ব্যাঙ্ক জুড়ে ১৯৫০ সালে তৈরি হয়েছিল নতুন ব্যাঙ্ক, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। ১৯৬৯ সালে দেশের যে ১৪টি ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাঙ্কের রাষ্ট্রায়ত্তকরণ হয়েছিল, তার মধ্যে এটিও ছিল।

তার পর থেকে সর্বভারতীয় বাণিজ্যিক উপস্থিতি সত্বেও ইউবিআই–এর পরিচিতি ছিল বাংলার ব্যাঙ্ক হিসেবে। যার সদর দপ্তর মুম্বই নয়, কলকাতায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here