দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ চিকিৎসকের শরীরে করোনা ভাইরাসের জীবাণু ধরা পড়ায় বন্ধ হয়ে গেল দিল্লি সরকার পরিচালিত একটি হাসপাতাল। ওই চিকিৎসক দিল্লির সরকারি ক্যান্সার হাসপাতালে কাজ করতেন। তাঁর শরীরে করোনার জীবাণু ধরা পড়ায় হাসপাতালের ওপিডি বিভাগ সহ বিভিন্ন দপ্তর ও ল্যাবরেটরি স্যানিটাইজ করা হয়েছে।
ওই চিকিৎসকের সান্নিধ্যে যারা এসেছিলেন, তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বিদেশ থেকে আসা আত্মীয়দের সংস্পর্শে আসাতেই ওই চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
জানা গেছে, ওই চিকিৎসকের ভাই ও ভগ্নিপতি সম্প্রতি ব্রিটেন থেকে ফিরেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের থেকেই ওই চিকিৎসকের শরীরে করোনা সংক্রমণ ঘটেছে।
ইতিমধ্যেই রাজধানীতে ১০০ জন করোনায় আক্রান্ত। মারা গেছেন দু’‌জন। এর আগে দিল্লির আর এক সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক দম্পতি করোনায় আক্রান্ত হন। সৌদি আরব থেকে আসা এক করোনা রোগীর সান্নিধ্য আসাতেই চিকিৎসক দম্পতির শরীরে করোনার জীবাণু থাবা বসায়।
এদিকে, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৩৯৭। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার নতুন করে ১৪৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সোমবার এই সংখ্যাটা ছিল ২৩০। যা একদিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। গোটা দেশে মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। তবে আশার খবর এই যে, ইতিমধ্যেই ১২৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় দেশের মধ্যে শীর্ষ স্থানে রয়েছে কেরল। সেখানে ইতিমধ্যেই ২৩৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তার পরেই রয়েছে মহারাষ্ট্র। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ২১৬। তারপরে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, কর্নাটক, তেলঙ্গানা, তামিলনাড়ু এবং রাজস্থান।

উত্তরপ্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১০১। দিল্লিতে ৯৭, কর্নাটকে ৮৩, তেলঙ্গানা ৭৯, তামিলনাড়ু এবং রাজস্থানে ৭৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
তবে মৃত্যুর নিরিখে দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র। ওই রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ৯। তার পরে রয়েছে গুজরাট। সেখানে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

রাজ্যে আরও এক করোনা-আক্রান্তের মৃত্যু হল৷ এবার বেলঘরিয়ার প্রৌঢ়। বেলঘরিয়ার ওই বাসিন্দার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট গতকালই এসে পৌঁছেছিল নাইসেড থেকে। তাতেই জানা যায়, কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত তিনি। ৫৭ বছরের প্রৌঢ় বেলঘরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।

জানা গেছে, এলাকায় একটি ফাস্টফুডের দোকান ছিল তাঁর। ২৩ তারিখ জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। তিনি অবশ্য আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন, ওই হাসপাতালেই ডায়ালিসিস চলত তাঁর। ২৩ তারিখ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সাত দিন পরে ৩০ তারিখ তাঁর লালারসের নমুনা পাঠানো হয় নাইসেডে। মঙ্গলবার পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দু’মাসে বেলঘরিয়ার বাইরে কোথাও যাননি তিনি। এখন সকলের মাথাব্যথার কারণ হল, বাইরে না গিয়েও তবে কী করে সংক্রামিত হয়েছিলেন এই প্রৌঢ়। তাহলে কি সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে? ইতিমধ্যেই যে বেসরকারি হাসপাতালে প্রৌঢ় ভর্তি, সেই হাসপাতালের দু’জন চিকিৎসক, নার্স ও কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মীকে হাসপাতালেই কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়েছে।

একইসঙ্গে আক্রান্ত প্রৌঢ়র পরিবারের সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁরা যেন বাড়ি থেকে না বেরোন। পরে স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।
এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪২। মারা গেছেন ছয় জন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here