দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দিল্লিতে কৃষকদের ট্র্যাক্টর র‍্যালি উপলক্ষ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল রাজধানী। সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছে এক কৃষকের। আহত হয়েছেন অসংখ্য কৃষক ও পুলিশ কর্মীরা। এমনকি লালকেল্লায় ঢুকে কৃষক সংগঠনের পতাকা তুলতে দেখা গিয়েছে কৃষকদের। এই ঘটনার নিন্দা করেছে কৃষক সংগঠনই। এবার ২৪ ঘণ্টা পরে মুখ খুলল কেন্দ্র। জানিয়ে দিল লালকেল্লায় জাতীয় পতাকার অবমাননা বরদাস্ত করা হবে না। এই ঘটনায় যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্র।
এদিন সাংবাদিকদের সামনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর বলেন, “যারা অন্যদের উস্কিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। লালকেল্লায় যেভাবে জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছে তা বরদাস্ত করবে না দেশ।” মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের একাংশ ঐতিহাসিক লালকেল্লায় ঢুকে পড়েন। তাঁদের হাতে ছিল লাঠি ও পতাকা। ‘নিশান সাহিব’ নামে একটি ধর্মীয় পতাকা তাঁরা লালকেল্লায় উড়িয়ে দেন। লালকেল্লার অভ্যন্তরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে তাড়া করেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই এই মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

কৃষক নেতাদের একাংশ আবার লালকেল্লার ঘটনার জন্য পাঞ্জাবের গায়ক, অভিনেতা তথা সমাজকর্মী দীপ সিধুকে দায়ী করেছেন। এক কৃষক নেতা বলেন, “দীপ সিধু সরকারের লোক। এই ষড়যন্ত্রটা আমাদের বোঝা দরকার।” পরে তিনি বলেন, “দীপ সিধু সর্দার নয় গদ্দার।”
অন্যদিকে দীপ সিধু ফেসবুকে পোস্ট করে বলেন, তাঁরা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেননি। প্রতীকী প্রতিবাদ হিসাবে ‘নিশান ই সাহিব’ পতাকা লাগিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “আমরা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানানোর জন্য নিশান সাহিব ও কৃষক সংগঠনের পতাকা লাগিয়েছিলাম। জাতীয় পতাকার অবমাননা করিনি। আমরা কিষাণ-মজদুর একতা নিয়ে স্লোগানও দিয়েছিলাম।”

ট্র্যাক্টর মিছিলের পরদিনই কৃষক সংগঠনগুলির মধ্যে বিরোধ শুরু হয়েছে। কিষাণ সংঘর্ষ কমিটির নেতা ভি এম সিং বলেছেন, “এই বিক্ষোভে এমন কেউ কেউ আছেন যাঁদের উদ্দেশ্য অন্য। আমরা তাঁদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারি না।” ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের একটি অংশও আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। তাদের বক্তব্য, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছে।

ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা ঠাকুর ভানুপ্রতাপ সিং বলেন, “গতকাল দিল্লিতে যা ঘটেছে, তাতে আমি মর্মাহত। আমি এখনই আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াতে চাই।” ভানুপ্রতাপ সিং-এর অনুগামীরা চিল্লা সীমান্তে অবস্থান করছিলেন। তাঁদের এদিন চলে যেতে দেখা যায়।
দিল্লিতে সংঘর্ষের ঘটনায় উস্কানি দেওয়া ও যুক্ত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই ২৫টি বেশি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০০ জনকে আটক ও অন্তত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনা যে কোনও মতেই বরদাস্ত করা হবে না, তা এবার সাফ জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। এখন দেখার কেন্দ্রের তরফে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here