দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ চন্দ্রযান অবতরণের মুখে বাধা? ইসরো জানাল ল্যান্ডার থেকে মিলছে না সঙ্কেত। উদ্বিগ্ন ইসরোর মহাকাশবিজ্ঞানীরা।

এই মুহূর্তে কী অবস্থায় রয়েছে চন্দ্রযান সেটা জানা যাচ্ছে না। ইসরো জানিয়েছে, কিছু সময় পরে চন্দ্রযানের সঠিক অবস্থান জানানো হবে।

অবতরণের কয়েক মিনিট আগে কী কারণে বাধা এল, এখনও সামনে আনেনি ইসরো। জানা গেছে, ল্যান্ডার থেকে সঙ্কেত পাওয়ার চেষ্টা চলছে। ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবন জানিয়েছেন, চাঁদের মাটি থেরে ঠিক ২.১ কিলোমিটার দূরত্বে ল্যান্ডারে সঙ্গে আচমকাই যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায়। কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


ইসরোর বিজ্ঞানীদের সহস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “জীবনে উত্থান-পতন আসে। দেশ আপনাদের নিয়ে গর্ব করে। আপনারা দেশের অনেক সেবা করেছেন। আমি শেষ অবধি আপনাদের সঙ্গে আছি, থাকব।”

শেষ প্রহরের সেই অপেক্ষা..

রাত দেড়টা থেকে শুরু হয়েছিল ল্যান্ডারের অবতরণের প্রক্রিয়া।

ধীরে ধীরে গতি কমিয়ে গুটি গুটি পায়ে চাঁদের দিকে এগিয়ে যায় বিক্রম।

ইসরোর মিশন কন্ট্রোল রুমে তখন মাথায় হাত দিয়ে শেষ মুহূর্তের প্রতীক্ষা করছেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা।

অন্তিম ১৫ মিনিটের সেই প্রতীক্ষা ছিল উত্তেজনাপূর্ণ।

চিন্তিত দেখাল ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবনকেও।

উত্তেজনায় উঠে দাঁড়ালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

ইসরোর বিজ্ঞানীদের মোদী: সাহসী হোন, জীবনে ওঠা পড়া লেগেই থাকে

সব আগাম হিসাব মেনেই চলছিল। তবু ইসরো চেয়ারম্যান শুক্রবার সকালেই বলেছিলেন, শেষ পনেরো মিনিট হবে রূদ্ধশ্বাস। দেখা গেল, পনেরো, ষোলো, সতেরো মিনিট পরেও বিক্রম ল্যান্ডারের সাড়া নেই!

নেই তো নেইই..

সুতরাং আরও অপেক্ষা। আরও। অন্তত আরও পনেরো মিনিট। তবুও ল্যান্ডার থেকে যখন সাড়া মিলছে না, কোনও সিগন্যাল এসে পৌঁছচ্ছে না বেঙ্গালুরুতে ইসরোর কন্ট্রোল রুমে, দেখা গেল হতাশা গ্রাস ও উদ্বেগ গ্রাস করছে বিজ্ঞানীদের।

হতাশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। কিছু ক্ষণ আগেও গালে হাত দিয়ে বসেছিলেন। কিন্তু গালে হাত দিয়ে হতাশা প্রকাশ কি তাঁর মানায়? মানায় না। চকিতে সে সব যেন ঝেড়ে ফেললেন। তার পর ইসরো চেয়ারম্যানের কাঁধে হাত দিয়ে বললেন, ‘বি কারেজিয়াস। (সাহসী হোন)।’

সেখানেই না থেমে ইসরোর বিজ্ঞানীদের উদ্দেশে বললেন, জীবনে ওঠা পড়া লেগেই থাকে। যে সাফল্য আপনারা অর্জন করেছেন, তা কম নয়। গোটা দেশ আপনাদের জন্য গর্বিত। আপনারা আবারও দেশকে গর্বিত করবেন, আমি নিশ্চিত।”

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এখনও পর্যন্ত সিগনাল পাওয়া যাচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু আমরা আশায় থাকব। শুধু তা-ই নয়। উপস্থিত স্কুল পড়ুয়াদের সঙ্গে কথাও বলেন মোদী। টিপস দেন, কী ভাবে লক্ষ্য পূরণ হবে তাঁদের। এক ছাত্র তাঁকে প্রশ্ন করে, রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য সে কী ভাবে প্রস্তুতি নেবে। হাল্কা খুনসুটির গলায় মোদী পাল্টা প্রশ্ন করেন, প্রধানমন্ত্রী নয় কেন?

যেন কিছুই হয়নি। নিজের স্টেডি আচরণে এমনটাই বোঝাতে চাইছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ইসরোর বিজ্ঞানীদের মুখে তখন হতাশার ছাপ স্পষ্ট। কেউ-ই আর অপেক্ষা করছেন না সিগন্যালের জন্য। যেন অলিখিত এক পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন তাঁরা।

সকলকে আরও এক বার অভিনন্দন জানিয়ে মোদী চলে যান এর পরে। গোটা ঘটনাটি ইসরোর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলিতে লাইভ দেখানো হচ্ছিল। মোদীর প্রস্থানের পরে বন্ধ করে দেওয়া হয় সেগুলিও।

ইসরো থেকে বেরিয়েই টুইট করেন মোদী। লেখেন, আমাদের বিজ্ঞানীদের জন্য গোটা দেশ গর্বিত। ওঁরা ওঁদের তরফে সেরা চেষ্টা করেছন দেশকে গর্বিত করার। এই সময়গুলোয় আর একটু সাহসি হতে হবে, আর আমরা সাহসি হবো।

দেখুন সেই টুইট।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here