কলকাতা থেকে দূরত্ব মাত্র ৯৭ কিলোমিটার। কাজেই এই পুজোর ছুটিতে যাওয়ার আদর্শ জায়গাগুলোর একটা হতেই পারে পারমাদন ফরেস্ট।” দেখুন – ভিডিও:

সোমা দেবনাথ, পারমাদন: বনগাঁর কাছে পারমাদন বিখ্যাত বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামাঙ্কিত অভয়ারণ্যের জন্য। জায়গাটা একেবারে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি। ইছামতী নদীর গা ঘেঁষে শিমুল, অর্জুন, শিশু, শিরীষ গাছের ভিড়ে হারিয়ে যেতে হলে আপনাকে যেতে হবে পারমাদনের জঙ্গলে।

অসংখ্য বাঁদর, ময়ূর আর খরগোশের আনাগোনা এই অভয়ারণ্যে। আর রয়েছে অজস্র পাখি। শঙ্খচিল, নীলকণ্ঠ, ফুলটুসির মতো পাখি স্পট করতে গেলে রেডি রাখুন ভাল লেন্স-সমেত ক্যামেরা।
গাছ আর পাখি ছাড়া আর যেটা খুব বেশি করে চোখে পড়বে, তা হল হরিণ। প্রায় ২৫০টা হরিণ আছে এই জঙ্গলে। এই জায়গার খুব কাছেই থাকতেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বনগাঁ আর ইছামতীকে নিয়ে যেমন অনেক লেখা লিখেছেন সাহিত্যিক, তেমনই সম্ভবত এই জায়গা নিয়েই ‘আরণ্যক’এ লিখেছিলেন বিভূতিভূষণ, ‘‘শুইয়া আছি, হঠাৎ কীসের পায়ের শব্দে উঠিয়া বসিয়া শিয়রের দিকে চাহিয়া দেখি ঝোপের নিভৃততর দুর্গমতম অঞ্চলে নিবিড় লতাপাতার জড়াজড়ির মধ্যে আসিয়া দাঁড়াইয়াছে একটা হরিণ। ভালো করিয়া চাহিয়া দেখি বড় হরিণ নয়, হরিণ শাবক। সে আমায় দেখিতে পাইয়া অবোধ বিস্ময়ে বড় বড় চোখে আমার দিকে চাহিয়া আছে, ভাবিতেছে এ আবার কোন অদ্ভুত জীব।’’

ইছামতীর ধারে ৬৮ বর্গকিলোমিটার জায়গা নিয়ে পুরো অভয়ারণ্য তৈরি হয়েছে। ভিতরে চিলড্রেন্‌স পার্ক ছাড়াও রয়েছে ছোট্ট একটা চিড়িয়াখানা আর বন দফতরের ট্যুরিস্ট লজ। ১৯৬৪ সালে ১৪টি চিতল হরিণ এই অরণ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকেই অভয়ারণ্যের চেহারা নেয় পারমাদন।

১৯৯৫ সালে বিভূতিভূষণের নামে নামাঙ্কিত করা হয় এই অভয়ারণ্যকে। ভিতরে ঢোকার জন্য এবং যানবাহনের জন্য আলাদা প্রবেশমূল্য রয়েছে। ভিতরে বনভোজনও করা যায় অনুমতিসাপেক্ষে। এখান থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত খুব কাছেই। চাইলে ঘুরে আসতে পারেন সেখান থেকেও। বিভূতিভূষণের বসত বাড়িও কাছেই ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here