দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছেন, আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশে কোভিড টিকাকরণ শুরু হবে। এই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি দিয়ে ঘোষণা করলেন, রাজ্যের সমস্ত মানুষকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার। আর মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরেই অর্থের সংস্থান নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।


রবিবার একটি চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী কোভিড মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য ও মানুষের পাশে থাকার জন্য রাজ্যের সব পুলিশ কর্মী, হোম গার্ড, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মী, সংশোধনাগার কর্মীদের ধন্যবাদ জানান। তাঁদের সবার কাছে কোভিড ভ্যাকসিন অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।


তবে শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত এই কর্মীদের নয়, রাজ্যের সব মানুষকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গোটা দেশেই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ধাপে ধাপে টিকাকরণ হবে। সেই একই ভাবে এই রাজ্যেও টিকাকরণ হবে বলেই বোঝা যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর এই চিঠিতে।

ইতিমধ্যেই একাধিক জেলায় পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে এই চিঠি। থানা ও স্বাস্থ্য কার্যালয় থেকে তা বিলিও হচ্ছে। নবান্ন সূত্রে খবর, অনেক দিন আগেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রীর লেটারহেডে এই চিঠি লেখা হয়েছে।


কিন্তু এই ঘোষণার পরে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, রাজ্যের সব মানুষকে টিকা দিতে গেলে যে খরচ, তার সংস্থান রয়েছে তো। কারণ, পশ্চিমবঙ্গে অন্তত ১০ কোটি মানুষ থাকেন। তাঁদের প্রত্যেককে টিকা দিতে গেলে অন্তত পাঁচ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। এমনিতেই মুখ্যমন্ত্রী বারবার দাবি করেছেন, রাজ্যের কোষাগারে টাকা কম। তার মধ্যেই কোনও রকমে কোভিড, উমফানের মতো বিপর্যয় সামলাচ্ছে সরকার। টাকা না দেওয়ার জন্য বারবার কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলেছে তারা। তাহলে এই বিপুল পরিমাণ টাকা কোথা থেকে আসবে, উঠছে প্রশ্ন। সামনে নির্বাচন থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল নাতো, সেই প্রশ্নও তুলছেন পর্যবেক্ষকদের কেউ কেউ।

তবে এর মধ্যেই প্রশাসনের একটা অংশের ব্যাখ্যা, বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোভিডের টিকা দেওয়া হবে ধাপে ধাপে। অর্থাৎ একসঙ্গে সবাইকে টিকা দিতে হবে না। রাজ্যের সবাইকে ধাপে ধাপে টিকা দিতে অনেক সময় লাগবে। অর্থাৎ ধীরে ধীরে অর্থের সংস্থান করা যাবে। আবার অনেকেই হয়তো এই লাইন দিয়ে টিকা নিতে না চেয়ে নিজেরাই খরচ করে টিকা নিয়ে নেবেন। সেগুলিও বাদ যাবে সরকারের তালিকা থেকে।
এখন দেখার রাজ্যে টিকাকরণ শুরু হওয়ার পরে ছবিটা কীরকম দাঁড়ায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here