দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: নন্দীগ্রামের পুনরাবৃত্তি যেন পুরুলিয়ায়। দিন দুই আগেই নিজের ‘ডেরা’ নন্দীগ্রামে প্রবল বিক্ষোভ, চেয়ার ছোড়াছুড়ি, শেষে ইটবৃষ্টির মধ্যে ভণ্ডুল হয়ে গিয়েছিল বিজেপির যোগদান সভা। তড়িঘড়ি কয়েক মিনিটের বক্তব্য পেশ করে সভার ইতি টেনে দিতে হয়েছিল বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও। এবার একই চিত্র পুরুলিয়াতে। এদিন পুরুলিয়াতে কাশীপুর ন’পাড়া রোড শো শুরু করে কাশীপুর মোড় এলাকায় সভা করেন শুভেন্দু। আর শুভেন্দু বক্তব্য শুরুর আগেই চরম বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় সভায়। শুরু হয় চেয়ার ছোড়াছুড়ি, হইহট্টগোল। নন্দীগ্রামের মতোই পুরুলিয়াতেও আসরে নেমে শুভেন্দুকে জনতাকে শান্ত হতে অনুরোধ করতে দেখা যায়। শেষে এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য ‘ভাইপো’ (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়)-কে নিশানা করেছেন নব্য বিজেপি নেতা।

শুভেন্দু দাবি করেছেন, ‘এই সবই চক্রান্ত। পুলিশের অনুমতিতে মিছিল। তবু পুলিশের দেখা নেই। এই সবই চক্রান্ত। ডায়মন্ড হারবার থেকে অফিসার এনে এখানে বসিয়েছে। কিন্তু আর কয়েকদিন পরই সব থাকবে নির্বাচন কমিশনের হাতে। তখন বুঝতে পারবেন আসল খেলা।’ এদিন রোড শো করার সময়ই অবশ্য শুভেন্দু ফের তৃণমূলকে আক্রমণ করে বলেন, ‘নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য পুলিশকে কাজে লাগানো হচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মধ্যরাতে গণনায় কারচুপি করেছে তৃণমূল। কী ভাবে পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল, তা জানি। আমি এই দল ত্যাগ করে গর্বিত।’

গত শুক্রবারও নন্দীগ্রামে কয়েক হাজার লোককে যোগদান করানোর আগাম ঘোষণা করলেও দলের কর্মীদের মধ্যেই অশান্তির আশঙ্কায় হুড়োহুড়ি করে সেই কর্মসূচি বাতিল বলে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেদিনের যোগদান মেলায় বেশ কিছু শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিজেপি শিবিরে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। জমায়েতে খবর ছড়িয়ে পড়ে, খেজুরির তৃণমূল বিধায়ক রঞ্জিত মণ্ডল এবং তাঁর ভাই অসীম মণ্ডল বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য আসছেন। এরপরেই শুরু হয় উত্তেজনা। নন্দীগ্রাম বাজারের মূল রাস্তার দিকে জমায়েত হওয়া বিজেপি কর্মীরা যোগদান করানোর জন্য তৈরি আলাদা মঞ্চের সামনে গিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের বক্তব্য, ‘ওই দুজনের বিরুদ্ধেই আমাদের লড়াই। ফলে এদের নেওয়া চলবে না। যদি দলে ঢোকে, এমন ঝামেলা করব পুলিশ দিয়েও আটকানো যাবে না।’ দলের উত্তেজিত একটা অংশ প্রথমে চেয়ার ছোড়াছুড়ি করার পর ঢিলও ছুড়তে শুরু করেন। মঞ্চে তখন বক্তব্য পেশ করছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তিনিও সমর্থকদের উত্তেজিত না হওয়ার আবেদন জানান। সে সময় শুভেন্দুকে মঞ্চ থেকে পরিস্থিতির খবরাখবর নিতে দেখা যায়। এরপর দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দুর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পর সভা শেষ হয়ে যায়। এদিন অবশ্য পুরুলিয়াতে উপস্থিত জনতাকে শান্ত করে কিছুক্ষণ বক্তব্য রাখেন শুভেন্দু।

সেখানে তিনি বলেন, ‘সমস্ত কেন্দ্রীয় প্রকল্প নাম পালটে নিজেদের মধ্যে দাবি করছে রাজ্য সরকার। মোদীজি বলেছেন, সকলে বিনামূল্যে টিকা পাবেন। আজ আবার এখানকার মাননীয়া সবাইকে চিঠি পাঠিয়ে বলল, বিনামূল্যে টিকা দেবেন। এখন তো মনে হচ্ছে, ওটাকে টিকাশ্রী নাম দিয়ে নিজের নামে চালিয়ে দেবেন।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here