দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আজ বৃহস্পতিবার রাজ্যজুড়ে সম্পূর্ণ লকডাউন। চলতি সপ্তাহের শনিবার ও আগামী সপ্তাহের বুধবারও পুরো লকডাউন থাকবে। সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। তবে, রাজ্যের বেশ কিছু জেলার কিছু কিছু অংশে দীর্ঘমেয়াদি লকডাউন থাকবে। লকডাউন নিয়ে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মাইকে প্রচার করেছে। পুরো লকডাউন চলার সময় বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বেরোতে পারবেন না।

রাজ্যজুড়ে সরকারি, বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানও। সব ধরনের পরিবহণ ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। জরুরি পরিষেবা ছাড়া কিছুই খোলা থাকবে না। স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার, শনিবার, আগামী বুধবার সমস্ত পেট্রোল পাম্প খোলা থাকবে। তবে, লকডাউনের আওতার বাইরে যে সমস্ত গাড়ি তারাই তেল নিতে পারবে। এই তিনদিন ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকবে।

খাদ্য দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রেশনের দোকান লকডাউনের দিনগুলোতে বন্ধ থাকবে। সম্পূর্ণ লকডাউনের দিনগুলিতে কঠোর ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। লকডাউন ভাঙলে পুলিশ গ্রেপ্তার করবে। ওই ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের থানায় নিয়ে গিয়ে ‘‌অ্যারেস্ট মেমো’‌–‌তে সই করাবে। ওই ব্যক্তিকে আদালত থেকে জামিন নিতে হবে। আজ সকাল ৬টা থেকে কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সমস্ত সহকারী নগরপাল এবং ট্রাফিক গার্ডের ওসিরা বাহিনী নিয়ে রাস্তায় নজরদারিতে থাকবেন। অ্যাম্বুল্যান্স, রোগী নিয়ে যাওয়া গাড়ি ছাড়া কোনও গাড়িই শহরে ঢুকতে বা বেরতে পারবে না। প্রতি দু’‌ঘণ্টা অন্তর সর্বশেষ পরিস্থিতি লালবাজারে জানাতে হবে। কলকাতার সমস্ত ঢোকার রাস্তা সিল করা থাকবে। 


রাজ্য জুড়ে বৃহস্পতিবার, আগামী শনি ও পরের সপ্তাহে বুধবার সম্পূর্ণ লকডাউন চলার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছিলেন। রাজ্য সরকার কিছু নির্দেশিকাও জারি করেছিল। তবে, জেলার কিছু কিছু এলাকায় দীর্ঘমেয়াদি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে সেই এলাকার পরিস্থিতি বিচার করে। শিলিগুড়িতে ২৯ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন চলবে। 

কোচবিহার ২৭ জুলাই, বীরভূম পুরসভা এলাকায় ২৪ থেকে ৩১ জুলাই, বর্ধমান পুরসভার ৩৫ ওয়ার্ডে ৭ দিন, বনগাঁয় ২৬ জুলাই থেকে ২ আগস্ট, বারাসত ৩১ জুলাই পর্যন্ত, নৈহাটি ৩০ জুলাই পর্যন্ত, বরানগর টানা ১০ দিন, ব্যারাকপুর ৩০ জুলাই পর্যন্ত, আরামবাগ পুরসভা এলাকায় ৭ দিন। রাজ্য সরকারের ঘোষণা মতো এ সপ্তাহে দুদিন লকডাউনের পাশাপাশি ২৪ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত বীরভূমের ৬টি পুরসভা এলাকায় প্রতিদিন বিকেল ৩টে থেকে পরের দিন সকাল ৬টা পর্যন্ত লকডাউন জারি থাকবে।

কলকাতায় গড়িয়াহাট, ফুলবাগান, চিৎপুর, বেহালা–সহ বিভিন্ন বাজারে মাইকে পুলিশ প্রচার চালিয়েছে বুধবার। জেলাতেও একইভাবে প্রচার চালানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। লকডাউন কার্যকর করার ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার প্রচার চলছে। মাস্ক পরার ব্যাপারে সচেতন করা হয়েছে। কলকাতায় মাস্ক না পরায় গ্রেপ্তার হয়েছে গত ৩ দিনে (‌২০, ২১, ২২)‌ ১ হাজার ২০৮ জন। থুতু ফেলার জন্য গত ৩ দিনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭০ জনকে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অকারণ ঘোরাঘুরি করতে দেখলেই ধরা হবে।

প্রকৃত কারণ ছাড়া কোনও অজুহাতেই ছাড়া হবে না। বিভিন্ন ট্রাফিক গার্ডে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে, গাড়ি নিয়ে অপ্রয়োজনে ঘোরাঘুরি করলেই নির্দিষ্ট ধারায় ওই গাড়ি বাজেয়াপ্ত হবে।
লকডাউন থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য পরিষেবার যাবতীয় সবকিছু। যাঁরা চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী যাতায়াত করতে পারবেন। ওষুধের দোকান, থানা, আদালত, দমকল লকডাউনের আওতায় থাকছে না। লকডাউন থেকে ছাড় সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়া। বিদ্যুৎ, জল ও সাফাই বিভাগ স্বাভাবিক কাজ করবে। শিল্প কারখানাগুলি নিজস্ব শ্রমিক দিয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম চালু রাখতে পারবে। 

কৃষিকাজ ও চা–বাগানের কাজ চলবে। এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পণ্য পরিবহণের গাড়ি চলাচল করবে। ই–‌কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলি স্বাভাবিক কাজ চালাতে পারবে।  রান্না করা খাবারের হোম ডেলিভারি করা যাবে।‌‌‌‌‌‌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here