দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বদায়ুঁ-গণধর্ষণ ও নৃশংস হত্যা কাণ্ডে ধরা পড়ল মূল অভিযুক্ত। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার মন্দিরের পুরোহিতকে গ্রেফতার করা হয়েছে যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে মহিলাকে খুন করার এই ভয়াবহ ঘটনায়। মূল অভিযুক্ত, পুরোহিত সত্যনারায়ণের সঙ্গে যে আরও দু’জন ছিল, তাদের ধরা গেছিল বুধবারই।


রবিবার উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁর নৃশংস ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডে দেশবাসীর সামনে ফের উস্কে যায় নির্ভয়ার স্মৃতি। গণধর্ষণের পরে মহিলার যৌনাঙ্গে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল রড। ভেঙে দেওয়া হয় তাঁর পাঁজর ও পা। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনা ফের ক্ষোভের আগুন জ্বালিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। প্রশাসনের নিন্দে শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে।


সোমবার বদায়ুঁর উঘাইতি পুলিশ থানায় এক মহিলার পরিবারের তরফে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল, সেখানে বলা হয়, রবিবার সন্ধেবেলা একটি মন্দিরে গিয়েছিলেন ওই মহিলা। তারপর থেকে আর ফেরেননি তিনি।ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। জানা যায়, রবিবার গভীর রাতে স্থানীয় এক জায়গায় এক মহিলাকে রক্তাক্ত অবস্থায় কেউ বা কারা ফেলে রেখে গেছে। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

৩ জানুয়ারি বিকেল পাঁচটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ৫০ বছরের ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। তিন ঘণ্টা কেটে গেলেও বাড়ি ফেরেননি। খোঁজ শুরু করে পরিবার। রাত ১১টা নাগাদ তাঁর নিথর দেহ বাড়ির সামনে ফেলে পালায় মন্দিরের পুরোহিত, তার শিষ্য ও গাড়ির চালক। 
ময়নাতদন্তে দেখা গেছে, নির্যাতিতার গোপানাঙ্গে ক্ষত। পাঁজর এবং পা ভেঙে গেছে। বদাউনের চিফ মেডিকেল অফিসার ডা.‌ যশপাল সিং জানিয়েছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে শক পেয়েছেন। তার জেরেই মৃত্যু। ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে।  মহিলার যৌনাঙ্গে মারাত্মক আঘাত লেগেছিল। সেখানে রড ঢোকানো হয়েছিল। এছাড়া তাঁরা পাঁজরের হাড় ও পা ভাঙা ছিল। সেইসঙ্গে তাঁর ফুসফুসে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। তার ফলে তাঁর দেহ থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছিল। এর ফলেই ওই মহিলার মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার তদন্তে মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। মন্দিরের মোহান্ত বাবা সত্যনারায়ণ, তার সেবক বেদরাম ও ড্রাইভার যশপালের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। বেদরাম ও যশপাল আগেই ধরা পড়েছিল, এবার গ্রেফতার হল মোহান্ত বাবা সত্যনারায়ণও।


নিহত মহিলার ছেলে বলেন, “মা ওই মন্দিরে প্রায়ই যেতেন। আমরা কখনওই এমন কিছু বুঝিনি। ওইদিন বিকেল পাঁচটায় গিয়ে মা আর ফিরছিলেন না। শেষে রাত সাড়ে এগারোটায় ওরা রক্তাক্ত অবস্থায় নিয়ে এল মাকে। তার আগেই সব শেষ। মাকে অত্যাচার করে খুন করেছে ওরা।”

এদিকে জাতীয় মহিলা কমিশনের এক সদস্য নির্যাতিতার বাড়ি থেকে রাতে বেরোন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন। বলেন, ‘‌কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মহিলাদের যখন তখন একা ঘোরাফেরা করা ঠিক নয়। আমি মনে করি, সন্ধের সময় তিনি একা মন্দিরে না গেলে বা পরিবারের কাউকে সঙ্গে নিয়ে গেলে তিনি ধর্ষিত হতেন না।’‌ এই মন্তব্যের জেরে বিতর্ক তুঙ্গে। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here