দেশের সময়:-শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বন্ধু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিজেপির অন্দর মোহলে রীতিমত অস্বস্তি শুরু হয়েছে।বিজেপিতে জয়েন করার দিন থেকেই বৈশাখীকে নিয়ে রাজ্য বিজেপির অন্দরে বিভিন্ন জনের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হতে শুরু করেছে।

বিজেপি রাজ্য নের্তৃত্বের একাংশ মনে করছে শোভন পুরোদস্তুর একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হলেও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় সেই অর্থে কোন পরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বই নয়,অথচ তাঁকে অষথা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।আর এই গুরুত্ব দিতে গিয়ে রাজ্য বিজেপি নানা ভাবে হেনস্থার মুখে পড়তে বাধ্য হচ্ছে।

প্রথমদিন দিল্লির পার্টি অফিসে যেভাবে বৈশাখীর আপত্তিতে শোভন বেঁকে বসায় তৃণমূলের বিধায়ক দেবশ্রী রায় বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন নি তা এ রাজ্যের অনেক বিজেপি নেতাই মানতে পারছেন না।তাঁদের মতে বৈশাখীর চেয়ে এ রাজ্যে দেবশ্রী রায় অনেক বেশী পরিচিত নাম,তিনি সিনেমার একসময়কার নামী সেলিব্রিটি,সেই জন্য তিনি যদি বিজেপিতে জয়েন করতেন তাহলে রাজ্যে অনেকবেশী আলোড়ন পড়ত।

সেক্ষেত্রে কোন যুক্তিতে বৈশাখীর আপত্তিতে শোভন বেঁকে বসায় বিজেপির দিল্লির নের্তৃত্ব দেবশ্রীকে দলে যোগ না করিয়েই ফিরত পাঠালেন তা বুঝতে পারছেন না অনেকেই।এটা বিজেপির রাজ্য নেতাদের একাংশের মধ্যে তীব্র বিরক্তি তৈরি করেছে বলে খবর।

কেন বৈশাখীকে এতটা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে তা বুঝে উঠতে পারছেন না বিজেপির রাজ্য নেতাদের অনেকেই।বৈশাখী যে ভাবে শোভনের সংবর্ধনা সভার দিন অভিমান করে একেবারে না আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন,এবং যেভাবে একেবারে সরাসরি কেন সংবর্ধনা সভার কার্ডে তাঁর নাম লেখা হয়নি বলে সরাসরি দল্লিতে ফোন করে তাঁদের কৈফিয়ত দাবি করলেন এবং শেষ পর্য়ন্ত রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে কার্যত ভুল স্বীকার করতে বাধ্য করলেন তা অনেকের কাছেই হজম করা শক্ত হচ্ছে।

এই সুত্রেই বিজেপির অন্দরেই এই প্রস্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে যে বৈশাখীকে আর কতদিন হজম করা সম্ভব হবে?খোদ দিলীপ ঘোষই যে বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট বিরক্ত তা তিনি একান্ত আলোচনায় প্রকাশও করেছেন।দিলীপ ঘোষের শোভনের সঙ্গে বৈশাখীকে ডালভাত বলাও বৈশাখী মেনে নেন নি, তা নিয়েও প্রকাশ্যে তিনি সাংবাদিকদের সামনেই দিলীপবাবুকে একরকম অপমানই করেছেন।

যেভাবে সেদিন সাংবাদিক বৈঠকে বৈশাখীদেবী দিলীপবাবুকে প্রতিটি মানুষের আলাদা অবস্থান সম্পর্কে অবগত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তা যে কার্যত দিলীপ ঘোষের রুচি ও বোধ নিয়ে প্রশ্ন করা তা মানছেন অনেক বিজেপি নেতাই।বৈশাখীকে নিয়ে পদে পদে অস্বস্তি ও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বকে,অথচ বৈশাখীদেবীর রাজনৈতিক ওজন তেমন নেই বলেই রাজ্য বিজেপির অধিকাংশ নেতাই মনে করেন।

বৈশাখী মূলত শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বন্ধু ও তাঁর সঙ্গে সম্পর্কের জেরে যে বিতর্ক তার সূত্রেই বৈশাখীদেবীর পরিচয়।বিজেপির রাজ্য নেতারা বুঝে উঠতে পারছেন না যে বৈশাখী শুধুমাত্র শোভনের বন্ধু হওয়ার জোরেই রাজনীতিক হিসেবে স্বীকৃত তিনি কীভাবে দলে এতটা গুরুত্ব পাচ্ছেন?দিল্লির নেতাদের এই আচরণ অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না।

ভেতরে ভেতরে একটা চাপা গুঞ্জন শুরু হয়েছে,বৈশাখীকে কেন্দ্র করে।বিজেপির রাজ্য নেতারা এ বিষয়ে খুব তাড়াতাড়ি দিল্লির সঙ্গে কথা বলবেন বলেও শোনা যাচ্ছে।সব মিলিয়ে বৈশাখী ঝড় এখন বিজেপির অন্দর মোহলেও নাড়া দিতে শুরু করেছে।রাজ্য বিজেপির পক্ষে যে বৈশাখীকে খুব বেশীদিন হজম করা সম্ভব হবে না তা কিন্তু বিজেপির অন্দর মোহলে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে।

রাজ্য বিজেপির এই অস্বস্তি কাটাতে বঙ্গ রাজনীতির নব্য চানক্য মুকুল রায় কী ভূমিকা নেন তার দিকেও অনেক বিজেপি নেতা তাকিয়ে আছেন,কেউ কেউ বলছেন দিলীপ ঘোষের উচিত এ বিষয়ে মুকুল রায়ের পরামর্শ নেওয়ার{কেউ আবার মনে করছেন গোটা খেলাটাই আসলে মুকুল রাযেরই খেলা,রাজ্য় বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বকে চাপে রেখে নিজের প্রাসঙ্গিকতা বজায রাখাটাই মুকুলবাবুর মাস্টার প্লান,এমনকী দেবশ্রী রাযকে সামনে এনে শোভন বৈশাখীকে চাপে রাখাটাও নাকি মুকুল রাযেরই কৌশল।এখন দেখার এই কৌশলের রেশ কোথা থেকে কোথায় য়ায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here