দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দ্বিতীয় দফায় নন্দীগ্রামে ভোট দান মিটতেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য শুভেন্দু অধিকারীর। ভোটের কর্তব্য নিযুক্ত সরকারি আধিকারিককে চাপ দিয়ে বুথ রিগিং করিয়েছিলেন মমতা, এমনটাই দাবি একদা সহকর্মী ও বর্তমানে প্রতিপক্ষ প্রার্থী বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর। এমনকী তাঁর দাবি অনুসারে, বিজেপির জেতা আসন জিততে রাতারাতি ইভিএম-এর পদ্ম স্টিকার বদলে ঘাসফুলের প্রতীক লাগিয়ে দেওয়া হয়। সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিজেপি নেতা বলেন, গত লোকসভা নির্বাচনে আরামবাগ কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীকে হারানোর জন্য বুথ রিগিংয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছিল এবং তা ছিল তৃণমূল সুপ্রিমোর মস্তিষ্ক প্রসূত।

শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, ‘তৃণমূলকে জেতাতে ডিএম এবং এসডিওকে অনৈতিক ভাবে চাপ দিয়েছিলেন মমতা। আরামবাগে বিজেপি প্রার্থী হেরে গিয়েছিলেন কারণ ১৬টা ইভিএম-এর ভোট গোণা হয়নি। ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়া জেলা পরিষদ জিতে নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু রাতারাতি ইভিএমে পদ্ম প্রতীকের স্টিকার বদলে সেই জায়গায় জোড়াফুলের প্রতীকের স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হয়।’ শুভেন্দু অধিকারীর এমন বিস্ফোরক মন্তব্যে নতুন করে চাঞ্চল্য ভোট ময়দানে।

প্রসঙ্গত ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে আরামবাগ কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন অপরূপা পোদ্দার (আফরিন আলি)। বিপরীতে ছিলেন বিজেপির তপন কুমার রে। মাত্র ১,১৪২ ভোটের ব্যবধানে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীকে হারিয়ে ওই কেন্দ্রে জয় পেয়েছিলেন জোড়াফুল শিবিরের প্রার্থী অপরূপা। কিন্ত আজ হঠাৎ নিজের কেন্দ্রের ভোট পর্ব মিটতেই গত ভোটের প্রসঙ্গ তুললেন কেন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী তা নিয়ে ধন্দে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

উল্লেখ্য, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আনছেন শুভেন্দু অধিকারী। এই প্রথম নয়, সপ্তাহখানেক আগেই পটাশপুরের জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রিগিং কুইন বলে সম্বোধন করেছিলেন শুভেন্দু। তিনি বলেছিলেন, ‘রিগিং কুইন বলছেন ভোটে রিগিং হবে। গণতান্ত্রিক ভাবে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে তাই ওনার এত চিন্তা। মানুষকে প্রভাবিত করতে উনি প্রশাসনের অপব্যবহার করছেন। পুলিশকে নীরব দর্শকে পরিণত করেছেন।’

অন্যদিকে, গত কয়েকদিন ধরেই বিজেপি বুথ রিগিং, ছাপ্পা ভোট, সন্ত্রাস করতে পারেন বলে অভিযোগ আনছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এদিন নন্দীগ্রামে বয়ালের ভক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭নং বুথে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ পেয়ে সেখানে পৌঁছান নেত্রী। সংবাদমাধ্যমে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়েছে। ৬৩টি অভিযোগ পড়েছে। কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশেই এমনটা করা হচ্ছে। আমরা আদালতে যাব। আইনি ব্যবস্থা নেব। এখানে মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি ছাপ্পা চলছে।’ দিনভর উত্তেজনা পূর্ণ দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে দাদা-দিদির হাইভোল্টেজ লড়াইয়ে নতুন উত্তেজনা তৈরি করল এমন বিস্ফোরক অভিযোগ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here