দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ শুক্রবার সকালে বনগাঁয় টানা ১ঘন্টা যশোর রোড অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে লাগাতার বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন কয়েকশো বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা৷ অবরোধের জেরে গোটা শহর জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়৷ঘটনা স্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশের সামনেই ক্ষুব্ধ বিজেপি-নেতা কর্মীরা প্রতিবাদে মুখর হন।দাবি তোলেন বনগাঁয় দুষ্কৃতীদের মারে গুরুতর আহত বিজেপি কর্মী সুতনু দেবনাথের ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে৷

ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার বনগাঁ থানার বিএসএফ মোড় এলাকার ভবানীপুর রোডে দোকান থেকে টেনে বার করে এক বিজেপি কর্মীকে বাঁশ, লাঠি ও রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে একদল দুষ্কৃতী। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিজেপি যদিও তৃণমূল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আহতের নাম সুতনু দেবনাথ ওরফে হুলো। তিনি বনগাঁ গ্রামীণ ১ নম্বর শক্তি কেন্দ্রের বিজেপি প্রমুখ। তাঁর বাড়ি বনগাঁ থানার জয়পুর ফুলতলা কলোনি এলাকায়।

গুরুতর আহত অবস্থায় ওই যুবককে স্থানীয়রা বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করেন।

এলাকা সূত্রে জানা গেছে, এদিন নিজের মোটর পার্টসের দোকানে ছিলেন ওই যুবক। কয়েক জন দুষ্কৃতী এসে দোকান ঘর থেকে তাঁকে টেনে বার করে মারধর করে। প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ বিজেপি-নেতা কর্মীরা বৃহস্পতিবার বনগাঁ থানার সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে ও অবস্থান শুরু করেন।এদিন পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধস্তাধস্তি হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রবল বৃষ্টিতেও সেদিন চলতে থাকে অবস্থান বিক্ষোভ। সেখানে ছিলেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, দেবদাস মণ্ডল প্রমুখ।ওইদিন পৌনে তিন ঘণ্টা ধরে চলে অবরোধ।অবশেষে পুলিশ প্রতিশ্রুতি দেয় ২৪ ঘন্টার মধ্যে দুষ্কৃতীদেরকে গ্রেফতার করার,প্রতিশ্রুতি মতো সেদিন বিক্ষোভ অবস্থান থামিয়ে ফিরে যায় ক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা৷

ফের শুক্রবার সকালে বনগাঁয় বাটা মোড়ে টানা ১ঘন্টা যশোর রোড অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে লাগাতার বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন কয়েকশো বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা । ঘটনা স্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশের সামনেই ক্ষুব্ধ বিজেপি-নেতা কর্মীরা প্রতিবাদে মুখর হন এদিনও জোড়ালো দাবি তোলেন বনগাঁয় দুষ্কৃতীদের মারে গুরুতর আহত বিজেপি কর্মী সুতনু দেবনাথের ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে৷ এদিনও বৃষ্টির মধ্যেই বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা লাগাতার শ্লোগান দিয়ে সুর চড়ান মধ্যগগনে৷অবশেষে বনগাঁ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অশেষ বিক্রম দোস্তিদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসকে জানান ২ জন দুস্কৃতী গ্রেফতার হয়েছে এবং বাকিদেরকেও খুব শীঘ্রই ধরা হবে তল্লাশি চলছে।

এরপরই ঘটনার মোড় নেয় অন্যদিকে , ফের পুলিশের প্রতিশ্রুতি পেয়ে বিজেপি নেতাদের কথা মতো এদিনও অবস্থান বিক্ষোভ থামিয়ে ক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা ঘরে ফেরার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে ,উঠে যায় অবরোধ, যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে৷ এরই মধ্যে রাখাল দাস সেতুর দিক থেকে তৃণমূলের ও এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল আসাতেই ফের উত্তেজনা ছড়ায়। বিজেপি অভিযোগ করে বলে পুলিশ আগেই জানত এখানে বিজেপির অবস্থান বিক্ষোভ চলছে ,তারই মধ্যে কি ভাবে তৃণমূলের মিছিল কে পুলিশ পাহারায় একই স্থানে প্রবেশ করাল৷দু’পক্ষের মধ্যে চড়ম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়,দু’পক্ষের শ্লোগানে উত্তপ্ত হয় বাটামোড় এলাকা ,যদিও পুলিশ দক্ষতার সাথে দুপক্ষকেই দু’দিকে সড়িয়েদিতে সক্ষম হয়। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে।

বনগাঁর তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ বলেন, “বিজেপি পরিকল্পিত ভাবে বনগাঁয় অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে। স্থানীয় স্তরে দুষ্কৃতীদের বিজেপি নেতৃত্ব মদত দিচ্ছে। এলাকার মানুষ তা প্রতিরোধ করেছে মাত্র। আমাদের বেশ কয়েক জন কর্মীকেও মারধর করেছে। পুলিশ উদ্ধার করতে গেলে তাদের উপরে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। এদিন তৃণমূলের সমর্থকেরা শান্তি মিছিল করছিল, তাঁদের দাবি স্বাস্থ্য কর্মীদের উপরে যারা হামলা করেছে তাঁদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে গোটা ঘটনা জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি।”

বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব কয়েক জন কুখ্যাত সমাজবিরোধী-সহ পনেরো থেকে কুড়ি জনকে পাঠায়। তারা সকাল এগারোটা নাগাদ হামলা করে আমাদের কর্মীর মাথা ফাটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেয়। তাঁকে মেরে ফেলার জন্যই পাঠানো হয়েছিল। আমরা এই ঘটনায় প্রশাসনের কাছে উপযুক্ত তদন্ত দাবি করছি ও অপরাধীদের শাস্তি দাবি করছি।” এদিন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় দু’জন দুষ্কৃতী গ্রেফতার হয়েছে এবং বাকিদের খোঁজ চলছে, এই প্রতিশ্রুতি কে সন্মান জানিয়ে আমাদের কর্মীরা ফিরে যাচ্ছিল কিন্তু পুলিশের মদতে, সেই মুহুর্তে তৃণমূলের মিছিলকে বাটা মোড়ে নিয়ে এসে বনগাঁকে অশান্ত করার প্রচেষ্টার প্রতিবাদ জানাচ্ছি৷

বনগাঁ জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই মারামারির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তারা কোন রাজনৈতিক দলের সেটা নিশ্চিত করে জানায়নি পুলিশ।

বিজেপি নেতা দেবদাস মন্ডল বলেন, সুতনু’র ঘটনার মুল পান্ডা বনগাঁ পুরসভার প্রশাসক শঙ্কর আঢ্য তাঁকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে,নয়তো লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা।

এবিষয়ে পুরসভার প্রশাসক শঙ্কর আঢ্য বলেন, মারপিট করা তৃণমূলের সংস্কৃতি নয়,দুষ্কৃতি পোষা বিজেপির কাজ , মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুরুচী কর মন্তব্য করায় স্থানীয় সাধারন মানুষ ওই হুলো নামক যুবক কে পিটিয়েছে, আগামীদিনে বাজে মন্তব্য যে বা যাঁরা করবে তাঁকেই দিদির প্রিয় মানুষেরা গণপিটুনি দেবে।আমপান ঝড় বা করোনা ভাইরাসের মহামারীতে কোন দিন সাংসদ শান্তনু ঠাকুর কে বনগাঁর মানুষ কাছে পাননি কিন্তু বিজেপির এক দুস্কৃতীর জন্য তিনি এখানেছুটে এসেছেন৷ যারা বলেছে বনগাঁয় আগুন জ্বালাবে,তাঁদেরকে এবং বিধায়ক সহ সাংসদকে বনগাঁর মহিলারা ঝাঁটা পেটা করে ভাড়ানোর জন্য তৈরী আছেন। দেখুন ভিডিও:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here