দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে আজ বুধবার ১৫ টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বৈঠকে ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সে বৈঠকে যে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত নাও থাকতে পারেন সেই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিল নবান্ন। মঙ্গলবার রাতে জানা গিয়েছে, মোদীর বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী তো থাকবেনই না, বরং সেই সময়ে নবান্নে চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক ডেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে কেন মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন না সেই ব্যাখ্যা শাসক দলের নেতারা দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, ওই বৈঠকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে বলার সুযোগ দেওয়া হবে না। বাংলার কন্ঠরোধ করা হচ্ছে। মোদী-শাহ হয়তো ভয় পেয়েছেন। কেবল শ্রোতার ভূমিকায় থেকে কী লাভ! তবে নবান্ন সূত্রে এও জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবর্তে থাকতে পারেন মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা বা স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বা দু’জনেই।

বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু অবশ্য পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, “প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন না শুনে তাঁর দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। তাই লোক দেখাতে এখন হয়তো ডাক্তারদের নিয়ে মিটিং ডাকা হয়েছে। কে জানে হয়তো চিকিৎসকদেরই উনি পরামর্শ দিতে পারেন কী ভাবে কোভিডের চিকিৎসা করতে হবে!”

প্রধানমন্ত্রীর ডাকা আজকের বৈঠকের অ্যাজেন্ডা পরিষ্কার। করোনা সংক্রমণের মোকাবিলায় গোটা দেশে অভিন্ন কী কৌশল নেওয়া হবে তা নিয়ে বিশদে আলোচনা হবে। কারণ, পঞ্চম দফার লকডাউন চলছে। অথচ সংক্রমণের রেখচিত্র এখনও ঊর্ধ্বমুখী। মহারাষ্ট্র, দিল্লির মতো কয়েকটি রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোও সংকটের মধ্যে পড়েছে। এই অবস্থায় কেন্দ্র থেকে কোনও সিদ্ধান্ত না চাপিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী। 

আজকের বৈঠকে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, গুজরাত, তেলেঙ্গানা অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের থাকার কথা। এর মধ্যে পাঁচ মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে তাঁদের বক্তব্য জানানোর সুযোগ পাবেন।

প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের কর্তারা ঘরোয়া আলোচনায় বলেছেন, বাকি মুখ্যমন্ত্রীরা বলার সুযোগ পাবেন না এমন নয়। কিছু সমস্যা সব রাজ্যে একই রকম। পাঁচ জন মুখ্যমন্ত্রী বললেই সেই সব কমন পয়েন্ট বেরিয়ে আসবে। তার অতিরিক্ত কোনও পয়েন্ট থাকলে অন্য মুখ্যমন্ত্রীরা তা যোগ করতেই পারেন।

বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য, এটা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যে বোঝেন না তা নয়। কিন্তু তৃণমূল এটা নিয়েও রাজনীতি করতে চায়। অথচ লক্ষ্য করলে দেখা যাবে বাকি মুখ্যমন্ত্রীরা কিন্তু এই সংকীর্ণ রাজনীতি করছেন না।

তৃণমূলের অবশ্য বক্তব্য, দিল্লি ভয় পাচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি ওদের ভুল ধরে ফেলেন, যদি তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন, যদি ওদের রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাই বাংলার কন্ঠরোধ করার চেষ্টা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা এক ভিডিও কনফারেন্সে বাংলায় কেন্দ্রীয় টিম পাঠানো নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মমতা। এতটাই রেগে গিয়েছিলেন যে, অমিত শাহকে নিশানা করতে গিয়ে টেবিলে রাখা ফাইলের উপরেও চাপড় মেরে দিয়েছিলেন। মমতার ওই রুদ্রমূর্তি দেখে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here