দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দু’দিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতার অংশ বিশেষ টুইট করে তিনি বলেছিলেন, ব্যক্তিগত ভাবে এই মত আমি সমর্থন করি। তখনই সন্দেহ তৈরি হয়েছিল।

শুক্রবার যবনিকা পতন ঘটল। রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দিলেন তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী। এদিন রাজ্যসভায় দীনেশ বলেন, প্রতিটা মানুষের জীবনে একটা সময় আসে। তখন তাঁকে অন্তরাত্মার আওয়াজ শুনতে হয়। আজ আমার জীবনেও এমন প্রহর এসেছে। আমি যখন রেলমন্ত্রী ছিলাম, তখনও আমার জীবনে সেই সময় এসেছিল। সেই সময়েও সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল, দেশ আগে নাকি দল আগে নাকি ব্যক্তি।

এর পরই দিনেশ বলেন, আমি যে রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করি সেই রাজ্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে ক্ষুদিরাম বসুর ঐতিহ্যে ভরা পবিত্র ভূমি। কিন্তু সেখানে যে পরিমাণ হিংসা হচ্ছে তা দেখে আমার মন ভারাক্রান্ত। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। আমি চাইছি এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে।

পাশাপাশিই দীনেশ বলেছেন, ‘‘আমি তৃণমূল ছাড়ছি। তবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।’’ জল্পনা, অতঃপর বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন দীনেশ। একদা বিশ্বনাথপ্রতাপ সিংহের ঘনিষ্ঠ এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলে নিয়ে এসেছিলেন।

এ কথা বলেই রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা বলেন দীনেশ ত্রিবেদী। যদিও রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বলেন, এ ভাবে ইস্তফা দেওয়া যায় না। প্রথা মেনে তাঁকে ইস্তফা পত্র পেশ করতে হবে।
এদিন দীনেশের ইস্তফা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, লোকসভার প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, উনি যে অসন্তুষ্ট ছিলেন সে কথা জানতাম। কিন্তু ইস্তফা দেবেন ভাবতে পারিনি। মনটা খারাপ হয়ে গেল।

সৌগতবাবু জানান, গত রবিবার তিনি দীনেশের সঙ্গে এক সাথে বিমানে দিল্লি গিয়েছিলেন। সেদিনও দীনেশের সঙ্গে তাঁর কিছু কথা হয়েছিল। কিন্তু আন্দাজ করতে পারেননি ব্যাপারটা এরকম জায়গায় যাবে।

দীনেশের সঙ্গে দলের দূরত্ব আগেও বার বার তৈরি হয়েছে। অতীতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর দীনেশকে রেলমন্ত্রী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রথম রেল বাজেটেই ঢালাও সংস্কারের কথা ঘোষণা করেছিলেন দীনেশ। পপুলিজমের কথা সেই বাজেটে ছিল না। ফলে বাজেট পেশ করার কদিনের মধ্যেই মমতার নির্দেশে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি।

২০১৬ সালে ভোটের পরেও তৃণমূলের থেকে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল দীনেশের। এক প্রকার দলে একঘরে ছিলেন তিনি। পরে সেই দূরত্ব কমতে শুরু করে।

কিন্তু এ বার হেস্তনেস্ত করেই ফেললেন দীনেশ। দলের রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকেই ইস্তফা দিলেন। দীনেশের তৃণমূল ত্যাগ এখন সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে।

ঘটনাচক্রে, দীনেশ নিজে ভাল সেতার বাজান। নিয়মিতই বাজান। সেই কথা উল্লেখ করে তাঁর এক প্রাক্তন সতীর্থ বলেছেন, ‘‘দীনেশ’দা আলাপের পর বিস্তারে গিয়েছেন। এর পর ঝালায় উঠবেন।’’ অস্যার্থ, বিজেপি-তে যাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here