দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে। সেই কারণে চিকিৎসকরা বলছেন, এই ধরনের ভাইরাস থেকে বাঁচতে যতটা সম্ভব জন সমাবেশ এড়িয়ে চলা উচিত। আর চিকিৎসকদের এই পরামর্শ মাথায় রেখেই এবার নিজে দোল না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

তাঁরা শুধু নিজেরা দোল খেলবেন না বলে জানাননি। সেই সঙ্গে দেশবাসীকেও সতর্ক থাকতে বলেছেন। সরাসরি দোল খেলতে বারণ না করলেও বলেছেন, সকলের উচিত নিজের ও পরিবারের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রাখা। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দোল খেলা নিয়ে এমন সতর্কতার পরে সাধারণ মানুষের মধ্যেও বাড়ছে আতঙ্ক।

জেনে রাখা দরকার কেন এই মারণ ভাইরাসের ভয়ে জন সমাগম এড়িয়ে চলা উচিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর কতটা কাছে যাওয়া হচ্ছে তার উপরে নির্ভর করে ভাইরাস ছড়াবে কিনা। করোনার সংক্রমণ পজিটিভ এমন রোগীর মুখের খুব কাছে গেলে, বা তার চোখ-মুখ স্পর্শ করলে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যায়। কোনওভাবে যদি রোগীর থুতু বা লালা শরীরে প্রবেশ করে তাহলে এর প্রভাব হতে পারে মারাত্মক। সুতরাং, চুমু খাওয়া বা যৌন সংসর্গ লিপ্ত হওয়ার আগে সতর্ক থাকা দরকার।

কর্নেল ইউনিভার্সিটি কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের অধ্যাপক গ্যারি হুইট্টেকার বলেছেন, এই ভাইরাসের আকার মানুষের চুলের ৯০০ ভাগের একভাগ মাত্র। এই ভাইরাস নিজে থেকে চলাফেরাও করতে পারে না। মানুষের শরীরে বাসা বাঁধতে হলে এর একমাত্র পথ কোনও কিছুর মাধ্যমে বাহিত হয়েযাওয়া। সেটা শ্বাস-প্রশ্বাস হতে পারে, অথবা থুতু-লালার মধ্যে করে এটি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে পারে, একেই বলা হচ্ছে ‘ভাইরাল ড্রপলেট’।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কারও সঙ্গে হাত মেলালেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে। হয়ত সেই রোগী মুখে, নাকে হাত দিয়েছেন, তারপরে সেই হাত মিলিয়েছেন অন্য কারও সঙ্গে। তাহলেও ভাইরাল ড্রপলেট ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে আক্রান্ত রোগীর ধারেকাছে গেলে খুব ভাল করে হাত-মুখ ধুয়ে নেওয়া উচিত। আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে একসঙ্গে বসে খাওয়াও মারাত্মক। ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব লেইসেস্টারের ভাইরোলজিস্ট জুলিয়ান ট্যাঙ বলেছেন, আক্রান্ত রোগীর ফেলে যাওয়া খাবারের গন্ধ শুঁকলেও ভাইরাস ছড়াতে পারে। কারণ শ্বাসের মাধ্যমে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে শরীরে।

ছোঁয়াচে করোনাভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচতে ক’দিন আগেই গালে গাল ঠেকিয়ে চুম্বন এড়াতে পরামর্শ দিয়েছেন সুইৎজারল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আলিয়ান বারসেট। একই রকম পরামর্শ দিয়েছেন ফরাসি স্বাস্থ্যমন্ত্রীও।

এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী পরোক্ষে দোল খেলা থেকে বিরত থাকতে বললেন। জানিয়ে দিয়েছেন তিনি নিজে হোলি মিলনে যাবেন না। অন্যদেরও এই ধরনের মিলন এড়িয়ে চলা উচিত।
এটা ঠিক যে ভারতে যে ভাবে দোল বা হোলি খেলা হয় তাতে অনেক মানুষ অনেকের সংস্পর্শে আসেন। শারীরিক স্পর্ষ ছাড়া রং খেলা যায় না। তাই এখনই আতঙ্কিত না হয়ে এবারের দোল নিয়ে সতর্ক থাকাই উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here