দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দিল্লির বাতাস ঢেকে গেছে বিষ-বাষ্পে। প্রতি শ্বাসের সঙ্গে ঢুকছে বিষাক্ত বায়ু। বাতাসের গুণগত মান বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বিপদসীমা ছাড়িয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে দুদিনের লকডাউন ঘোষণা করার পরামর্শ দিল সুপ্রিম কোর্ট।

দিল্লিতে দূষণ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানার বেঞ্চ কেন্দ্রকে জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে হবে। বাতাসের গুণমানের উন্নতি না হলে এবং দূষণ বাড়তে থাকলে অন্তত দুদিনের লকডাউনের পথে যেতে হবে সরকারকে।

প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা বলেন, দিল্লিতে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণে আনার কী ব্য়বস্থা নিচ্ছে সরকার জানতে চান তিনি। রামানার বক্তব্য, আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্য়ে দূষণ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে দুদিনের লকডাউন করা যেতে পারে। দূষণ সীমা আরও বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেলে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে।

বিশ্বের বায়ুদূষিত মহানগরীগুলির মধ্যে সেরার শিরোপা জিতেছে দিল্লি। দূষণের বিপজ্জনক স্তরও পার করে ফেলেছে। সুপ্রিম কোর্ট ও দিল্লি সরকারের নির্দেশ, কড়া নজরদারি উপেক্ষা করেই বেলাগাম বাজি পুড়েছে রাজধানীর অলিতে গলিতে। তারই ফল, মারাত্মক ঘন ধোঁয়াশা যা ঘিরে আষ্টেপৃষ্ঠে ঘিরে ফেলেছে দিল্লিকে। বাতাসে ভাসমান বিষাক্ত কণার পরিমাণ সাঙ্ঘাতিক বেশি। প্রতি শ্বাসেই বিষ-বাষ্প ঢুকছে শরীরে। প্রতিদিনই বাতাসের গুণগত মান খারাপের দিকে যাচ্ছে।  ‘সিস্টেম অব এয়ার কোয়ালিটি ওয়েদার ফোরকাস্টিং রিসার্চ’ -এর সমীক্ষা বলছে, শনিবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিট অবধি বাতাসের গুণগত মান (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) ছিল ৪৯৯। গতকাল এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ছিল ৪৭১। পরিবেশবিদরা বলছেন, বাজি ও যানবাহনের ধোঁয়া ছাড়াও দিল্লি ও জাতীয় রাজধানী এলাকায় দূষণের অন্যতম বড় কারণ হল খড়পোড়া ধোঁয়া।

রাজধানীর বায়ুদূষণের পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে পড়শি রাজ্য পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের খড়পোড়া ধোঁয়াকেও দায়ী করা হচ্ছে। পরিবেশবিদরা বলছেন, লাগোয়া পঞ্জাব, হরিয়ানা থেকে ওই ধোঁয়া এসে জমছে দিল্লির আকাশে।  দিল্লি-সহ নয়ডা, গ্রেটার নয়ডা, গাজিয়াবাদ, গুরুগ্রামের আকাশ ভরে গেছে ওই খড় পোড়া ধোঁয়াতে। এই ধোঁয়ার সঙ্গেই যানবাহনের ধোঁয়া, নির্মাণ সংস্থাগুলির বিষাক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড মিলে গিয়ে ঘন ধোঁয়াশা তৈরি করছে। বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ স্বাভাবিকের থেকে অন্তত আড়াই গুণ বেশি। শীতে বাতাসে ভাসমান এই কণার পরিমাণই চার গুণ ছাড়িয়ে যাবে। এর ওপর বাজির ধোঁয়ায় পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটাই চিন্তার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here