দেশের সময় ওয়েব ডেস্ক: তৃণমূলের যে এক ব্যক্তি এক পদ চালু হতে চলেছে তা আগেই লিখেহয়েছিল দেশের সময়-এ ।প্রায় এক ডজনের বেশি জেলা সভাপতিকে সরিয়ে দিয়ে তাঁদের জায়গায় নতুন মুখ আনবেন দিদি এ কথাও ছিল লেখা। এদিন হলও তাই।

সোমবার তৃণমূল সাংগঠনিক রদবদলের যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত জেলায় জেলায় সভাপতি বদল করেছে কালীঘাট। বাদ পড়েছেন বহু বড় নেতাও।

‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি কার্যকর হয়ে গেল এর মধ্যে দিয়েই। তার ভিত্তিতেই রদবদল শুরু হয়েছে সংগঠনে। প্রসঙ্গত, তৃণমূল ভবনে গত ৫ জুনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল দলে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি কার্যকর করা হবে।এদিন দলের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কথা ঘোষণা করা হল। একাধিক জেলাকে ভাঙা হয়েছে। যেমন, উত্তর ২৪ পরগনাকে চার ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা দুই ভাগে, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর দুই ভাগে হুগলি ও বাঁকুড়া দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। কোন বিধানসভা কোন সাংগঠনিক জেলার মধ্যে তাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনার মতো জেলাগুলিতে সভাপতি বদল করা হয়েছে। 

উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। তাঁর জায়গায় জেলা সভাপতি করা হয়েছে নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিককে। একাধিক জেলাকে সাংগঠনিক ভাগে ভাগও করেছে তৃণমূল।

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনাকে দুটি সাংগঠনিক জেলা করা হয়েছে। একটি ডায়মন্ড হারবার-যাদবপুর ও অন্যটি সুন্দরবন। যাদবপুর-ডায়মন্ড হারবারের সভাপতি রয়েছেন শুভাশিস চক্রবর্তীই। সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যোগরঞ্জন হালদারকে।

নদিয়া উত্তর ও দক্ষিণ দুটি সাংগঠনিক জেলাতেই সভাপতি পদে নতুন মুখ এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নদিয়া উত্তরে সভাপতি করা হয়েছে জয়ন্ত সাহাকে। দক্ষিণে মহিলা মুখ এনেছেন দিদি। সেখানে জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী রত্না ঘোষ করকে। হুগলিতেও খোলনলচে বদলেছে তৃণমূল। দুটি সাংগঠনিক জেলা করা হয়েছে হুগলিকেও। একটির নাম শ্রীরামপুর-হুগলি অন্যটি আরামবাগ। আগে হুগলির সভাপতি ছিলেন দিলীপ যাদব। তাঁকে কার্যত ছেঁটে ফেলল কালীঘাট। শ্রীরামপুর-হুগলি জেলা সাংগঠনিক কমিটির সভাপতি করা হয়েছে জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে। আরামবাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রমেন্দু সিনহা রায়কে।

কলকাতা উত্তরের জেলা সভাপতি করা হয়েছে তাপস রায়কে। দক্ষিণের সংগঠন সামলাবেন রাসবিহারীর বিধায়ক দেবাশিস কুমার। মালদহ জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম বেনজির নুরকে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আবদুর রহিম বক্সি। হাওড়া শহর ও গ্রামীণ—দুই জেলাতেই সভাপতি বদল করেছেন দিদি। গ্রামীণের সভাপতি বদল অনিবার্যই ছিল। কারণ পুলক রায় মন্ত্রী হয়েছেন। তাঁর জায়গায় জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অরুণাভ সেনকে। শহর জেলার সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ভাস্কর ভট্টাচার্যকে। তাঁর জায়গায় হাওড়া শরের নতুন তৃণমূল সভাপতি হলেন ডোমজুড়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করা কল্যাণেন্দু ঘোষ। জলপাইগুড়িতেও জেলা সভাপতি পদে মহিলা মুখ এনেছেন মমতা। কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর জায়গায় এসেছেন মহুয়া গোপ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here