দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ একা ছিলেন বৃদ্ধা গৃহকর্ত্রী, তার উপরে ফাঁকা বাড়ি ,সেই মওকা বুঝে রাতেই হানা দিয়েছিল চোর। চোরবাবাজির ভারী মজা, একা বৃদ্ধা আর কী বা করবেন!‌ সহজেই চালানো যাবে লুঠপাট! কিন্তু ঘটল সম্পূর্ণ উল্টোটা। ঘরে ঢুকে চুরির জিনিসপত্র গুছিয়েও নিয়েছিল।

কিন্তু হঠাৎই বিপত্তি,বৃদ্ধার ঘুম ভেঙে য়ায়। বৃদ্ধা চিনে ফেলেছিলেন পড়শি ছিঁচকে চোরকে। বৃদ্ধার চিৎকার শুনে পাড়া–পড়শি জেগে ওঠে,ভয়ে চোর তখন ঝাঁপিয়ে পড়ল বৃদ্ধার ওপর। বৃদ্ধাকে ব্যাপক মারধর করতে শুরু করে চোর। মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলারও চেষ্টা করে। কিন্তু বেচারা চোর বুঝতেও পারেনি বালিশ চাপা দিতে গিয়ে কখন তার একটি আঙুল ঢুকে গিয়েছিল বৃদ্ধার মুখে।

ব্যস, সেটাকেই দাঁত দিয়ে সজোড়ে চেপে ধরলেন বৃদ্ধা। মরণ ব বাঁচন লড়াই শুরু হয় চোরের সাথে। এভাবে প্রায় ১৫ মিনিটের লড়াই শেষে চুরির সমস্ত মালপত্র নিয়ে চোর জীবন নিয়ে পালাতে সক্ষম হলেও তার হাতের আঙুলটি থেকে যায় বৃদ্ধার মুখেই।

সোমবার রাতের এই ঘটনায় কোলাঘাট থানার শান্তিপুরের বাসিন্দা ৬৫ বছরের বৃদ্ধা সালেহা বিবির উপস্থিত বুদ্ধি আর সাহসিকতার প্রশংসা ঘুরছে পঞ্চমুখে।

দুই ছেলে আর এক বৌমা নিয়ে সংসার সালেহা বিবির। দুই ছেলেই কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। বাড়িতে থাকতেন শাশুড়ি–বৌমা। সোমবার বিকেলে বাপের বাড়িতে যান সালেহা বিবির পুত্রবধূ। বাড়িতে একাই ছিলেন বৃদ্ধা। সেই সুযোগের অপেক্ষায় ছিল প্রতিবেশী যুবক শেখ নাসিফ।

গভীর রাতে গ্রিলের তালা কেটে বাড়িতে চুরি করতে ঢুকেছিল সে। নিঃশব্দে আলমারি ভেঙে নগদ টাকা ও বেশ কিছু গয়না হাতিয়ে নেয় সে। হঠাৎই ঘুম ভেঙে যায় বৃদ্ধার। চোরের মারধর, বালিশ চাপা দেওয়ার ঘটনায় অসুস্থ ও আহত বৃদ্ধা সালেহা বিবি তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, ‘‌গ্রিলের তালা কেটে এবং দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকেছিল চোর।

আলমারি থেকে নগদ টাকা ও গয়না নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল সে। বাধা দেওয়ায় আমাকে বালিশ চাপা দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল। আমি কামড়ে তার আঙুল কেটে নিই। চোরকে আমি চিনি। ওর কঠিন শাস্তি হোক।’‌ ঘটনার পর থেকেই পলাতক ওই চোরের বাড়িতে চড়াও হন গ্রামবাসীরা।

যদিও তার স্ত্রীকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে কোলাঘাট থানায়। তমলুকের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শিবপ্রসাদ পাত্র বলেন, ‘‌তদন্ত শুরু হয়েছে ঘটনার। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’‌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here