দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দেশ জুড়ে লকডাউনের পঞ্চম পর্যায় শুরু হয়েছে । কেন্দ্রের তরফে এই পর্যায়কে অনলক ফেজ ১ নাম দেওয়া হয়েছে। এই পর্যায়ের শুরুতেই সোমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানালেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর। চাষিদের সুবিধার জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এছাড়া কৃষিঋণে বাড়তি ছাড় দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছে কেন্দ্র।

এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে নরেন্দ্র সিং তোমর বলেন, এই সরকার বরাবর চাষিদের সুবিধার দিকে নজর দিয়েছে। লকডাউনের পরেও তাতে কোনও বদল হয়নি। চাষিরা যাতে তাঁদের পরিশ্রমের মূল্য পান, সেদিকে নজর রয়েছে সরকারের। আর তাই কৃষিতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানো হচ্ছে। মন্ত্রিসভা এই ব্যাপারে অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে। এর ফলে ১৪টি ফসলে ৫০ শতাংশ থেকে ৮৩ শতাংশ পর্যন্ত বেশি লাভ পাবেন চাষিরা।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ফসল উৎপাদনের জন্য চাষিদের যা যা খরচ হয়, অর্থাৎ বীজ, সার, কীটনাশকের দাম, ট্রাক্টরের খরচ, ফসল বোনা ও কাটার সময় মজুরের যোগান, সবকিছুকে তাঁদের খরচের মধ্যে হিসেব করা হয়েছে। সেই খরচ হিসেব করেই এই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই সরকার চাষিদের কাছ থেকে ফসল কেনা শুরু করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে তিনি। ৩৬০ লক্ষ মেট্রিক টন গম, ৯৫ লক্ষ মেট্রিক টন ধান এবং ১৬.০৭ লক্ষ মেট্রিক টন ডাল ও তিল ইতিমধ্যেই কেনা হয়ে গিয়েছে। গতবারের থেকে এই পরিমাণ বেশি বলেই জানিয়েছেন নরেন্দ্র সিং তোমর।

চাষিদের থেকে উৎপাদিত ফসল যে দামে সরকার কেনে তাকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বলা হয়। সরকারের এই নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ধানের ক্ষেত্রে কুইন্টাল প্রতি ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ১৮৬৮ টাকা হচ্ছে। জোয়ারের ক্ষেত্রে কুইন্টাল প্রতি ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ২৬২০ টাকা। বাজরার ক্ষেত্রে এই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য সবথেকে বেশি বাড়ানো হয়েছে। ৮৩ শতাংশ বাড়িয়ে কুইন্টাল প্রতি হচ্ছে ২১৫০ টাকা। একই ভাবে রাগির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ, অড়হড়ের ক্ষেত্রে ৫৮ শতাংশ, মুগের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ, উরদের ক্ষেত্রে ৬৪ শতাংশ, সূর্যমুখির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ, সোয়াবিন, তিল ও কার্পাসের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ করে বাড়ানো হয়েছে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য।

এছাড়াও এদিন আরও একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। ছাড় দেওয়া হয়েছে কৃষিঋণে। নরেন্দ্র তোমর বলেন, ব্যাঙ্ক থেকে কৃষিঋণ নেওয়ার সময় সাধারণত ৯ শতাংশ সুদ দিতে হয়। কিন্তু কেন্দ্র সেখানে ২ শতাংশ ভর্তুকি দেয়। ফলে এতদিন চাষিদের ৭ শতাংশ সুদ দিতে হত। কিন্তু এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কোনও চাষি যদি নির্ধারিত সময়ে টাকা ব্যাঙ্কে শোধ করতে পারেন, তাহলে তাঁকে আরও ৩ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। অর্থাৎ সময়ের মধ্যে ঋণ শোধ করতে পারলে মাত্র ৪ শতাংশ সুদ দিলেই চলবে চাষিকে। এই সিদ্ধান্তের ফলে কয়েক কোটি চাষি উপকৃত হবেন বলেই জানিয়েছেন মন্ত্রী।

চাষিদের এই ভর্তুকি দিতে গিয়ে কেন্দ্রের ২৮ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কিন্তু তারপরেও চাষিদের কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই জানিয়েছেন তিনি। এর ফলে চাষিরা আরও পরিশ্রম করে ফসল ফলাবেন বলেই আশা মন্ত্রীর।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here