দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ একুশে জুলাইয়ের এক দিন পরে সংগঠনে জোর ঝাঁকুনি দিয়েছিলেন দিদি। হাফ ডজনের বেশি জেলা সভাপতি বদল, জঙ্গলমহলের ছত্রধর মাহাতো, বহিষ্কৃত সিপিএম নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়দের রাজ্য কমিটিতে নেওয়ার পর মঙ্গলবার দলের মুখপাত্রদের তালিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল। তার মধ্যে অন্যতম বড় চমক প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ তথা সারদা কাণ্ডে জামিনে থাকা কুণাল ঘোষের নাম।

২০১৩ সালের ২৩ নভেম্বর কুণালকে গ্রেফতার করেছিল বিধাননগর পুলিশ। তারপরই কুণালকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল। যদিও কুণালবাবু বলেন, তাঁকে সাসপেন্ড করার বিষয়টি তিনি সংবাদমাধ্যম থেকেই জেনেছিলেন। তাঁর হাতে কোনও চিঠি পৌঁছয়নি। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের জুলাই মাসেই দলের মুখপাত্র পদ থেকে কুণালকে সরিয়েছিল তৃণমূল। সাত বছর পর ২০২০ সালের জুলাইতেই ফের তাঁকে মুখপাত্রের দায়িত্ব দিল দল।

জেলে থাকার সময়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সব মন্তব্য করতেন কুণাল। তাঁর কোর্টে ওঠার দিন মানেই পুলিশকে প্রিজন ভ্যানের টিন বাজিয়ে কথা চাপা দিতে হত। সেই কুণাল জামিন পাওয়ার পর থেকে দলের সঙ্গে সখ্য রেখেই চলেছেন। গত বছর একুশে জুলাইয়ের মঞ্চেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এবার তাঁকে রাজ্য স্তরের মুখপাত্রের দায়িত্ব দিল দল। এর অর্থ, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা, বিতর্ক প্যানেলে অংশ নেওয়ায় এবার দেখা যাবে প্রাক্তন সাংসদকে।

যদিও পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, এটা আসলে ভোটের আগে দিদির লোক ধরে রাখার কৌশল। যে ভাবে জেলা সভাপতিদের সরিয়েও সরাননি তিনি। নাম-কে ওয়াস্তে চেয়ারম্যান পদ তৈরি করে একটা চেয়ার দিয়ে রেখেছেন। সে ভাবেই একুশের আগে কাউকে মনক্ষুন্ন করতে চাইছে না কালীঘাট।

রাজ্য স্তরে ১২ জন মুখপাত্রের তালিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল। তাতে বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেই রয়েছে কুণাল ঘোষের নাম। ওই তালিকায় রয়েছেন বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী নুসরত জাহান, প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা তথা তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সদস্য ওমপ্রকাশ মিশ্র, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরাও। 

নির্বেদ রায়ের মত বর্ষীয়ান রাজনীতিক থেকে দেবাংশু ভট্টাচার্যের মতো তরুণ মুখও রয়েছে ওই তালিকায়। অনেকের মতে, মুখপাত্রের তালিকাতেও প্রবীণ ও নবীনদের মধ্যে একটা ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করেছে তৃণমূল।

সর্বভারতীয় স্তরেও ২২ জন মুখপত্রের তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলার শাসকদল। তাতে রয়েছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, দীনেশ ত্রিবেদী, সৌগত রায়। তাৎপর্যপূর্ণ হল, যাদবপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা নেতাজির পরিবারের সুগত বসুকেও জাতীয় স্তরের মুখপাত্র করা হয়েছে।

যদিও বিরোধীরা বলছেন, যত কুণাল, নুসরতরা সংবাদমাধ্যমে বাইট দেবেন তত রাজ্যের মানুষ উপলব্ধি করবেন কারা শাসকদলের নেতা আর কাদের সাংসদ বানিয়ে দিল্লি পাঠিয়েছি। একুশে আরও ভোট কমবে তৃণমূলের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here