দেশের সময় : -এ রাজ্যে রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের যে দ্বন্দ্বের যে নতুন সমীকরণ শুরু হয়েছে তাতে অনেকেই মনে করছেন রাজ্যপালই এ রাজ্যে বিজেপির নতুন তাস হিসেবে কাজ করতে শুরু করেছেন।এ রাজ্যের রাজ্যপাল হয়ে আসার আগে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় যে বিজেপির দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সে বিষয়ে সবাই এখন অবগত।

এ রাজ্যে তাঁকে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে পাঠানো হয়েছে বলেই বিশেষ সূত্রের খবর।তবে একই সঙ্গে তিনি যথেষ্ট বুদ্ধিও ধরেন।এমন করে গোটা বিষয়টা সামনে আনছেন যাতে সাধারণ মানুষও তাঁর প্রতি আস্থা রাখতে পারে।সাধারণ মানুষের কাছে যোগ্য সাংবিধানিক প্রধান হয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে তিনি চাইছেন রাজ্য সরকারের উপর চাপ তৈরি করতে।

সূত্রের খবর বিজেপির একান্ত কৌশলই হল এ রাজ্যে রাজ্য সরকারের নানা প্রশাসনিক দূর্বলতাকে রাজ্যপালের মাধ্যমে সকলের সামনে উম্মোচিত করা।সেই লক্ষ্যে বর্তমান রাজ্যপাল কিন্তু কিছুটা সফলও।যেভাবে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে বিক্ষোভরত ছাত্রদের হাত থেকে উদ্ধার করেছেন এবং রাজ্য পুলিশের অপদার্থতাকে সামনে আনতে চেয়েছেন ,তাতে যে বিজেপির একটা গোপন এজেন্ডা আছে তা পরিষ্কার।

অন্য দিতে বিজয়ার দিনই মুর্শিদাবাদে জিয়াগঞ্জে একই পরিবারের তিনজন মানুষের খুনের ঘটনা নিয়ে যে ভাবে রাজ্যপাল সরকারের সমালোচনা করেছেন তাতে যে তিনি এ রাজ্যের অনেক মানুষের মনের কথা বলে দিয়েছেন তাও পরিষ্কার।রাজ্য সরকার তাঁর বিরুদ্ধে যতোই রাজনীতি করার অভিযোগ আনুক না কেন তিনি যে আসলে নিরপেক্ষ ভাবে তাঁর দায়িত্ব পালন করতে চান সেটা সকলের কাছে পরিষ্কার করার কৌশল নিয়েছেন রাজ্যপাল।

রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের সংঘাতে সাধারণ মানুষ চায় রাজ্যপালের পক্ষে থাকতে।কারণ আপাতভাবে রাজ্যপাল একজন রাজনীতিহীন ব্যক্তিত্ব হওয়াতে মানুষের মনে হয় তিনি রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে বলছেন বলেই রাজনীতির লোকেরা তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলছে।এমনিতেই এদেশের রাজনীতিকদের লোকে বিশ্বাস করে না।

নানা দূর্নীতির অভিযোগ বর্তমান রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও আছে তাই সেই সব অভিযোগগুলো একজন সাংবিধানিক প্রধান যদি সামংনে নিয়ে আসেন তবে মানুষের কাছে তা গ্রহণ যোগ্য হয়ে উঠতে পারে।সেই কৌশলেই রাজ্যপালকে ব্যবহার করতে চাইছে বিজেপি।রাজনীতির মুখোশের আড়ালে রাজ্যপালকে দিয়ে রাজ্য সরকারকে চাপে রাখার কৌশল নিতে চলেছে বিজেপি।

রাজ্যপালও এমনভাবে কার্য়কলাপ করছেন যেন মনে হচ্ছে তিনি নৈতিকতা ও আদর্শের কথা বলতে চাইছেন। বার বার তিনি রাজনীতির বাইরে মানবিকতা ও সততার কথা বলছেন।এমনকী রাজ্যপাল এ রাজ্যের সংবাদ মাধ্যমকেও সরকারের ভয়ে ভীত না হয়ে সত্য খবর তুলে ধরার আহ্বান রাখছেন।এমনিতে মনে হবে তিনি সঠিক কথাই বলছেন অথচ কেন্দ্রীয় স্তরে যে সংবাদ মাধ্যমে লাগাতার বিজেপিমুখি প্রচার হচ্ছে তা নিয়ে তিনি নীরব।

বোঝাই যাচ্ছে নির্দিষ্ট কৌশলেই এ রাজ্যের রাজ্যপাল সরকারের উপর চাপ তৈরি করতে প্রয়াসি হচ্ছেন।বুদ্ধি ধরেন তিনি তাই রবীন্দ্রনাথ থেকে বিকেকান্দ সবাইকে কোর্ট করে রাজ্যের বর্তমান সরকারের নানা কার্যকলাপ নিয়ে সাধারণ মানু,কে বিরুপ করতে চাইছেন।নির্দিষ্ট একটা এজেন্ডা নিয়েই কাজ করছে রাজ্যপাল, সরকার সেই ফাঁদে পা দিলে তাদের বিপদ বাড়বে।

তবে ফাঁদে পা রাজ্য সরকার দিয়ে দিয়েছে তা পরিষ্কার।এ রাজ্যে বিজেপির রাজনৈতিক কৌশলের নতুন তাস রাজ্যপালই।গোপালকৃষ্ন গান্ধীও সরকারের বিরোধিতা করেছিলেন তবে তিনি করেছিলেন নৈতিকতার দায়থেকে আর বর্তমান রাজ্যপাল করছেন রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে বিজেপির তাস হয়ে,ফারাক শুধু এটুকুই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here