দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কলাইকুণ্ডার সভা থেকে ফের হামলার তত্ত্ব তৃণমূল সু্প্রিমোর মুখে। জনসভা থেকে তিনি বলেন, ‘আমার পা উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।’ একইসঙ্গে পায়ে এত আঘাত নিয়েও জনপ্রচারে অংশ নেওয়ার কারণ হিসেবে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম আর বেরতে পারব না। তারপর ভাবলাম আমি না বেরলে বাংলা দখল করে নেবে বিজেপি। তাই পায়ে ব্যথা নিয়েই মা-বোনেদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। ‘

নবান্নে মসনদ অটুট রাখতে জঙ্গলমহলের অঙ্ক খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই পদ্ম থেকে জোড়াফুল, ফোকাস এখন জঙ্গলমহলেই। একদিকে যখন পুরুলিয়ায় প্রচার চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তো অন্যদিকে, ম্যারাথন তিন সভা গড়বেতা, কেশিয়ারি ও কলাইকুণ্ডা থেকে আক্রমণ শানালেন নেত্রী।

কলাইকুন্ডার সভা থেকে পায়ে আঘাত লাগার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘আঘাত এর আগেও হয়েছে। আমার মাথায় ৪৬টা সেলাই পড়েছে। চোখে অপারেশন হয়েছে কারণ আমাকে গুলি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কোমরে লাঠির বাড়ি মেরেছিল এখনও বেল্ট পড়তে হয়। দু’হাত ভেঙে দিয়েছিল এর আগে। পা-টা বাকি ছিল। এখন সেটাও গুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল।’

কফি হাউসের অশান্তির প্রসঙ্গও এদিন শোনা যায় তৃণমূল সুপ্রিমোর মুখে। কটাক্ষের সুরে নেত্রী বলেন,’ দুঃসহ গরমের থেকেও অসহ্য বিজেপির অত্যাচার। মান্না দে যে কফিহাউস নিয়ে গান গেয়েছেন, সেই কফিহাউসও দখল করতে পৌঁছে গিয়েছে গুন্ডাগুলো।’ ভোট লুঠের পরিকল্পনা করেছে বিজেপি।

এদিন কফি হাউসের কথা বলতে গিয়ে মমতা এও বলেন, “জানে ওখানে কারা যেত? জানে ওখানে কারা যায়? আমরাও ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় কফি হাউসকে দূর থেকে প্রণাম জানিয়েছি।”


যদিও সোমবারের ঘটনা নিয়ে বিজেপির পাল্টা দাবি রয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, তাঁদের কর্মীরা কফিহাউসে গেছিলেন পোস্টার সাঁটতে। কিন্তু তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। তাঁদের প্রশ্ন, যদি বিরোধীরা পোস্টার লাগাতে পারে, তবে তারা কেন পারবে না। অভিযোগ, বাধা পাওয়ার পরেই তাঁরা স্লোগান তোলেন এবং প্রতিবাদ জানান।

এদিন আরও অভিযোগ করে মমতা বলেন, ‘ওরা ভোট লুঠের চেষ্টা করলে হাতা-খুন্তি নিয়ে তেড়ে যান। ভোটের দিন মেশিন খারাপ করে বাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দিতে চাইবে। ওই সময় কারোর দেওয়া চা-বিস্কুট, কিছু খাবেন না। কিছু মিশিয়ে খাইয়ে দিতে পারে।’

তৃণমূলের সরকারের কাজের খতিয়ানও জঙ্গলমহলের সামনে তুলে ধরেন নেত্রী। বলেন, ‘যারা বলে বাংলায় কিছু হয়নি, তাদের বলি ৪০ শতাংশ দারিদ্র্য কমিয়েছি। ৩০০ ট্রেন ভাড়া করে শ্রমিকদের ফিরিয়ে এনেছি। আমরা ধ্বংসের বদলে ধ্বংস চাই না।’ বুধবারই নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করে ক্ষমতায় এলে সরকারে রূপরেখা কেমন হবে সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। করেছেন একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতিও।

এদিন মঞ্চ থেকে আরও একবার তিনি বলেন, ‘ ক্ষমতায় এলে কৃষকবন্ধু প্রকল্পে বছরে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। দ্বাদশ শ্রেণীতে উঠলে মিলবে ১০ হাজার টাকা নইলে ট্যাব। নবমে বিনামূল্যে সাইকেল। এছাড়া হবে ৫ লাখ কর্মসংস্থান। প্রত্যেক পরিবারকে বছরে দেওয়া হবে ৬০০০ টাকা অর্থ সাহায্য’। হুইলচেয়ারে বসেই ভাষণ দিতে দিতে নেত্রীর গলায় ফুটে ওঠে জখম পায়ের যন্ত্রণাও। বলেন, ‘পায়ে এত বড় আঘাত পেয়েছি। তবু আপনাদের সঙ্গে জনসংযোগে এখানে ছুটে আসছি।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here