দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ অপেক্ষার অবসান। আট মাস পর, কাল বুধবার থেকে রাজ্যে শুরু হচ্ছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করে, কোভিড সতর্কতা রক্ষা করে লোকাল চালানো রাজ্য সরকার এবং রেল-দুইয়ের কাছেই চ্যালেঞ্জের। স্টেশনে স্টেশনে শুরু চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এরমধ্যেই সোমবার ফের রাজ্য সরকারকে একটি চিঠি দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর তাতে মূলত ১০টি পয়েন্টের কথা বলা হয়েছে রেলের তরফে।

জানা গিয়েছে রাজ্যকে রেলের তরফে বলা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলির জন্য একজন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হোক। যদি কোথাও যাত্রী বিক্ষোভ ও অবরোধ হয় তা যাতে সাথে সাথে সরানো যায় সেই বন্দোবস্ত যেন রাজ্য পুলিশ করে। স্টেশনগুলিতে যাতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকে এ ব্যাপারে রেল ও রাজ্য যৌথ ভাবে কাজ করবে। স্বাস্থ্য বিধি সংক্রান্ত আরও বেশ কিছু পরামর্শ রেলের তরফে দেওয়া হয়েছে।


মার্চ মাসের ২৩ তারিখ থেকে করোনা সংক্রমণের জেরে বন্ধ হয়েছিল লোকাল ট্রেন পরিষেবা। সম্প্রতি আস্তে আস্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে শুরু হয় আনলক পর্ব। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে যান চলাচল। এ রাজ্যেও বাস, মেট্রো, দূরপাল্লার কিছু স্পেশ্যাল ট্রেন চালু হয়ে গেলেও, বন্ধ থাকে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। এ নিয়ে কোনও কোনও মহলে অসন্তোষও শুরু হয়। কারণ লোকাল ট্রেন না চলায় বহু মানুষের কর্মক্ষেত্রে যাতায়াত সমস্যার মুখে পড়ে। ট্রেনে হকারি করে যাঁদের দিন চলত, তাঁরা কার্যত রোজগারহীন হয়ে থাকেন মাসের বেশি সময়।

শেষমেশ দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পরে রাজ্য সরকার ও রেল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বুধবার থেকে রাজ্যে ফের চালু হতে চলেছে লোকাল ট্রেন। এই খবরেই খুশি রেল যাত্রীরা। তাঁরা জানান, করোনার জেরে পকেটে টান পড়েছে তাদের । জীবিকা নির্বাহের জন্য ট্রেন‌ই তাদের একমাত্র ভরসা। তাই ফের লোকাল ট্রেন চালু হ‌ওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন তাঁরা।


রেল সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই স্টেশন ও ট্রেনের কামরার স্যানিটাইজেশনের কাজ শুরু হয়ে গেছে। করোনার জেরে ভিড় এড়াতে বদল আনা হচ্ছে ট্রেনের সময়সূচিতেও। তবে এসবের সঙ্গেই রেল জানিয়েছে, সমস্ত বিধিনিষেধ মেনেই যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে হবে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে প্রত্যেককেই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। মাস্ক, স্যানিটাইজারের ব্যবহার বাধ্যতামূলক। বজায় রাখতে হবে শারীরিক দূরত্ব।

রেল সূত্রের জানা গিয়েছে, শিয়ালদহ ডিভিশনে আপাতত ৪১৩টি এবং হাওড়া ডিভিশনে ২০২টি ট্রেন চালানো হবে। শিয়ালদহের ৪১৩টি ট্রেনের মধ্যে ২৭০টি চলবে শিয়ালদহ নর্থ এবং ১৪৩টি চলবে শিয়ালদহ সাউথের লাইনে।


২৭০টি শিয়ালদহ নর্থের মধ্যে ২২টি ট্রেন চলবে শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর রুটে, ২৪টি  শিয়ালদহ-নৈহাটি রুটে, ১০টি শিয়ালদহ-রানাঘাট-লালগোলা রুটে, ২৬টি শিয়ালদহ-হাসনাবাদ রুটে, ৮টি শিয়ালদহ-বারাসত-দত্তপুকুর রুটে, ১৪টি শিয়ালদহ-শান্তিপুর রুটে, ১৪টি শিয়ালদহ-কল্যাণী সীমান্ত রুটে, ১৮টি শিয়ালদহ-ব্যারাকপুর রুটে, ৩২টি শিয়ালদহ-ডানকুনি-বারুইপাড়া রুটে, ২৪টি শিয়ালদহ-গেদে রুটে, ১৩টি শিয়ালদহ-রানাঘাট রুটে, ১৭টি রানাঘাট-বনগাঁ রুটে, ৩৯টি শিয়ালদহ-বনগাঁ রুটে, ৭টি নৈহাটি-দমদম জংশন-মাঝেরহাট রুটে, ২টি শিয়ালদহ-বিবাদীবাগ রুটে।


সাউথ সেকশনের ১৪৩টি টিরেনের মধ্যে ২৭টি চলবে শিয়ালদহ-বজবজ রুটে, ২১টি শিয়ালদহ-লক্ষ্মীকান্তপুর-নামখানা রুটে, ২৪টি শিয়ালদহ-ডায়মন্ড হারবার রুটে, ৩১টি শিয়ালদহ-ক্যানিং রুটে, ১৯টি শিয়ালদহ-সোনারপুর রুটে এবং ২১টি শিয়ালদহ-বারুইপুর রুটে।

হাওড়া ডিভিশনে যে ২০২টি ট্রেন চলবে তার মধ্যে ৩৮টি ট্রেন চলবে হাওড়া-ব্যান্ডেল রুটে, ১০টি হাওড়া-তারকেশ্বর-আরামবাগ-গোঘাট রুটে, ১২টি হাওড়া-কাটোয়া রুটে, ৮টি ব্যান্ডেল-কাটোয়া রুটে, ১৯টি হাওড়া-তারকেশ্বর রুটে, ২০টি হাওড়া-বর্ধমান মেন রুটে, ২২টি হাওড়া-বর্ধমান কর্ড রুটে, ১৮টি ব্যান্ডেল-নৈহাটি রুটে, ২টি হাওড়া-বারুইপাড়া রুটে, ৪টি হাওড়া-মশাগ্রাম রুটে, ২টি হাওড়া-হরিপাল রুটে, ৬টি হাওড়া-শ্রীরামপুর রুটে, ২টি হাওড়া-পাণ্ডুয়া রুটে, ১টি ব্যান্ডেল-পাণ্ডুয়া রুটে,৮টি বর্ধমান-কাটোয়া রুটে, ৪টি হাওড়া-চন্দনপুর রুটে, ২টি হাওড়া-গুড়াপ রুটে, ১৪টি হাওড়া-শেওড়াফুলি রুটে, ৪টি হাওড়া-বেলুড় রুটে, ৪টি হাওড়া-সিঙ্গুর রুটে এবং ২টি ব্যান্ডেল-বালি রুটে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here