দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রাজ্যে অবশেষে শুরু হচ্ছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। বুধবার নবান্নে ফের একবার বৈঠকে বসে রাজ্য ও রেলের কর্তারা। মঙ্গলবারই সিদ্ধান্ত হয়েছিল মোট যে সংখ্যায় লোকাল ট্রেন চলে তার এক চতুর্থাংশ দিয়ে ফের পরিষেবা চালু করা হবে। সকাল ও সন্ধে মিলিয়ে অফিস টাইমে শিয়ালদহ ও হাওড়া শাখা মিলিয়ে মোট ২০০টি লোকল ট্রেন চালান হবে বলে এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

অন্যান্য সময়ে কত ট্রেন চলবে সেই বিষয়ে রেলকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছে রাজ্যসরকার। পাশাপাশি লোকাল ট্রেনের সময় সূচি বানানোর দায়িত্বও রেলের ওপর বর্তেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ফের একবার বৈঠকে বসবে দুই তরফ। সেই বৈঠকেই  লোকাল ট্রেন চালানোর চূড়ান্ত দিন ঘোষণা করা হতে পারে। মনে করা হচ্ছে আগামী সপ্তাহ থেকেই রাজ্যে ফের লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু হয়ে যেতে পারে।

লোকাল ট্রেন চালানোর বিষয়ে মঙ্গলবার নবান্নে দফায়-দফায় বৈঠকে বসেছিল রাজ্য সরকার ও রেল। সেই রেশ ধরে বুধবার ফের একপ্রস্থ বৈঠক হয়। রাজ্যের তরফে স্বরাষ্ট্র সচিব ও পরিবহন দফতেরর আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন এদিনের বৈঠকে। কী পদ্ধিততে, কখন এবং ক’টি করে ট্রেন চালু হবে তা নিয়েই মূলত এদিন কথা হয়েছে। রাজ্য চাইছে সকাল ও বিকেল অফিসের টাইমে ট্রেনের সংখ্যা বেশি থাকুক। তাতে যাত্রীদের বড় অংশের সুবিধা হবে। ভিড়ও এড়ানো যাবে।

তবে হাওড়া শাখায় মোট ১৯৩ টি এবং শিয়ালদহ শাখায় মোট ১০৩টি স্টেশনে কোভিড প্রটোকল মেনে কীভাবে ট্রেন চলবে তাই এখন মূল চিন্তা দুই তরফের। সেক্ষেত্রে গ্যালপিং ট্রেনের সংখ্যা বাড়তে পারে। তবে ট্রেনের টাইম টেবিল তৈরির মূল দায়িত্ব রেলের হাতেই দিয়েছে রাজ্য সরকার। এদিনের বৈঠকে মূলত যে বিষয়গুলি নিয়ে দুই তরফের কথা হয়েছে৷

অফিস টাইমে হাওড়া ও শিয়ালদহ শাখা মিলিয়ে ২০০ কাছাকাছি ট্রেন চলবে
এর জন্য বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে তৈরি হচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর 
মূলত রেলকেই এই স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷
যাত্রীদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর।
প্রসিডিউর স্টেশনগুলিতে যাত্রীদের  সুরক্ষার বিষয়টিকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ,
কোন স্টেশনে ট্রেন থামবে এবং কোথায় থামবে না সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রেল৷
ট্রেনে যাত্রীদের স্টেশনে ঢোকা বেরোনো নিয়ে তৈরি হবে গাইডলাইন
স্টেশনগুলিতে স্বাস্থ্যবিধি যাতে মানা হয় তা দেখার জন্য  অতিরিক্ত আরপিএফ নিয়োগ করা হবে৷
রেল নিয়মিত জীবাণু নাশক প্রক্রিয়া চালাবে৷

এর আগে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে লোকাল ট্রেন চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল রেল।  একটি ট্রেনে সামাজিক দূরত্ব বিধি মানতে  ১২০০-র বদলে ৬০০ যাত্রী যাতে বসতে পারে সেই প্রস্তাবই দিয়েছে রেল । মেট্রোর মতো লোকালেও ই-পাস চালুর কথা ভাবা হয়েছে। প্রথমে  ১০ থেকে ১৫ শতাংশ লোকাল ট্রেন দিয়ে শুরুর পক্ষপাতী ছিল রেল। পরে তা বাড়িয়ে পরে ২৫ শতাংশ লোকাল চালানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

আগের দিন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ট্রেন চললেও যাত্রীসংখ্যা অর্ধেক করে দেওয়া হবে। এখন একটা ট্রেনে ১২০০ জন যাত্রী বসে যেতে পারেন। কোভিড বিধি মেনে এই সংখ্যাই ৬০০ জনে নামিয়ে আনা হবে। ট্রেনে উঠলে মাস্ক, স্যানিটাইজার বাধ্যতামূলক করা হবে।


কিন্তু এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা যাবে তা নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করছেন। তাঁদের মতে, যখন ১০০ শতাংশ ট্রেন চলত এবং ট্রেনযাত্রীরা তাতে চাপতেন তখনই অফিসটাইমে বাদুড় ঝোলা অবস্থা হতো। ট্রেনের সংখ্যা কমালে বিপত্তি আরও বাড়তে পারে।

বুধবারের বৈঠকের পর রেলপরিষেবা যে পুনরায় চালু হচ্ছে সেই বিষয়টি নিশ্চিত। তবে কবে থেকে ফের লোকাল ট্রেন ছুটবে সেই দিন বৃহস্পতিবার রাজ্য-রেল বৈঠকে ঘোষণা করা হতে পারে। সূত্রের খবর যা তাতে আগামী সপ্তাহেই ফের লোকাল ট্রেন চালু হতে পারে এরাজ্যে। 

তা ছাড়া মেট্রো স্টেশনে মানুষের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে যে পরিকাঠামো রয়েছে লোকাল ট্রেনের ক্ষেত্রে তা নেই। তাই শেষ পর্যন্ত কতদূর সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।


দিকে দিকে বিক্ষোভে স্পষ্ট লোকাল ট্রেন চালানোর দাবি এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে।সাধারণ স্টেশনগুলিতে পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার করে বিধি কার্যকর করা যায় কিনা তা নিয়েও ভাবনা চলছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here