দেশের সময়, ঠাকুরনগর: উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁর ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে আয়োজন করা হল বিধবা বিবাহের। ত্রিপুরার বাসিন্দা তানিয়া-র সঙ্গে মালদা জেলার বাসিন্দা প্রহ্লাদ মণ্ডলের বিবাহ সম্পন্ন হয়। মমতা বালা ঠাকুরের উদ্যোগে আয়জন করা হয় এই বিধবা বিবাহের। দু’জনেরই একটি করে সন্তান রয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এই বিবাহের আয়োজন করা হয়। দুই পরিবারের সম্মতিতে এই বিবাহের আয়োজন সম্পন্ন করা হল।

বিধবা বিবাহ প্রচলন করে সমাজের রক্ষণশীলতার প্রতি কড়া জবাব দিয়েছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। এবার সেই বিধবা বিবাহের আয়োজন দেখা গেল বনগাঁ ঠাকুরবাড়িতে। ঠাকুরবাড়ির উদ্যোগে বিধবা বিবাহের আয়োজন করা হয়। চার হাত এক করে দম্পতির নতুন জীবন শুরু হয়।

বাংলায় মতুয়া ধর্মের পীঠস্থান ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে আয়োজন হল বিধবা বিবাহের। রীতিমতো সাতপাকে ঘুরে পরস্পর পরস্পরের হাতে হাত রেখে নতুনভাবে জীবন শুরু করলেন নব দম্পতিরা। দুই খুদে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই এমন ভাবে বিধবা বিবাহ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বলে জানান ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়ির অন্যতম সদস্য মমতা বালা ঠাকুর।

ঠাকুরবাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদার বাসিন্দা প্রহ্লাদ মণ্ডলের সঙ্গে এদিন বিবাহ হয় ত্রিপুরার বাসিন্দা তানিয়া-র। দ্য হিন্দু উইডো’স রিম্যারেজ অ্যাক্ট, আইনটি ২৬ জুলাই ১৮৫৬ প্রণয়ন করা হয়েছিল। তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনাধীন ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড ডালহৌসির সহায়তায় ভারতবর্ষের সকল বিচারব্যবস্থায় হিন্দু বিধবাদের পুনর্বিবাহের বৈধতা মেলে। পরবর্তীতে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় তৎকালীন বড়লাট লর্ড ক্যানিং আইন প্রণয়ন করে, বিধবা বিবাহ কে স্বীকৃতি দেন।

আর এবার সেই বিধবা বিবাহর আয়োজন করেই ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়ি, দুই সন্তান সহ নব দম্পতিদের সুখী জীবনে এগিয়ে যেতে এক বার্তা দিলেন বলেই মনে করা হচ্ছে। আর এই বিয়ের ফলে স্বামীর মৃত্যুর পর তানিয়া যেমন পেল নতুন জীবন সঙ্গী তেমনই, প্রহ্লাদও স্ত্রীকে হারিয়ে আবারও ফের নতুন সঙ্গিনী পেলেন। আর এর মধ্যে দিয়েই দু’জন সন্তান পেল তাঁদের নতুন বাবা মা-কে।

বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে নতুন বধূ তানিয়া জানান, ‘ আমার একটি ছেলে রয়েছে। কিছুদিন আগে আমার স্বামী মারা গিয়েছিলেন। সেই কারণে আমার ছেলেকে একটি বাবার পরিচয় দেওয়ার জন্য এই বিবাহে অংশগ্রহণ করলাম। তাছাড়া আমার বর্তমান স্বামীর একটি মেয়ে রয়েছে, তারও একটি মায়ের পরিচয় হল।’ দুই পরিবারের মানুষ এই অনুষ্ঠানে অংশ্রগ্রহণ করেন। দুই পরিবারের সদস্যরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন খুবই খুশি। ঠাকুরবাড়ি সাক্ষী থাকল এক নতুন অধ্যায়ের। আগামী দিনে পথ চলার জন্য আশীর্বাদ জানিয়েছেন সকলে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here