দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মার্চের জ্বালাপোড়া গরমে নাজেহাল বঙ্গবাসী। তবে এর মধ্যেই সুখবর শোনাল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। খুব শীঘ্রই ভ্যাপসা গরম থেকে মুক্তি দেবে স্বস্তির বৃষ্টি। দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। চলতি সপ্তাহে না হলেও আগামী সপ্তাহে হাওয়া বদল হবে বলেই জানাচ্ছে হাওয়া অফিস।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, শুক্রবার উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। শনি ও রবিবার বৃষ্টি হতে পারে পশ্চিমের জেলাগুলিতে। হালকা বৃষ্টিতে ভিজতে পারে পশ্চিমের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম। তবে হাওয়া বদলের সম্ভাবনা রয়েছে আগামী ১৫ তারিখ থেকে। সে সময় বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সমস্ত জেলাতেই। বদলাবে কলকাতার আবহাওয়াও ৷

ফলে ১৫ থেকে ১৭ মার্চ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে তাপমাত্রাও কিছুটা কমবে। স্বস্তি পাবে রাজ্যবাসী। এমনটাই জানাচ্ছে হাওয়া অফিস। যদিও ততদিন সইতে হবে ভ্যাপসা গরম এবং শুষ্ক আবহাওয়া।

বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও কলকাতার আকাশ খানিকটা মেঘলাই। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এই পরিস্থিতি বদলে যাবে। রোদের তেজ বাড়বে। শুষ্ক আবহাওয়ার জেরে গলদঘর্ম অবস্থা তৈরি হবে শহরে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, শুক্রবার দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে দুই ডিগ্রি বেশি। বৃহস্পতিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। এদিন দিনভর বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ থাকবে ৩৫ থেকে ৮০ শতাংশের মধ্যে।

আবাহাওয়াবিদদের একাংশের আশঙ্কা, মার্চের শুরুতেই যেভাবে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা খুব শীঘ্রই ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যাবে। যা কার্যত নজিরবিহীন। রেকর্ড গরম পড়তে পারে মার্চের দ্বিতীয় ভাগে। একাধিক জেলায় তাপপ্রবাহ এবং লু বইবার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তির জেরে নাজেহাল হবে রাজ্যবাসী। উষ্ণতম ফেব্রুয়ারির সাক্ষী থেকেছে বাংলা। পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তাতে এবার উষ্ণতম মার্চেও ভোগান্তির শিকার হবে বাংলা।

আবহাওয়াবিদদের অনেকেই জানাচ্ছে, এ রাজ্যে চলতি গ্রীষ্মের মরশুমে খরার সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে বর্ষারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তাঁরা। জানা যাচ্ছে, বঙ্গে বর্ষাও ঢুকবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই। এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই কালবৈশাখী ঝড়ের দাপট দেখা যেতে পারে। যা কিছুটা হলেও বীভৎস গরম থেকে স্বস্তি দেবে মানুষকে।

পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা। শুক্রবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলেই জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা

আই এম ডি (IMD)-র ওয়েদার অ্যালার্ট অনুসারে উত্তর-পশ্চিম মধ্যপ্রদেশ এবং এর আশেপাশে একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা বিরাজ করছে। এর প্রভাবের কারণে ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, হিমালয়ের পাদদেশ সংলগ্ন এবং সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশে ১১ মার্চ পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর মধ্যপ্রদেশ এবং ঝাড়খণ্ডের অনেক জায়গায় আজ অর্থাৎ শুক্রবার শক্তিশালী বাতাসের (হাওয়ার গতিবেগ ৩০-৪০ কিমি প্রতি ঘণ্টা) বইবার সম্ভাবনা রয়েছে৷

এদিকে আরও একটি নতুন পশ্চিমি ঝঞ্ঝা ১২ থেকে ১৪ মার্চের মধ্যে পশ্চিম হিমালয় অঞ্চলে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি এবং বজ্রপাত সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ঝাড়খণ্ডে দমকা হাওয়া আর ওড়িশাতে ঘূর্ণাবর্ত। এর ফলে ঝাড়খন্ড এবং ওড়িশা সংলগ্ন জেলাগুলিতে আংশিক মেঘলা আকাশ। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এই রাজ্যের পশ্চিমের জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি। বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলতে পারে রবিবার পর্যন্ত। খুব হালকা বৃষ্টির সামান্য সম্ভাবনা। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ এই বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায়।

আবহাওয়া দফতর ১০ মার্চ কোঙ্কন, গোয়া, উপকূলীয় কর্ণাটক, সৌরাষ্ট্র এবং কচ্ছের বিভিন্ন জায়গায় তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি ও তুষারপাত লক্ষ্য করা গেছে। পূর্ব রাজস্থান ও পূর্ব মধ্যপ্রদেশের কয়েকটি স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। পূর্ব মধ্যপ্রদেশে ১ সেমি-র চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ৷

একই সময়ে, উত্তরাখণ্ড এবং পূর্ব রাজস্থানের বিভিন্ন জায়গায় বজ্রপাতও দেখা গেছে। রাজস্থান ও মহারাষ্ট্রের অনেক জায়গায় বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টিতে মাঠের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।

নতুন দিল্লি. আজ, ঝাড়খণ্ড, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ছত্তিশগড় এবং মধ্য মহারাষ্ট্রের বিচ্ছিন্ন জায়গায় বজ্রপাত, বজ্রপাত এবং প্রবল বাতাস ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিমি গতিবেগে বইবে সঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরের মতে, কোঙ্কন, গোয়া, সৌরাষ্ট্র এবং কচ্ছ এবং উপকূলীয় কর্ণাটকের বিচ্ছিন্ন এলাকায় তাপপ্রবাহের অবস্থা বিরাজ করতে পারে।

গোয়া, সৌরাষ্ট্র, কচ্ছ, বিদর্ভ এবং উপকূলীয় কর্ণাটকের অনেক অংশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭-৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। তামিলনাড়ু, কেরল, কোঙ্কন, উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, ওড়িশা, রায়ালসিমা এবং পশ্চিম মধ্যপ্রদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫-৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here