শনিবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ওই কালবৈশাখী ঝড়ের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার!গাছ চাপা পড়ে অন্তত ২ জনের মৃত্যু!

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গত কয়েকদিন ধরেই বঙ্গবাসী অস্থির হয়ে উঠেছিলেন প্যাঁচপেচে গরমে। খবরের কাগজে বা টিভির পর্দায় চোখ রেখে সকলেই জানতে চাইছিলেন বৃষ্টি কবে আসবে। শনিবার বিকেলেই নামল রাত।কালো মেঘে ঢেকে গেল আকাশ।

আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ওই কালবৈশাখী ঝড়ের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার! স্বাভাবিকভাবেই এই ভয়ঙ্কর ঝড়ে গাছ উপড়ে গিয়ে একাধিক জায়গায় রাস্তা বন্ধের খবর মিলেছে। সার্দান অ্যাভিনিউতে গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিড়লা মন্দিরের সামনে আশুতোষ চৌধুরী অ্যাভিনিউতে গাছ পড়ে রাস্তা আংশিক বন্ধ। বন্ধ হয়ে যায় টালিগঞ্জ থেকে কবি সুভাষ মেট্রো চলাচল।

ঝড় বৃষ্টির দাপটে বিমান চলাচলও ব্যহত হয়েছে কলকাতা বিমানবন্দরে। বিমানবন্দর সূরের খবর, ঝড়ের কারণে দু’টি বিমান অন্য বিমানবন্দরে অবতরণ করানো হয়েছে। অন্য ৫টি বিমান মাঝ আকাশেই চক্কর কাটছে ঝড় বৃষ্টির কারণে। 

কালবৈশাখীর ঝড়ে গাছ পড়ে রাজ্যের দুই জেলায় এক কিশোর-সহ দু’জনের মৃত্যু হল। আহত হয়েছেন আরও দু’জন। ঝড়ের তাণ্ডবে রাজ্যের কোনও জেলায় ট্রেন চলাচল পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়েছে। কোথাও বা ভেঙে পড়েছে মোবাইল টাওয়ার। পূর্ব বর্ধমান থেকে হুগলি, হাওড়া থেকে পূর্ব মেদিনীপুর— রাজ্যের বহু জেলায় কালবৈশাখীর ঝড়ের প্রভাব পড়েছে।

শনিবার দুপুর থেকেই আকাশ ঘোলাটে হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে রঙ পাল্টে কালো এবং অবশেষে নামল স্বস্তির বৃষ্টি। প্রবল ঝড়ে গাছ পড়ে বর্ধমানে একজন মারা গেছেন। আহত দু’‌জন। আবার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে গাছ পড়ে রাস্তার একাংশ বন্ধ। যুবভারতীতে এএফসি কাপের ম্যাচও ১২ মিনিট পর বন্ধ হয়ে যায়। তুমুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রেসবক্স। তবে ঝড় বৃষ্টি থামার পর খেলা আবার শুরু হয়।

কলকাতা থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা। হুড়মুড়িয়ে নামল বৃষ্টি। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। শনিবার বিকেলে অবস্থা এমনই হয়, দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বেলে গাড়িগুলি চলাচল করে। কমে যায় গাড়ির গতি। মুহূর্তে রাস্তা ফাঁকা। বৃষ্টির থেকে বাঁচতে আশেপাশের বাড়ি বা বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে শেডের তলায় আশ্রয় নিতে ছুটতে হয় সকলকে। ঝাঁপ ফেলে আপাতত ব্যবসা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তই নেন ব্যবসায়ীরা।

তুমুল বৃষ্টির জেরে ইডেনের গ্যালারিতে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় আলো। পিচ ঢাকার পলিথিন শিট উড়ে যায় ঝড়ের দাপটে। ঝড়ের দাপটে আলিপুরে গাছ পড়ে গেছে বলে জানা যায়। এক ধাক্কায় তাপমাত্রা নেমে যায় অনেকটাই।এদিন হাওয়ার দাপটে যেন অনেকটাই ফিরে এল আম্ফানের স্মৃতি। ঝড়ের সঙ্গে শোনা যায় শোঁ শোঁ আওয়াজ। হাওয়ার সঙ্গে উড়তে থাকে ধুলো। ভেঙে পড়তে থাকে রাস্তার পাশের গাছের ডালপালা। 

শনিবার দুপুর থেকেই আকাশ ঘোলাটে হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে রঙ পাল্টে কালো এবং অবশেষে নামল স্বস্তির বৃষ্টি। প্রবল ঝড়ে গাছ পড়ে বর্ধমানে একজন মারা গেছেন। আহত দু’‌জন। আবার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে গাছ পড়ে রাস্তার একাংশ বন্ধ। যুবভারতীতে এএফসি কাপের ম্যাচও ১২ মিনিট পর বন্ধ হয়ে যায়। তুমুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রেসবক্স।

তবে ঝড় বৃষ্টি থামার পর খেলা আবার শুরু হয়। প্রভাব পড়ে মেট্রো পরিষেবাতেও। বিকেল ৪.‌৪০ থেকে এই প্রভাব পড়েছে বলে জানা গেছে। মেট্রো জানিয়েছে মহানায়ক উত্তমকুমার ও নেতাজি স্টেশনের মাঝে আপ লাইনে গাছ পড়ে যাওয়ায় পরিষেবা বিঘ্ন ঘটেছে। 

আপাতত পরিষেবা মিলছে দক্ষিণেশ্বর থেকে মহানায়ক উত্তমকুমার অবধি। পরিষেবা বন্ধ রয়েছে মহানায়ক উত্তমকুমার থেকে কবি সুভাষ অবধি। প্রায় ৫০ মিনিট পর বিকেল ৫.‌৩০ থেকে সম্পূর্ণ পরিষেবা চালু হয়। প্রভাব পড়ে বিমান চলাচলেও। আপাতত বন্ধ রয়েছে বিমান ওঠানামা। 

 এদিকে, ন্যাশনাল লাইব্রেরির কাছে রাস্তায় গাছ পড়ে এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের কর্মীরা। শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। প্রবল বৃষ্টির জেরে রাজপথে ব্যাপক যানজট। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলার অবস্থাও তাই। জেলায় জেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। রবিবারও কালবৈশাখীর সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। 

পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার বিকেলে বর্ধমান শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রাজারবাগান এলাকার শেখ আলিশান নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় শহরের একটি বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা চায়ের দোকানে দু’জন কিশোরের সঙ্গে ক্যারাম খেলছিল আলিশান। ঝড়ের দাপটে ওই দোকানের উপরে একটি গাছ ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনাস্থলেই আলিশানের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি, আহত অন্য দুই কিশোর। তাদের উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিধায়ক খোকন দাস-সহ প্রশাসনের আধিকারিকেরা।

বর্ধমানের পাশাপাশি হুগলিতেও প্রাণহানি হয়েছে। ওই জেলায় কালবৈশাখীর ঝড়ের সময় আম কুড়োতে গিয়ে গাছ পড়ে মারা যান এক যুবক। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম সুনীল নাথ (৩২)। শ্রীরামপুর ঘোড়ামারা পশ্চিমপাড়া মল্লিকপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুনীলের উপর একটি নারকেল গাছ ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় শ্রীরামপুর থানার পুলিশ।

হুগলিতে একটি মোবাইল টাওয়ার ভেঙেও বিপত্তি ঘটেছে। ঝড়বৃষ্টির সময় বৈদ্যবাটি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্‌গোপ পাড়ায় হঠাৎ ভেঙে দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে পড়ে একটি মোবাইল টাওয়ার। এর জেরে একই বাড়িতে দু’জন আটকে পড়েন। তাঁদের উদ্ধার করেন স্থানীয়েরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here