দেশের সময়: চলতি বছরে উচ্চমাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ (HS Result 2023) করল সংসদ। সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য সাংবাদিক সম্মেলন করে ফল প্রকাশ করেন। এদিন ৮৭ জনের মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রথম পাঁচে আছে ১৬ জন।

শুভ্রাংশু সর্দার। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে প্রথম হয়েছে শুভ্রাংশু। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৬।

এবার যুগ্ম দ্বিতীয় হয়েছে। বাঁকুড়া বঙ্গ বিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় হয়েছে সুষমা খান। অন্যজন আবু শামা। রামকৃষ্ণপুর প্রমোদ দাশগুপ্ত হাইস্কুলের ছাত্র আবু। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৫।

চারজন এবার উচ্চমাধ্যমিকে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। সকলেরই প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৪। তারা হল, তমলুক হ্যামিল্টন হাইস্কুলের ছাত্র চন্দ্রবিন্দু মাইতি, বালুরঘাট ললিতমোহন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী অনুসূয়া সাহা ও শ্রেয়া মল্লিক, আলিপুরদুয়ারের কামাখ্যাগুড়ি গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী পিয়ালি দাস।

উচ্চমাধ্যমিকে এবার চতুর্থ হয়েছে ৪ জন। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৩। দক্ষিণ দিনাজপুরের ডঙ্গরহাট হাইস্কুলের ছাত্রী শ্রীজিতা বসাক, নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের ছাত্র নরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুর হাইস্কুলের ছাত্রী প্রেরণা পাল।

এবার উচ্চমাধ্যমিকে পঞ্চম স্থানে রয়েছে পাঁচজন। তারা হল হুগলির কাপসিত হাইস্কুলের ছাত্র কৌস্তভ কুণ্ডু, নব নালন্দা শান্তিনিকেতন হাইস্কুলের ছাত্রী হৃষিতা সিনহা মহাপাত্র, পূর্ব মেদিনীপুরের বাজারপুর রামকৃষ্ণ হাইস্কুলের ছাত্র দীপ্তার্ঘ দাস, পুরুলিয়ার ন’পাড়া হাইস্কুলের ছাত্রী অঙ্কিতা ঘোড়াই ও বঙ্গবাসী এসএম হাইস্কুলের ছাত্রী অনন্য সামন্ত। সকলেরই প্রাপ্ত নম্বর ৪৯২।

যুগ্ম পঞ্চম শান্তিনিকেতন নব নালন্দার ছাত্রী ঋষিতা সিনহা বললেন, দিনে আট-দশ ঘণ্টা পড়তাম। টেক্সট বুক খুঁটিয়ে পড়তাম। আইএফএস (ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস) হতে চাই। খুব ভোরে উঠতে পারতাম না। তবে বেশি রাত পর্যন্ত পড়তাম। টেস্টের আগেই সিলেবাস শেষ করেছিলাম। টেস্টের পর শুধু রিভাইজড করেছি। বাবা-মা কখনও পড়ার জন্য চাপ দেয়নি। শুধু বলেছে, ভাল করে পড়। শান্তিনিকেতনে বড় হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করি। পড়ার অবসরে টিভি দেখেছি। গল্পের বই পড়েছি। খুব আনন্দ হলে বাবা-মার সঙ্গে শেয়ার করি। মন খারাপ হলে মায়ের সঙ্গে শেয়ার করি। সায়েন্স না নিয়ে আর্টস নিয়েছি। কারণ, ইতিহাস আমার প্রিয় বিষয়। বাবাও ইতিহাসের অধ্যাপক।

দ্বিতীয় সুষমা খান বলেছেন, রাত জাগতে পারি না। ফলে ভোরেই পড়তাম। ডায়েরি লিখি। গান করতে ভালবাসি। মাঝে পড়ার জন্য গানে ছেদ পড়েছিল। প্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত। গল্প করতে খুব ভালবাসি। আশা করেছিলাম, রেজাল্ট ভাল হবে। মনের আনন্দে পড়েছি। ভাল রেজাল্ট হয়েছে। খুব ভাল লাগছে। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসতে চান তিনি।

তৃতীয় বালুরঘাটের শ্রেয়া মল্লিক জানিয়েছেন, আমি এতটা আশা করিনি। জানতাম রেজাল্ট ভাল হবে। তবে তৃতীয় হব ভাবিনি। আমার স্কুল শিক্ষক, প্রাইভেট শিক্ষকরা ভীষণভাবে সাহায্য করেছেন। মাধ্যমিক হয়নি। ফলে উচ্চ মাধ্যমিক আমার জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। তবে ঘড়ি ধরে পড়িনি। ইংরেজি নিয়ে উচ্চ শিক্ষিত হতে চাই। ইংরেজি সাহিত্যের প্রতি ভালবাসা আছে। এখনও খুব ভালভাবে পড়া হয়ে ওঠেনি। তাই গভীরে যেতে চাই।

এবারের উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হলেন শুভ্রাংশু সর্দার। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৬। দ্বিতীয় স্থানে দু’জন। সুষমা খান, বাঁকুড়ার বঙ্গ বিদ্যালয়ের এবং আবু সামা, উত্তর দিনাজপুরের রামকৃষ্ণপুর প্রমোদ দাশগুপ্ত মেমোরিয়াল হাইস্কুলের ছাত্রী। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৫। তৃতীয় হয়েছেন তমলুকের চন্দ্রবিন্দু মাইতি, বালুরঘাটের অনুসূয়া সাহা, আলিপুরদুয়ারের পিয়ালি দাস ও বালুরঘাটের শ্রেয়া মল্লিক। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৪। চতুর্থ বালুরঘাটের সৃজিতা বসাক, নরেন্দ্রপুরের নরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রেরণা পাল। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৩। পঞ্চম হয়েছেন কৌস্তভ কুণ্ডু, ঋষিতা সিনহা, দীপ্তার্ঘ্য দাস, অঙ্কিতা ঘোরাই, অনন্যা সামন্ত। এদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯২। ষষ্ঠ হয়েছেন চয়ন বর্মন, অঙ্কুর রায়, অর্কদীপ ঘরা, তমালকান্তি দাস, সোমাইল জানা, সোহম চ্যাটার্জি, রূপসা উপাধ্যায়, অদিতি মহান্তি, সুপর্ণা মাহাত, উৎসা কুণ্ডু, সৌমিলি মণ্ডল, সাহেলি আহমেদ। এদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯১। সপ্তম হয়েছেন সন্দীপ ঘোষ, দেবর্ষি বসাক, বিতান শাসমল, অর্ক ঘোষ, অভিরূপ পাল, সৃজা উপাধ্যায়, সুমিত মুখোপাধ্যায়, রূপঙ্কর ঘটক, কৌশিকী কুণ্ডু, সৌজাত্য মুখোপাধ্যায়, সরণ্য ঘোষ, অর্ণব পতি, অষ্মিতা পাল, অভিরূপ পাল। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯০। অষ্টম হয়েছেন শ্রীতমা মিস্ত্রি, সৈয়দ সাকলিং কবীর, সায়ন প্রধান, আত্রেয়ী সাহানা, সংযুক্তা বিশ্বাস, শ্রেষ্ঠা অধিকারী, সন্দীপ ভট্টাচার্য, অদ্বিতীয়া সিনহা, ঈশিকা শীল, সিরিন আলম, সপ্তম দাস। প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৯। নবম হয়েছেন দেবাঙ্গনা দাস, প্রণব বর্মন, দৃষ্টি মাইতি, অঙ্গাজ হোসেন, অর্ক দাস, সায়ন সাহা, অর্কপ্রতীম দে, পবিত্র মাইতি, তুহিনরঞ্জন অধিকারী, তৃষিতা কর্মকার, অহেনা বসু, সুপ্রভাত ঘোষ, সুজিত পাল, মোনালিসা পাল। প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৮। দশম হয়েছেন আর্য নন্দী, স্বাগতা চক্রবর্তী, সুস্মিতা মোদক, সংহীতা দাশগুপ্ত, সুচেতনা জানা, বিক্রম বর্মন, শেখ সৈফুদ্দিন আহমেদ, সৌম্যদীপ দত্ত, কোয়েল কুণ্ডু, অঞ্জুমা দিলরুবা। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৭।

প্রথম দশে রয়েছেন ৮৭ জন। হুগলি থেকে সবচেয়ে বেশি রয়েছেন ১৮ জন। গত বছর উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় ছিলেন ২৭২ জন। এবছর তা অনেকটাই কমল। ৫৭ দিনের মাথায় উচ্চ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ। সাড়ে আট লক্ষের বেশি পরীক্ষার্থী থাকলেও পরীক্ষা দিয়েছেন আট লক্ষ ২৪ হাজার ছাত্রছাত্রী। ছাত্রের তুলনায় ছাত্রী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ শতাংশ বেশি। এবার প্রতিটি মার্কশিটে থাকছে কিউআর কোড। ৮৯.২৫ শতাংশ পাশের হার। পাশের হারে সবচেয়ে এগিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর। পাশের হারে কলকাতা দশম স্থানে। ১১টি জেলায় পাশের হার ৯০ শতাংশের বেশি।

উর্দু ভাষায় প্রথম হয়েছেন মহম্মদ হাসান। নেপালিদের মধ্যে প্রথম স্নেহা লামা। সাঁওতালিদের মধ্যে তিনজন যুগ্মভাবে প্রথম হয়েছেন। আজ বেলা সাড়ে বারোটা থেকেই অনলাইনে রেজাল্ট জানা যাবে। মার্কশিট ডাউনলোড করা যাবে। ৩১ তারিখ থেকে স্কুলে মার্কশিটের হার্ডকপি পাওয়া যাবে।

পরের বছর উচ্চ মাধ্যমিক শুরু হবে ১৬ ফেব্রুয়ারি। শেষ হবে ২৯ ফেব্রুয়ারি। পরীক্ষা শুরু হবে বেলা বারোটা থেকে। শেষ হবে বিকেল তিনটেয়। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে জানানো হয়েছে, একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার দায়িত্ব স্কুল কর্তৃপক্ষের উপরেই থাকছে। তবে প্রশ্নপত্র কীভাবে তৈরি করতে হবে বলে দেবে সংসদ। পড়ুয়াদের প্রাপ্ত নম্বর সংসদের ওয়েবসাইটে তুলতে হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here