দেশের সময় কলকাতা : মঙ্গলবার সন্ধেয় না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী স্মরণানন্দ। তিনি মিশনের ১৬ তম মহারাজ ছিলেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। তাঁর মৃত্যুতে মিশনের তরফে গভীর শোকপ্রকাশ করা হয়েছে।

জানা গেছে ,মঙ্গলবার রাত ৮.১৪-এ রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে জীবনাবসান। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে ২৯ জানুয়ারি থেকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।

দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন বার্ধক্যজনিত সমস্যায়। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ষোড়শ অধ্যক্ষ ছিলেন স্বামী স্মরণানন্দ।

রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ষোড়শ অধ্যক্ষ ছিলেন স্বামী স্মরণানন্দ। স্বামী আত্মস্থানন্দের জীবনাবসানের পরে ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই অধ্যক্ষ হিসাবে তিনি দায়িত্ব নেন।

১৯২৯-এ তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুর জেলার আন্দামি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন স্বামী স্মরণানন্দ। খুব কম বয়সে মাকে হারান। ১৯৪৬ সালে স্কুলের পাঠ শেষ করে নাসিকে বাণিজ্য বিভাগে ডিপ্লোমা করেন। ১৯৪৯-এ মুম্বই পাড়ি দেন। শ্রীরামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মুম্বই রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। ১৯৫২ সালে, ২২ বছর বয়সে স্বামী শঙ্করানন্দের কাছে মন্ত্রদীক্ষা নেন। ১৯৫৬ সালে ব্রহ্মচর্য নেন তিনি।

১৯৫৮-তে ‘অদ্বৈত আশ্রম’-এর কলকাতা শাখায় আসেন। দীর্ঘ ১৮ বছর কাজ করেছেন ‘অদ্বৈত আশ্রম’-এর বিভিন্ন শাখায়। বিবেকানন্দ প্রবর্তিত ইংরেজি পত্রিকা ‘প্রবুদ্ধ ভারত’-এর প্রবন্ধক সম্পাদকের দায়িত্ব সামলেছেন কয়েক বছর। প্রায় ১৫ বছর ‘রামকৃষ্ণ মিশন সারদাপীঠ’-এর সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৩-তে রামকৃষ্ণ মিশনের গভর্নিং বডির সদস্য হন। ১৯৯১-এ চেন্নাই রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি।

মিশন সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৮ সালের বন্যার সময় দুর্গতদের উদ্ধারে বিশেষ দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন স্বামী স্মরণানন্দ। অন্য মহারাজদের কাছে তিনি সুরসিক এবং সরল মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দের জীব জ্ঞানে শিব সেবা শুধু মুখে বলাই নয়, নিজের প্রতিটি কাজের মাধ্যমেও বারে বারে সেই ছাপ রেখেছেন তিনি।

মঠ সূত্রের খবর, ১৯২৯ সালে তামিলনাড়ুর গ্রামে জন্ম স্বামী স্মরণানন্দর। তাঁর পূর্বনাম ছিল জয়রাম। ১৯৪৬ সালে নাসিক থেকে বাণিজিক বিভাগে ডিপ্লোমা পাস করেন। ১৯৫২ সালে মিশনে দীক্ষা নেন। ৫৮ সালে কলকাতা শাখায় আসেন। ৭৬ সালে সারদাপীঠের দায়িত্ব নেন। তাঁর উদ্যোগেই বেলুড় মঠের সন্ধ্যারতি ক্যাসেট আকারে দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক নেমে এসেছে ভক্তদের মধ্যে।

গত ২৯ জানুয়ারি মূত্রনালীতে সংক্রমণের কারণে তাঁকে রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানো হয়েছিল। ওই হাসপাতালের সাত তলার ৫০ নম্বর কেবিনে। ক্রমে সেপটিসেমিয়ায় আক্রান্ত হন স্বামী স্মরণানন্দ। শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। ৩ মার্চ আচমকা তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়।

গত ১৩ মার্চ ছোট অস্ত্রোপচার করে কৃত্রিম ভাবে শ্বাসকার্যের জন্য একটি নল ঢোকানো হয় তাঁর শ্বাসনালীতে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, কিডনিতেও সমস্যা হয়েছিল তাঁর। সেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন তাঁকে দেখে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দেখে যান তাঁকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here