দেশের সময় উত্তর ২৪পরগনা সন্দেশখালির বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রর সঙ্গে সরাসরি ফোনে কথা বললেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে প্রার্থী হওয়ার পর শুভেচ্ছা জানালেন মোদী। মোদীর সঙ্গে কথোপকথনে রেখা পাত্র তাঁকে প্রার্থী করার জন্য ধন্যবাদ জানান। সন্দেশখালির মা-বোনেরা যাতে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে, সেই ব্যাপারে মোদীর কাছে আর্জি জানান বিজেপি প্রার্থী।

সন্দেশখালির নির্যাতিতা রেখা পাত্রকে লোকসভা ভোটে বসিরহাট আসনে প্রার্থী করেছে বিজেপি। রবিবার তাঁর নাম প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রেখাকে ফোন করে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

রেখা পাত্রকে প্রধানমন্ত্রীর এই ফোনের অডিও এদিন সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছে। তার উদ্দেশ্য ও বিধেয়ও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে এও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিজেপির ফারাকও। কতটা সুপরিকল্পনা থাকলে এতটা সময় দিয়ে এক জন প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন জাতীয় দলের প্রধান সেনাপতি।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথোপকথনের সময়ে মোদীকে ভগবান রামের সঙ্গে তুলনা করেন বসিরহাট আসনে প্রার্থী এই রেখা পাত্র। মোদীর আশীর্বাদ চান বসিরহাটের বিজেপির প্রার্থী। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনার মতো মা বোনের হাত আমার মাথায় রয়েছে। নইলে আমি একা তো কিছুই নই।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথোপকথনের সময়ে মোদীকে ভগবান রামের সঙ্গে তুলনা করেন রেখা পাত্র। মোদীর আশীর্বাদ চান বসিরহাটের বিজেপির প্রার্থী। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনার মতো মা বোনের হাত আমার মাথায় রয়েছে। নইলে আমি একা তো কিছুই নই। মোদীর কথায়, রেখাজি আপনিই শক্তি, আপনিই দুর্গা। বাংলায় শক্তির আরাধনা হয়। আপনিই সেই শক্তি। কত বড় সাহস আপনি দেখিয়েছেন, জানেন না। আপনার কারণেই এক দুর্বৃত্ত গ্রেফতার হয়েছে।

অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপনি লড়াই করেছেন। গোটা দেশ আপনার জন্য গর্ব করছে।

রেখার কাছে প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, লোকসভা ভোটে তাঁকে প্রার্থী করার পর কেমন সাড়া পেয়েছেন তিনি? জবাবে রেখা পাত্র বলেন, আমি ভাল সাড়া পেয়েছি। অনেকেই আমার পাশে রয়েছেন। খোলাখুলি সমর্থন করছেন। তৃণমূলের যে সব মা বোনেরা শুরুতে আপত্তি করছিলেন, তাঁরাও এখন সমর্থনের কথা বলছেন। আমি চাই সবার ভাল হোক।

তা শুনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনার মধ্যে এক জন জনপ্রতিনিধি হয়ে ওঠার সব গুণ দেখতে পাচ্ছি। আপনি শুধু বিজেপির সমর্থকদের কথা ভাবছেন না। আপনার যাঁরা বিরোধী তাঁদেরও ভাল চাইছেন। এই উদারতা একজন জনপ্রতিনিধির থেকে কাঙ্খিত। আমি আশা করছি আপনাকে দিল্লিতে দেখতে পাব।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথোপকথনে রেখা অভিযোগ করেন যে ২০১১ সাল থেকে তাঁরা এলাকায় ভোট দিতে পারছেন না। তাঁদের ভোট অন্য কেউ দিয়ে দিচ্ছে। তা শুনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিষয়টি আমরা নির্বাচন কমিশনের নজরে আনব। গোটা দেশের স্বচ্ছ ও অবাধ ভোট করাতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। আশা করব নির্বাচন কমিশন বসিরহাটে অবাধ নির্বাচন সুনিশ্চিত করবে।

মোদী রেখাকে জানান, ‘আপনি এত বড়ো লড়াই লড়েছেন, আপনি তো সবার কাছে শক্তি স্বরূপা। আপনি এত প্রভাবশালী একজনকে জেলে পাঠিয়েছেন।’’ রেখা পাত্র নিশ্চয়ই এবারের ভোটে জিতবেন এবং তিনি দিল্লি যাবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, বাংলা তো দুর্গা পুজো, দুর্গা দেবীর শক্তি আরাধনা করার স্থান। আপনি সেই শক্তির বাহক।’ সন্দেশখালির মহিলাদের কথা সারা দেশের সামনে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ জানান মোদী।

পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, সন্দেশখালির এক নির্যাতিতাকে বসিরহাটে প্রার্থী করা এবং তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ফোনে কথোপকথন একেবারেই কৌশলগত। এক, সন্দেশখালিকে সামনে রেখে বাংলার গ্রাম গঞ্চে মহিলা ভোটকে বিজেপির অনুকূলে টানতে চাইছেন মোদী-শাহ। দুই, গোটা দেশকেও দেখাতে চাইছেন মহিলাদের ক্ষমতায়নে বিজেপি কতটা আগ্রহী। তাই কথোপকথন শুধু বসিরহাটের জন্য নয়, এটা বিজেপির বড় কৌশলেরই অঙ্গ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here