Ration Scam Shankar Adhya: ১৭ ঘণ্টা ধরে তল্লাশির পর এবার শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কলকাতার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হ য়েছে শঙ্কর আঢ্যকে..

দেশের সময়, বনগাঁ :  উত্তর ২৪ পরগনা: রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় (Ration Scam) এবার গ্রেফতার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ শঙ্কর আঢ্য (Arrested Bangaon Municipality former chairman Shankar Adhya)। ইডির জালে বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। এদিন সন্দেশখালিতে অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত ইডি ও সিআরপিএফ। ১৭ ঘণ্টা ধরে তল্লাশির পর এবার শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

তল্লাশির প্রায় সাড়ে ১৭ ঘণ্টা পর রেশন দুর্নীতি মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ইডি)-এর হাতে গ্রেফতার উত্তর চব্বিশ পরগনার বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। রাত্রি সাড়ে বারোটা নাগাদ শঙ্করকে গ্রেফতার করে ইডি। ইডি সূত্রে খবর, তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ইডির দাবি, নথিপত্র ঘেঁটে লেনদেন সংক্রান্ত যে সকল তথ্য পাওয়া গিয়েছে তা সন্দেহজনক। তাঁকে কলকাতায় সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রে খবর। শনিবার তাঁকে আদালতে পেশ করবে ইডি।গ্রেফতারের পর শঙ্কর বলেন, ‘‘আমি কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে সহযোগিতা করব।’’

ইডির দাবি, নথিপত্র ঘেঁটে লেনদেন সংক্রান্ত যে সকল তথ্য পাওয়া গিয়েছে তা সন্দেহজনক।

শঙ্করের স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্য তাঁর স্বামীর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বলেন, “সকাল সাড়ে সাতটা থেকে তল্লাশি চলছে। ব্যবসার কাগজপত্রই দেখেছেন ওঁরা সারা দিন ধরে। আমরা সবরকম সহযোগিতা করেছি। হঠাৎ রাত ১২টা নাগাদ এক অফিসার এলেন। একটা কাগজ দেখিয়ে বললেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিঠি এটা। তার ভিত্তিতেই ওঁকে (শঙ্কর) গ্রেফতার করা হচ্ছে। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হল ওঁকে।জ্যোৎস্না বলেন, ‘‘জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দলের জেলা সভাপতি ছিলেন। সেই সূত্রে তিনিও আসতেন। আমরাও যেতাম। তার জন্য গ্রেফতার করতে হবে!’’

দেখুন ভিডিও

শঙ্করকে গ্রেফতার করে তাঁর বাড়ি থেকে বার হওয়ার সময় ইডির গোয়ন্দাদের গাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মহিলারা। সেই সঙ্গে ইডির আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর উদ্দেশ্যে চলতে থাকে লাগাতার গালিগালাজ চলে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়িতে থান ইট ছুঁড়ে মারা হয়। উত্তেজিত ভিড় সামাল দিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী লাঠিচার্জ করে। বারবার গাড়ি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে শঙ্করের অনুগামীরা।

শেষ অবধি পাওয়া খবরে, কলকাতার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শঙ্কর আঢ্যকে। বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও তৃণমূল নেতার একাধিক ঠিকানায় এদিন তল্লাশি চালায়  ইডি।কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রে খবর, শঙ্কর আঢ্যর শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি। 

বনগাঁয় শঙ্কর আঢ্যর বাড়ি। বনগাঁরই শিমূলতলায় শঙ্কর আঢ্যর শ্বশুরবাড়িতে এদিন তল্লাশি চালানো হয়।গাইঘাটায় শঙ্কর আঢ্যর ভাই মলয় আঢ্যর আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতেও হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।শঙ্কর আঢ্যর কর্মচারী বিশ্বজিৎ ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়।বনগাঁ শঙ্কর আঢ্যর কর্মচারী অঞ্জন মালাকারের বাড়িতে হানা দেয় ইডি।

পাশাপাশি বাঘাযতীনে তাঁর চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্টের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। মেট্রোপলিটনে শঙ্কর আঢ্যর সহযোগী বাবলু দাসের ফ্ল্যাটেও তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি।

প্রসঙ্গত, ঠিক কতদূর ছড়িয়ে রয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ‘দুর্নীতি’র জাল? মন্ত্রী নিজেই কি নেমেছিলেন ধান ব্যবসায়? খোদ মন্ত্রী চেম্বারেই ‘খাজানা’র খোঁজ পেল ইডি? ইডি সূত্রে সামনে এল অবাক করে দেওয়ার মতো তথ্য। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, খাদ্য দফতর থেকে সরে যাওয়ার পরে, বন দফতরে বসেই খাদ্য দফতরে দুর্নীতি-চক্র চালিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বাকিবুর বা অন্য কারও মাধ্যমে নয়, নিজেই নাকি ধান ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি। বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সল্টলেকের দফতরে হানা দেওয়ার পর, এমনটাই মনে করছে ইডি।

রেশন দুর্নীতি মামলায় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick) এখন জেলে, ইতিমধ্যেই তাঁর দফতরে হানা দিয়েছে ইডি (ED)। রেশন বণ্টন দুর্নীতি (Ration Scam) মামলায় এই প্রথম কোনও মন্ত্রীর দফতরে যায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি (Central Agency)।  কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের (Central Force) নিয়ে সল্টলেকের অরণ্য ভবনে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অফিসে গিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা (ED Officer)। খাদ্য দফতরের পর বন দফতরের মন্ত্রী হয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বন দফতরের অফিসে (Forest Department Office) খাদ্য দফতরের কোনও নথি পাওয়া যায় কি না, তার খোঁজেই গতবছরের শেষে হানা দিয়েছিল ইডি (ED)। 

শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ বনগাঁর শিমুলতলায় শঙ্করের শ্বশুরবাড়িতে হানা দেয় ইডি। প্রায় এক ঘণ্টা সেখানে তল্লাশি অভিযান চলে। পরে তাঁর বাড়িতেও যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সাত জন আধিকারিক। এর পর ফের তাঁর শ্বশুরবাড়িতে যায় ইডির একটি দল। সেখানে রাত সাড়ে ন’টা পর্যন্ত তল্লাশি চালান তারা। ইডি সূত্রে দাবি, শঙ্করের শ্বশুরবাড়ি থেকে প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এর পরেই ফের শঙ্করের বাড়িতে আসনে ইডির গোয়েন্দারা সেখান থেকেই রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here