সৃজিতা শীল, কলকাতা: ছোটবেলায় বাবা-মা এই দুটি নাম শিশুরা প্রথম বলতে শেখে। সন্তানের মুখ থেকে প্রথম মা অথবা বাবার ডাকটা শুনতে অধীর আগ্রহে থাকে বাবা মায়েরা। তারপর আস্তে আস্তে সন্তানদের মানুষ করা, বড় করে তোলা অভিবাবকদের জীবনে একটা বড় অধ্যায়। কখনও সন্তানদের পড়াশুনার জন্য অথবা চাকরি সূত্রে বিদেশে বা কখনো রাজ্যের বাইরে যেতে হয় কিন্তু সব সময় ছেলে-মেয়ের জন্য বাবা-মায়ের পিছুটান কখনোই কমেনা। তবে একটা সময়ের পর বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে বাবা মায়ের প্রতি দূরত্ব। যে বাবা-মা দীর্ঘ পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে সন্তানকে মানুষ করল আজ সে-ই তাদেরকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।

Rakhi Utsav at Milantirtha Old Age Home, organized by Milky Way Preschool

সমাজে এই ঘটনা অপরিচিত নয়। বহু ক্ষেত্রে বাবা-মায়েরা নিপীড়িত হচ্ছে তাদের সন্তানদের হাতে। এমনকি কোথাও বাবা-মায়ের থেকে দূরে থাকতে রাতে বা কোনো সময় বয়স্ক বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের অজানা জায়গায় ফেলে রেখে আসছে তার সন্তানেরাই। এইসবের থেকে দূরে থাকতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে বৃদ্ধাশ্রম। আর এই একাকী জীবনে কিছুটা আনন্দ দিতে তাদের কাছে পৌঁছাল মিল্কিওয়ে প্রিস্কুলের ক্ষুদে পড়ুয়াদের দল৷

একাকীত্ব আর আবসাদ দূর করতে বৃদ্ধাশ্রম -এর বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নিয়ে পিয়ারলেস এর সৌজন্যে মিলনতীর্থ বৃদ্ধাশ্রমে রাখি উৎসব পালন করল মিল্কীওয়ে প্রিস্কুল ৷

সিঁথির কুটি গঙ্গার ঘাটের কাছে মিলন তীর্থ বৃদ্ধাশ্রম। এই বৃদ্ধাশ্রমে প্রায় ৫০ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বসবাস করে। নিজেদের পুত্র সন্তান থাকা সত্ত্বেও শেষ জীবনটা একাকীত্বে এই বৃদ্ধাশ্রমে কাটান তারা। কারও ছেলে – মেয়ে নেই আবার কারও ছেলে-মেয়ে, আত্মিয় স্বজন থেকেও নেই। খোঁজ রাখে না কেউই। তাদের এই একাকিত্ব দূর করতে এদিন এই রাখি উৎসবের দিনে বৃদ্ধাশ্রমে একে অপরকে রাখি পরিয়ে রাখি উৎসব পালন করলেন মিল্কি স্কুলের কর্তৃপক্ষ৷ দেখুন ভিডিও

রাখি উৎসবটির দিনে যখন গ্রাম থেকে শহর সকলে মেতে উঠেছিল হাসির ঝরনাতে , সেই সময় মিল্কিওয়ের খুদে পড়ুয়ারা এই বৃদ্ধাশ্রমে থাকা দাদু ও দিদের হাতে , তাদের তৈরী রাখি পরিয়ে দিয়েছেন। ক্ষুদে পড়ুয়াদেরকে কাছে পেয়ে ওই সমস্ত দাদু দিদারা তাদের শৈশবে ফিরে গিয়েছিলেন বলে জানান তাঁরা৷

স্কুল কতৃপক্ষ জানিয়েছেন, তারা এই ধরনের অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শিশুদের মধ্যে স্বাধিন চিন্তা ভাবনার সঞ্চার করতেচান, যাতে একটা সুস্থ সমাজ গড়ে ওঠে।
স্কুলের তরফ থেকে বিভিন্ন রকমের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য দেওয়া হয়েছে, যেমন Pressure machine, Oxymeter, কাপ প্লেট, ফল , পেন ডায়রি, দেওয়া হয় বৃদ্ধাশ্রমে থাকা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদেরকে৷ স্কুল কর্তৃপক্ষের কথায়
এই উৎসবটির প্রধান লক্ষ হলো, সকল শিশুর অন্তর, প্রস্ফুটন করা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here